বগুড়ায় বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১৬২ কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ নিয়ে ফেরত দেয়নি জহুরুল হক মোমমিন এবং তার স্ত্রী শিরিন আখতার ঝুনু। ইতিমধ্যেই মোমিন ব্যাংকের মামলায় সাড়ে ৪ বছর জেলে খেটেছে। অপরদিকে ২০১২ সাল থেকে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা নিয়ে প্রকাশ্যে ছিলেন মোমিনের স্ত্রী শিরিন। অবশেষে সোমবার মধ্যরাতে বগুড়ার জলেশ্বরীতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানার পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শিরিন আখতার ঝুনু তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান শিরিন ট্রেডিং এ্যান্ড কোম্পানির নামে ইসলামী ব্যাংক বগুড়া শাখা থেকে বিভিন্ন সময় লোন নিয়ে পরিশোধ করেননি। ব্যাংক বিভিন্নভাবে তার সাথে কথা বলেও টাকা আদায় করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ২০০৯ সালের ২রা আগস্ট বগুড়া জেলা অর্থঋণ আদালতে একটি মামলা করেন ব্যাংক। ততৎকালী ব্যাংকের বগুড়া শাখার সিনিয়র অফিসার রেজাউল করিম মামলাটির বাদী হন।
ওই মালায় আদালাত ২০১২ সালের ১৬ই জুলাই ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৬ টাকা পরিশোধের আদেশ দেয় এবং তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেয়।
অজ্ঞাত কারণে সেই ওয়ারেন্ট জারি হওয়ার পরেও শিরিনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। শিরিন ২০১২ সাল থেকে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরওয়ানা নিয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পরনায় মামলার বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা চাইলে সোমবার রাতে শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকা থেকে ঈদের কেনাকাটা করার সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
অপরদিকে শিরিনের স্বামী জহুরুল হক মোমিন ইসলামী ব্যাংক বগুড়া শাখা, প্রাইম ব্যাংক, এসআইবিএল ব্যাংকসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেননি। এর মধ্যে কিছু ব্যাংক তাদের মর্গেজের সম্পত্তি দখল করেছে। ইসলামী ব্যাংক বগুড়া শাখা মোমিনের বিরুদ্ধেও মামলা করেন। সেই মামলায় মোমিন ইতোমধ্যেই সাড়ে ৪ বছর জেলে খেটেছে। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেনও।
বগুড়া সদর ওসি বদিউজ্জান জানান, শিরিন ট্রেডিং অ্যান্ড কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী শিরিন আখতার ঝুনুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা ছিলো। পুলিশ তাকে অনেক দিন থেকে খুঁজছিল। সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিক্তিতে পুলিশ জানতে পারে শিরিন জলেশ্বরীতলায় ঈদের কেনাকাটা করছিলো। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।