করিমগঞ্জে ডোবার পানিতে ডুবে জোনাকী (৯), চাঁদনী (৭) ও সাফায়েত উল্লাহ (৪) নামে তিন সহোদরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে সবার অগোচরে ডোবার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়ার পর রোববার ভোর ৬টার দিকে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। খবর পেয়ে স্বজনেরা লাশ উদ্ধার করেন। উপজেলার গুনধর ইউনিয়নের উত্তর আশতকা গ্রামের পরশ আলীর বাড়ি সংলগ্ন ডোবা থেকে এই তিন সহোদরের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরশ আলী নিহত তিন সহোদরের খালু। নিহত তিন শিশু একই উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের ভাটিয়া গাংপাড়ার পোল্ট্রি ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের সন্তান। তাদের মধ্যে জোনাকী দ্বিতীয় শ্রেণি এবং চাঁদনী প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। পারিবারিক সূত্র জানায়, হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী জ্যোৎস্না আক্তার শিশু সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে দুই দিন আগে তার বড় বোন আছমা আক্তারের উত্তর আশতকা গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান।
বড় খালার বাড়িতে বেড়ানোর সময় খেলা করতে গিয়ে শনিবার দুপুরের দিকে তিন ভাই-বোন জোনাকী, চাঁদনী ও সাফায়েত উল্লাহ সবার অগোচরে ডোবার পানিতে পড়ে গিয়ে তলিয়ে যায়। তাদের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিন শিশু পানিতে পড়ে থাকতে পারে, এ ধারণা থেকে স্বজনেরা দুপুর থেকেই আশপাশের পুকুর, বাড়ি সংলগ্ন বর্ষার পানি ও নদীতে জাল ফেলে তাদের খোঁজে তৎপরতা চালান। তাদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় মাইকিংও করানো হয়। কিন্তু এই তিন শিশুর কোনো খোঁজ মিলেনি। রোববার ভোর ৬টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে তাদের লাশ ভেসে ওঠলে স্বজনেরা উদ্ধার করেন। তিন ভাই-বোনের মর্মান্তিক এই মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে পরশ আলীর বাড়িতে শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। কান্না আর আহাজারিতে ভেঙ্গে পড়েন স্বজনেরা। বাবা হেলাল উদ্দিন, মা জ্যোৎস্না আক্তারসহ স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার পরিবেশ। খবর পেয়ে গুনধর ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল সাকির নূরু সিকদার এবং দেহুন্দা ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সঞ্জু ঘটনাস্থলে গিয়ে তিন শিশুর লাশ দাফনের জন্য ভাটিয়া গাংপাড়া গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। পরে ভাটিয়া গাংপাড়া গ্রামের বাড়িতে তাদের লাশ দাফন করা হয়।