× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খুমেক হাসপাতাল /জখমি রোগীর চিকিৎসা দেন ক্লিনার, পদে পদে দিতে হয় টাকা

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
২৪ জুন ২০১৮, রবিবার

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ক্লিনার (পরিচ্ছন্নতা কর্মী), গেটম্যান, ফ্রি-সার্ভিস কর্মীদের দৌরাত্ম্যে প্রতিনিয়ত নাজেহাল হচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। রাতের বেলায় তাদের বিরুদ্ধে চিকিৎসক সেজে জখমি রোগীর ক্ষতস্থানে সেলাই ও সর্ট স্লিপে বাইরে থেকে কেনা ওষুধ আত্মসাতের ভয়ঙ্কর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২১ জুন এই অভিযোগে হাসপাতালের ক্লিনার আজাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়ায় বিষয়টি আলোচিত হয়।
জানা যায়, গত ১৯শে জুন রাতে ক্লিনার আজাহারুল ইসলাম হাসপাতালের একজন জখমি রোগীর মাথার স্পর্শকাতর ক্ষতস্থানে সেলাই দেয়ার জন্য স্লিপে তার স্বজনদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে বলেন। যদিও হাসপাতালে আগে থেকেই ওই ধরনের ওষুধের সরবরাহ রয়েছে। রোগীর স্বজনরা ওই ওষুধ কিনে আনার পর ক্লিনার তা ক্ষতস্থানে ব্যবহার না করে আত্মসাৎ করে। এ ঘটনা জানাজানি হলে রোগীর স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বিষয়টি অভিযোগ আকারে জানালে ওই ক্লিনারকে প্রত্যাহারে ব্যবস্থা নেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সিনিয়র নার্সরা অনেক ক্ষেত্রেই ফ্রি সার্ভিস ও চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
চিকিৎসক ও নার্সদের দেয়া সুযোগেই ফ্রি সার্ভিস কর্মীরা এ ধরনের প্রতারণা করে থাকে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা নগরীর টুটপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল হাসান জানান, এখানে আসার পর থেকেই পদে পদে টাকা দিতে হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে ট্রলিতে করে রোগী ওপরে নেয়া, ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করানো এমনকি রোগী মারা গেলেও ট্রলিতে করে নিচে নামাতে ফ্রি সার্ভিস কর্মীদের বকশিশের নামে টাকা দিতে হয়। হাসপাতালে যেসব কাজ চিকিৎসক ও নার্সদের করার কথা সে সব কাজ এই ফ্রি সার্ভিসের লোক দিয়ে করানো হয়। ফলে তারা সহজেই রোগী ও স্বজনদের জিম্মি করে ফেলে।
অভিযোগ রয়েছে- অসুস্থ বয়স্ক রোগীদের ক্যাথেটার পরানো, খাবার খাওয়ানোর এনজিটিউব পরানোর জন্য ফ্রি সার্ভিস কর্মীদের নির্ধারিত দুইশ’ টাকা করে দিতে হয়। যদিও এসব কাজ হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়, চিকিৎসক ও নার্সদের করার কথা।
খুমেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, জনবল সংকট থাকাতে ফ্রি সার্ভিস হিসেবে কিছু মানুষ হাসপাতালে কর্মরত রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই নানা ধরনের অভিযোগ শোনা যায়। তবে কোনো অন্যায়কারীকে ছাড় দেয়া হয় না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিকিৎসক সেজে জখমি রোগীর ক্ষতস্থানে সেলাই দেয়া ও ওষুধ আত্মসাৎকারী ক্লিনার আজাহারুল ইসলামকে স্বাস্থ্যখাতের কেওআইকেএ প্রকল্পের আওতায় এই হাসপাতালে নিয়োগ দেয়া হয়। একই প্রকল্পের আওতায় আরো কয়েকজনকে গেটম্যান ও ক্লিনার পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- এদের কেউই হাসপাতালে তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন না করে ওষুধ চুরিসহ নানা প্রতারণায় জড়িয়ে পড়েছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে স্লিপে বাইরে থেকে রোগীর স্বজনদের ওষুধ কিনতে বাধ্য করা এবং ওই ওষুধ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, তার নিয়োগ প্রকল্পের আওতায় হওয়ায় অবিলম্বে তাকে প্রত্যাহারের জন্য সিভিল সার্জনকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর