পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যে সাংস্কৃতিক কূটনীতির সূচনা হয়েছে তাকে আরো এগিয়ে নিতে চায় বাংলাদেশ। আর তাই বাংলাদেশ সরকার এবার শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ উৎসবের আয়োজন করতে চলেছে। এ ব্যাপারে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের আলোচনার পরই চূড়ান্ত করা হবে সবকিছু। তবে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে শারদোৎসবের ছুটির আগে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে এই উৎসব করা হবে। এ ব্যাপারে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বিশ্বভারতীর উপাচার্যের সঙ্গে এক দফা আলোচনাও সেরে নিয়েছেন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষও এই ব্যাপারে সহবত প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি বিশ্বভারতীর হাতে বাংলাদেশ ভবনের দায়িত্ব তুলে দেয়ার অনুষ্ঠানেই এই প্রস্তাব ওঠে বলে জানা গেছে। সংস্কৃতি মন্ত্রী নূর সাংবাদিকদের বলেছেন, একটি ভবন করলেই রবীন্দ্রচর্চা বা রবীন্দ্রনাথের ঋণ শোধ করা হয় না। এজন্য চাই নিরন্তর রবীন্দ্র চর্চা আর সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান।
সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ ভবনে সরকারের পরবর্তী উদ্যোগ বাংলাদেশ উৎসব। রবীন্দ্রনাথকে অবলম্বন করেই সাংস্কৃতিক কূটনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এই প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞজনেরা।
তিনি আরো বলেন, রবীন্দ্রনাথ আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠেছিলেন আমাদের ’বাতিঘর’। তাই আমাদের দেশের শিলাইদহ, পতিসর ও শাহজাদপুরের সঙ্গে এপারের শান্তিনিকেতনের যোগসূত্র আরো নিবিড় করার লক্ষ্যে এগোচ্ছি আমরা। শান্তিনিকেতন বাংলাদেশ উৎসব করার প্রস্তাব নিয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজ কলি সেন বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার এখানে সেদেশের শিল্পীদের নিয়ে উৎসব করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরা তাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছি।
জানা গেছে, বিশ্বভারতীও যাতে তাদের শিল্পীদের নিয়ে বাংলাদেশে একই ধরণের উৎসব করতে পারেন তারও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ উৎসব হবে তিন দিনের। সেই উৎসবে বাংলাদেশের রবীন্দ্র চর্চাকে যেমন তুলে ধরা হবে তেমনি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকেও মেলে ধরা হবে। পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা, কবিতা পাঠ এবং আলোচনাও হবে।