× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এফবিআই’র এক্স বস কোমির নতুন বই (পর্ব-৮) /দেখলাম ট্রাম্পের ডিনারে আমিই শুধু আমন্ত্রিত

বই থেকে নেয়া

মানবজমিন ডেস্ক
৩ জুন ২০১৮, রবিবার

এফবিআইয়ের চাকরিচ্যুত পরিচালক উইলিয়াম কোমি তার নতুন বইয়ের সূচনাতেই লিখেছেন, হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার ডিনারটি তার ওপরে জোরালো প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। তার কথায়, এই বইয়ের নামকরণ কি হবে, সেটা নিয়ে আমি দীর্ঘসময় চিন্তাভাবনা করেছি। এক অর্থে আমি শেষ পর্যন্ত বইটির যে নামকরণ (অ্যা হায়ার লয়্যালটি: ট্রুথ, লাইজ এ- লিডারশিপ) করলাম, সেটি সেই নৈশভোজ থেকে উৎসারিত। কারণ সেদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে আনুগত্যের দাবি করে বসলেন। আর সেটা ছিল এফবিআইয়ের পরিচালক হিসেবে আমেরিকার জনগণের স্বার্থের ওপর তার নিজের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার দাবি।

সেই নৈশভোজে কীভাবে কি কথা হয়েছিল, তা শুনুন কোমির জবানিতে:

‘তাদের (দুই নেভি স্টুয়ার্ড) সঙ্গে আলোচনায় সঙ্গতকারণেই সাবমেরিনের পুরোভাগের অবয়ব নিয়ে আলোচনা হলো। হেডরুমের বর্ণনা চমকপ্রদ ছিল। একজন বললেন, সাবমেরিনের হেডরুমে বাঙ্কস ছয় ফুট চার ইঞ্চি লম্বা, যা কিনা তার নিজের উচ্চতার প্রায় সমান। খোশগল্পে স্থির হলো যে, সাবমেরিনে আমার কোনো ঠাঁই হবে না।
গ্রিন রুমের প্রবেশমুখেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমরা আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ নজরে এলো একটি টেবিল শুধু দুজনের বসার উপযোগী করেই সাজানো হয়েছে। একটি আসনে ক্যালিগ্রাফিতে লেখা: ‘পরিচালক কোমি’। অন্যটি অনুমেয় যে, প্রেসিডেন্টের জন্যই হবে। আমি খুবই অস্বস্তিতে ভুগছিলাম। অবশ্য সেটা এই কারণে নয় যে, রুশ পতিতাদের নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তৃতীয়বার আলোচনার ধারণাটি আমার পছন্দ হয়নি।

প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট সময়ে অর্থাৎ সাড়ে ছয়টাতেই উপস্থিত হলেন। এবং শিগগিরই তিনি প্রশংসাসূচক মন্তব্য করলেন। আমাকে দরোজায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বললেন, আমি এটা পছন্দ করেছি। যারা যথাসময়ে হাজির হন, আমি তাদের পছন্দ করি। আমি মনে করি একজন নেতার যথাসময়ে উপস্থিত থাকা উচিত।

তিনি তার স্বভাবসুলভ শাদা শার্টের সঙ্গে গাঢ় নীল স্যুট পরেছিলেন। এবং অতি দীর্ঘ লাল রঙের টাই। তিনি স্টুয়ার্ডদের সঙ্গে আদৌ কোনো কথা বলেননি। তিনি টেবিলেই আমাকে সৌজন্যমূলক উক্তি করলেন, আর টেবিলটি তাদের দুজন থেকে মাত্র চার ফুট দূরে ছিল।

গ্রিন রুমের দেয়াল সিল্ক কাপড়ে আবৃত ছিল। আমি সেখানকার লেখা পড়ে জানলাম, এই কক্ষটি জন অ্যাডামস তার বেডরুম হিসেবে এবং থমাস জেফারসন এটিকে ডাইনিং রুম হিসেবে ব্যবহার করতেন। কিন্তু তাদের পর থেকে প্রেসিডেন্টগণ এটিকে সিটিং রুম হিসেবেই ব্যবহার করে আসছেন। কিন্তু সেই সন্ধ্যায় রুমটি থেকে সব আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। পরিণত করা হয়েছিল, দুজনের জন্য একটি নৈশভোজ কক্ষে।
আমি আমার প্লেটে একটি বৃহৎ ক্রিম রঙের কার্ড পেলাম, যা নির্দেশ করছিল, আজকের ডিনারে পুরো চার কোর্সের খাবারই থাকছে। সালাদ, চিংড়ি, চিকেন, সেই সঙ্গে পাস্তা। আর ভ্যানিলা আইসক্রিম। প্রেসিডেন্ট তার হাতে ধরা খাবারের মেন্যু কার্ডের প্রতি তার অনুরাগ প্রকাশ করলেন। হোয়াইট হাউস স্টাফদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বললেন, ‘তারা একদা হাতে লিখে এই মেন্যু কার্ড তৈরি করেছিলেন।’ আমি বললাম, জ্বি, এটা ক্যালিওগ্রাফারের কাজ।

তিনি উৎসুক নেত্রে আমার দিকে তাকালেন এবং পুনরুক্তি করলেন, ‘তারা এটা হাতে লিখেছিলেন।’ নেভি স্টুয়ার্ডরা কখন যেন চিংড়ি পরিবেশন করে গেছেন। ট্রাম্প চাঁছাছোলা প্রশ্ন ছুড়লেন, ‘তো, আপনি তাহলে কি করতে চান?’ এটা একটা তেতো প্রশ্ন। প্রথমে তিনি যে কি জানতে চেয়েছেন, তা আমি বুঝতেই পারিনি। কিন্তু আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই তিনি যখন স্বগতোক্তি শুরু করলেন, তখন পরিষ্কার হলো যে, তিনি আসলে জানতে চেয়েছেন যে, আমি আমার চাকরিটা বজায় রাখতে আগ্রহী কিনা।

তিনি আমাকে বলেছিলেন, বহু লোক এফবিআইয়ের পরিচালক হতে আগ্রহী। কিন্তু তিনি আমার সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন। তিনি বললেন, তিনি নিজে আমার সম্পর্কে অনেক প্রশংসাসূচক বাক্য শুনেছেন। এবং এফবিআইর স্টাফরাও আমার সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন বলেই তিনি অবহিত রয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমি যদি ‘চলেই যেতে চাই’ তাহলে তিনি তা উপলব্ধিতে নেবেন, তবে সেটা ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য খারাপ হবে। কারণ তখন প্রতীয়মান হবে যে, আমি নিশ্চয় কোনো একটা ভুল কিছু করেছিলাম। তিনি তার মন্তব্য শেষ করলেন একথা বলে যে, তিনি চাইলে এফবিআইয়ে একটা পরিবর্তন আনতে পারতেন। কিন্তু আমি এ বিষয়ে কি ভাবি সেটা তিনি শুনতে আগ্রহী।’

(চলবে)
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর