× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রোজার সময় ঋতুস্রাব নিয়ে নারীদের লুকোচুরি

শরীর ও মন

অনলাইন ডেস্ক
৩ জুন ২০১৮, রবিবার

রমজানের সময় নারীদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের সময় কী করা উচিত সেটি নিয়ে মুসলিম মেয়েরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বেশ আলোচনা করছেন। অনেকে বলছেন, রমজানে তাদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের সময় কোন কিছু খাওয়ার সময় পরিবারের পুরুষ সদস্যরা তাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। অথবা ঋতুস্রাব নিয়ে তাদের মিথ্যে কথা বলেতে হয়।
সোফিয়া জামিল বলেন, "অনেকে ঋতুস্রাবের বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখতে চায় না। মুসলিমদের মধ্যে বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখা হয়।"
রমজানের সময় মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অভুক্ত থাকে।
এ সময় তারা খাবার খায়না এবং পানি পান করে না। কিন্তু যেসব নারীর পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব হয় তারা রোজা রাখতে পারেন না। অনেক নারী মনে করেন, ঋতুস্রাবের বিষয়টি পরিবারের অন্য পুরুষ সদস্যদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখা ভালো।
"আমার মা আমাকে বলতেন, যখন তোমার পিরিয়ড শুরু হবে তখন বিষয়টি পুরুষদের বলবে না। এটা শুধু মেয়েরা জানবে, "বলছিলেন ২১ বছর বয়সী ব্লগার সোফিয়া জামিল।
"সেজন্য রমজানে পানি খাওয়ার সময় আমার বাবাকে আসতে দেখলে দ্রুত গ্লাসটি নামিয়ে ফেলতাম এবং ওনার সামনে থেকে চলে যেতাম। আমার মা আমার কক্ষে খাবার দিয়ে যেত এবং চুপিচুপি খেয়ে ফেলার পরামর্শ দিতো।"

সোফিয়া জামিল নিউইয়র্কে বসবাস করেন।
তিনি পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত। একবার রমজানে পিরিয়ডের সময় খাবার খেতে গিয়ে তার ভাইয়ের সামনে পড়েছিলেন। সে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে সোফিয়া বলেন, "আমার ভাই যখন আমাকে খেতে দেখলো, তখন আমার মুখে কামড় পড়লো। সে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। মনে হচ্ছিল আমি যে খাবার খাচ্ছি সেটি হাতে-নাতে ধরে আমাকে বিব্রত করার চেষ্টা করেছিল।"
"আমি যদি বলতে পারতাম যে এটা খুব স্বাভাবিক এবং আমার ধর্মে বলা আছে আমি যদি যথেষ্ট পবিত্র না হই তাহলে আমি রোজা পালন করতে পারবো না।"

রমজানের সময় একজন মুসলিম সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেমন খাবার কিংবা পানি খেতে পারেন না, তেমনি রমজানের সময় যে কোন ঘনিষ্ঠ সম্পর্কেও যেতে পারেন না। নারীদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের সময় তারা যেমন রোজা পালন করতে পারেন না, তেমনি কোরআন শরিফ পড়তে কিংবা মসজিদে যেতে পারেন না। গর্ভবতী হলেও রোজা পালন না করা গ্রহণযোগ্য। এছাড়া শারীরিক কিংবা মানসিক অসুস্থতা, ভ্রমণের সময় রোজা পালন না করার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য। তাছাড়া রোজা রাখার কারণে যদি তীব্র ক্ষুধা কিংবা তৃষ্ণার কারণে জীবন হুমকির মুখে পড়ে তাহলে রোজা ভঙ্গ করা যেতে পারে।

মুসলিম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাবরিন ইমতায়ির বলেন, ঋতুস্রাব নিয়ে যাতে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয় সেজন্য তিনি মানুষজনকে উৎসাহিত করছেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাবরিন ইমতায়ির বলেন, "আমার পরিবার এক্ষেত্রে অনেক উদার। কিন্তু কিছু মেয়ে আছে যারা রমজানের সময় পরিবারের পুরুষ সদস্যদের সামনে পিরিয়ডের সময় কিছু খেতে চায় না। পিরিয়ডের সময় মেয়েরা নিজেদের নোংরা মনে করে এবং লজ্জা পায়।"
১৮ বছর বয়সী সাবরিনের অভিজ্ঞতা ভিন্ন ধরণের। তিনি রমজানে পরিয়ডের সময় পরিবারের সব সদস্যদের সামনে খাবার খেতে পারতেন।
"আমি খাবার কিনতে বাইরে যাচ্ছিলাম। তখন আমার ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করলো কেন খাবার আনতে যাচ্ছি? আমি তাকে বললাম, আমার পিরিয়ড চলছে। সে বিষয়টি খুব সহজভাবে নিয়েছিল।"
সাবরিন ইমতায়ির বলেন, ঋতুস্রাবের সময় কী করতে হয় সেটি তার মা তাকে শিখিয়েছিল।
"কিছুদিন আগ পর্যন্ত আমি বিষয়টি নিয়ে মানুষের কথা বলিনি। কারণ এটিকে নিষিদ্ধ বিষয় বলে মনে করা হয়। কিন্তু মেয়েদের সবার ঋতুস্রাব হয়। এটা স্বাভাবিক বিষয় এবং আমাদের উচিত এটিকে হিসেবে গ্রহণ করা," বলছিলেন মিস সাবরিন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক মেয়ে বিষয়টি নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।
এক নারী লিখেছেন, "রমজানে আমার পিরিয়ডের সময় আমি কক্ষের দরজা বন্ধ করে খাবার খেয়েছি। আমার মা চাইতেন আমার বাবা এবং ভাইরা যাতে বিষয়টি না জানে। কিন্তু বিষয়টি আমার কাছে খুব অদ্ভুত লাগতো। আমি তো এমন কোন কাজ করছি না যেটি আমাকে লুকিয়ে করতে হবে।"

সূত্র: বিবিসি
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর