টঙ্গীতে মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়েছে। চিহ্নিত মাদক কারবারিরা নির্বাচনী মোড়কে এলাকায় আসতে শুরু করেছে। এদের বিভিন্ন প্রার্থীর সঙ্গে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে।
টঙ্গীর হাজী মাজার বস্তির প্রধান মাদক কারবারি বাচ্চু র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর এলাকার মাদক কারবারিরা গা ঢাকা দেয়। বর্তমানে তারা বিভিন্ন প্রার্থী ও গডফাদারদের আশ্বাসে প্রকাশ্যে আসছে। বাচ্চুর সেকেন্ড ইন কমান্ড দাঁত ভাঙ্গা দুলাল ইতিমধ্যে হাজী মাজার বস্তির মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। বিএনপির ক্যাডার খ্যাত উত্তরা পশ্চিম থানা যুবদলের সভাপতি শতাধিক মামলার আসামি টঙ্গী বাজার এলাকায় ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড সরকারি দলের এক কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে প্রকাশ্যে নির্বাচনী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ওই কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী মাজার বস্তির মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দিয়ে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন।
হাজী মাজার বস্তির চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল ওরফে কালা রফিক ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি চিহ্নিত সন্ত্রাসী কালা মাসুদকেও এক কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে দেখা গেছে।
এছাড়া টঙ্গীর মরকুন টেকপাড়ায় পুলিশের সোর্স রাজিব, নাসির ওরফে বিক্লাস নাসির ও সাদেককে (পিতা সুলতান) একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে দেখা গেছে।
টঙ্গীর বড় দেওড়ায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বর্তমানে সরকারি দলের প্রভাবশালী কাউন্সিলর প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে দেখা গেছে। এছাড়া শাহীন ওরফে কাউয়া শহীনকে সরকারি দলের অপর একজন কাউন্সিলর প্রার্থীর সাথে এবং টঙ্গীর পুরনো মাদক ব্যবসায়ী রাজিয়া ও তার সহযোগীদের তার বাড়ির পাশে যুবলীগ নেতা কাউন্সিলর প্রার্থীকে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান মাদক বিরোধী অভিযানে শিল্প শহর টঙ্গীর মাদক কারবারিরা পালিয়ে যায়। পুরুষের পাশাপাশি নারী মাদক কারবারিরাও গা ঢাকা দেয়। টঙ্গীতে পুরুষের তুলনায় নারী মাদক কারবারিরাও সংখ্যায় কম নয়। টঙ্গীর প্রধান মাদক বাজার খ্যাত হাজী মাজার বস্তি, কেরানির টেক বস্তি, ব্যাংক মাঠ বস্তি, এরশাদ নগর পুনর্বাসন এলাকা, মিলগেট নামা বাজার বস্তির পুরুষ ও নারী মাদক কারবারির সংখ্যা প্রায় সমানে সমান। বস্তি এলাকার বাইরেও রয়েছে বড় বড় মাদক কারবারি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে তারা এখন গা ঢাকা দিয়েছে। টঙ্গীর সবচেয়ে পুরনো ও বড় মাদক কারবারি দেওড়া পরান মণ্ডলের টেকের রাজিয়ায় আস্তানায় সর্বশেষ বিগত ২৫-১০-২০১৫ ইং তারিখ অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় মাদক দ্রব্য উদ্ধারসহ রাজিয়াকে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমান আদালত। পরে রাজিয়াকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। একই দিন রাজিয়ার ছেলে এমারত হোসেনের বাড়িতেও পৃথক অভিযান চালিয়ে ৪৪৯ বোতল ফেন্সিডিল এবং মাদক বিক্রির নগদ ৫,৮০০ টাকাসহ তাকেও হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব-১ সদস্যরা। র্যাবের এই অভিযানের পর থেকে রাজিয়ার মাদকের আস্তানা নিয়ে আর কোন আলোচনা শুনা যায়নি। উত্তরায় ‘উত্তরা নিউ কার সেন্টার’ নামে রাজিয়ার গাড়ির একটি শো-রুম রয়েছে বলেও জানা গেছে।