× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভেজাল ডিমে হুমকির মুখে বগুড়ার হ্যাচারি মালিকরা

বাংলারজমিন

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
২৪ জুন ২০১৮, রবিবার

ভেজাল ডিমের কারণে ব্যবসায়ীক ভাবে হুমকির মুখে পড়ছে বগুড়ার হ্যাচারি মালিকরা। তারা প্রতিনিয়তই ভেজাল ডিমের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। ফলে ইতিমধ্যেই অনেক হ্যাচারি মালিক দেনার দায়ে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
বগুড়া সদরের সাবগ্রামে অবস্থিত মেসার্স ভাই ভাই পোল্ট্রি ফার্ম এন্ড হ্যাচারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোখলেছার রহমান মুক্তার জানান, গত ১ মাসে তিনি জয়পুরহাটের মেসার্স নিশাত পোল্ট্রি এন্ড ডেইরি ফার্ম এর মালিক আবদুল কাদের মোল্লার কাছ থেকে প্রতিটি ডিম ১১ থেকে ১৩ টাকা মূল্যে ৫৪ হাজার ডিম বাচ্চা ফোটানোর উদ্দেশ্যে ক্রয় করেন। এর মধ্যে ২৪ হাজার ডিম থেকে কোনো প্রকার বাচ্চা ফোটানো যায়নি। বাকি ৩০ হাজার ডিমের মধ্যে শতকরা ৬৫ থেকে ৬৮ ভাগ ডিমের বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছে। যেখানে ৮৫ থেকে ৮৮ ভাগ ডিম থেকে বাচ্চা পাওয়া যায়। এতে তিনি কয়েক লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এ সংবাদ পেয়ে বগুড়া সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সেলিম হোসেন শেখ ও জেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. সাইদুল ইসলাম ভাই ভাই পোল্ট্রি ফার্ম এন্ড হ্যাচারি লিমিটেডে বাচ্চা না ফোটা ডিম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পর কর্মকর্তারা জানালেন ওই ফার্মে যেসব ডিম রয়েছে তার ৭০ ভাগ ডিম অনিষিক্ত যেগুলো থেকে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব নয়। কারণ বাচ্চা ফোটানোর জন্য নিষিক্ত ডিম প্রায় একই সাইজের হয়ে থাকে। এ ফার্মে ডিমগুলো বিভিন্ন সাইজের।
ডিম সরবরাহকারী জয়পুরহাটের মেসার্স নিশাত পোল্ট্রি এন্ড ডেইরি ফার্ম এর মালিক আবদুল কাদের মোল্লা বলেন, ফার্মের মালিক ও তার প্রতিনিধি এসে ডিম বাছাই করে নিয়ে গেছে। তাছাড়া ওই ফার্মের মালিক শুধু আমার ফার্ম থেকেই ডিম ক্রয় করে না। অন্য ফার্ম থেকেও ডিম ক্রয় করে থাকে। এতে কীভাবে বোঝা যাবে কোন ফার্মের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটেনি।
এদিকে জয়পুরহাটের ভেজাল ডিম ব্যবসায়ীদের প্রতারণার কারণে বগুড়ার পোল্ট্রি শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে এসব ভেজাল ডিম
থেকে বাচ্চা ফোটাতে না পেরে লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলার বেশ কিছু হ্যাচারি বন্ধ
হয়ে গেছে।
বগুড়া জেলা পোল্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে জেলায় ৮৬টি পোল্ট্রি হ্যাচারি রয়েছে যারা ইনকিউবিটরের মাধ্যমে ডিম থেকে মুরগির বাচ্চা ফোটায়ে বিক্রি করেন। জেলার এসব হ্যাচারিতে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ১২ লাখ ডিমের চাহিদা রয়েছে। আর বগুড়া জেলায় বাচ্চা ফোটানোর ডিম উৎপাদন হয় প্রায় ৬ লাখ। বাঁকী ডিমের চাহিদা পূরণ করা হয় অন্য জেলা থেকে।
বগুড়া শহরতলীর বনানী এলাকার মেসার্স মডার্ণ পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারির মালিক মো. আতাউর রহমান জানালেন, তিনি ২০১৬ সালে ডিম বিক্রেতা জয়পুরহাটের জামালগঞ্জের নুহু’র কাছ থেকে ৬৪ হাজার ডিম ক্রয় করে মাত্র ১৫ হাজার ডিমের বাচ্চা ফোটাতে পেরেছিলেন। এ বিশাল অঙ্কের লোকসানের পর তিনি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। পরে তিনি ফার্ম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। সাবগ্রামের শাওন সততা পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারি মালিক মো. আজিজ জানালেন জামালগঞ্জের সেলিমের কাছ থেকে ১৪ হাজার ডিম ক্রয় করে শতকরা ৫০ ভাগ ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে পেরেছিলেন। এরপর থেকে তার ব্যবসায় ধস নামে। আল হাদী পোল্ট্রি ফার্ম এন্ড হ্যাচারির মালিক মামুনুর রশিদ জানালেন ২০১৭ সালে তিনি নুহু ও বেলালের কাছ থেকে কয়েক লাখ ডিম ক্রয় করার পর বেশিরভাগ ডিমের বাচ্চা না ফোটায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হবার হর ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন। বগুড়া জেলা পোল্ট্রি হ্যাচারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় অপুষ্টি ও রোগাক্রান্ত বাচ্চা এনে সরবরাহ করায় বগুড়ার হ্যাচারি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
বগুড়া জেলা পোল্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল আমিন লিডার বলেন জয়পুরহাটের কতিপয় ব্যবসায়ী না ফোটা ডিম প্রতারণামূলক ভাবে বিক্রি করায় বগুড়ার হ্যাচারি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের প্রতি আহ্বান জানান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর