× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভোটাধিকার প্রয়োগে গাজীপুরবাসীর প্রতি বিএনপি’র আহ্বান

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
২৫ জুন ২০১৮, সোমবার

সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগে গাজীপুরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গাজীপুরবাসীকে এই আহ্বান জানাতে চাই- আপনাদের যে অধিকার, সাংবিধানিক যে অধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সকাল থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল বিকালে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। সুষ্ঠু ভোট হলে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শতভাগ জয়লাভের আশাবাদ ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গাজীপুর সিটির ভোটাররা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চান। গাজীপুরের ভোটাররা ভোট দিতে চান। সেখানে ন্যূনতম সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠিত হলে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসানউদ্দিন সরকার জয়লাভ করবেন। তিনি বলেছেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
আর যদি ন্যূনতম অবাধ নির্বাচন হয়, যদি আগের রাতে ব্যালট পরিবর্তন করে না দেয়া হয়, তাহলে বিএনপির প্রার্থী জয়লাভ করতে পারবে। একই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি- তিন হাজারের বেশি ভোট রয়েছে এমন কেন্দ্রগুলোতে আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করা হবে। এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপর পরবর্তী তিনটি সিটি নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হতে পারে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছি- গাজীপুর সিটি নির্বাচন ইসির জন্য টেস্ট কেইস। আমরা এই নির্বাচনটি দেখে নিঃসন্দেহে বক্তব্য রাখবো। নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহবান রেখে মির্জা আলমগীর বলেন, ২৬ তারিখে গাজীপুরের নির্বাচন যেন সুষ্ঠু. অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, আমাদের সম্মানিত ভোটার ও নাগরিকরা যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তার সব ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করবেন। নির্বাচন কমিশন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে না পারেন তাহলে তাদের পদত্যাগ করা উচিত। গাজীপুর নির্বাচনের সঠিক সংবাদ পরিবেশনের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে মির্জা আলমগীর বলেন, দলীয় লোকজন দিয়ে এই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার একজন আপাদমস্তক দলীয় লোক হওয়ার কারণে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্লজ্জভাবে নিজেকে সরকারের আজ্ঞাবাহ প্রমাণ করেছেন। তিনি বলেন, এই নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে তারা সম্পূর্ণ অযোগ্য। তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা করাতে পারছে না তারা জাতীয় নির্বাচন কিভাবে পরিচালনা করবে? এভাবেই তারা প্রত্যেকটি নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত করেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকার নির্বাচনী পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, সেখানে এখন এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। বিএনপিসহ দলের প্রার্থী এসব অভিযোগ করে আসলেও ইসি তাতে কর্ণপাত করছে না। তারা তাদের নীল নকশা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। এর বড় প্রমাণ আওয়ামী লীগের প্রার্থী পুলিশের গাড়িতে করে প্রচারণা করলেও কোনো প্রতিকার হয়নি- এটা অবিশ্বাস্য। তাদের নীল নকশার নির্বাচনে আর কী অবশিষ্ট থাকলো এমন প্রশ্ন তুলেন বিএনপি মহাসচিব। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গাজীপুরে সবগুলো কেন্দ্রে আমরা এজেন্ট নির্ধারণ করেছি। একজন নয়, তিন-চারজন করে। এখন তারা থাকতে পারবে কি না এটা তো নির্ভর করবে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার ওপরে। সরকারি দল জবরদস্তি করে সবাইকে বের করে দেবে কি না তার ওপরে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) সবার কাছে পরিচিত ও পুরোপুরি আওয়ামী লীগার। তার অতীত কর্মকাণ্ড সবার জানা আছে। আমরা আগেও এসপি হারুনকে এখন থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছি। এখনো বলছি, তাকে না সরালে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে প্রেম নয় বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি জানি উনি (ওবায়দুল কাদের) ভালো কবিতা লিখতেন একসময়। তার বেশ কিছু কবিতা বেরিয়েছিল। আমরা জানি, যারা ভালো কবিতা তারাই লেখেন যারা প্রেম করেন। প্রেমবিহীন কবিতা হয় না। প্রেম না হলে কিন্তু কবিতা-গল্প-সংস্কৃতি আসে না। প্রেম না হলে তো রাজনীতিও করা যাবে না। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, দেশের প্রতি ভালোবাসা সেটাও করা যাবে না। সুতরাং প্রেম তো করতেই হবে। ওবায়দুল কাদের সাহেবকেও জনগণের সঙ্গে প্রেম করতে হবে। কারণ, এই দেশটাতো সকলের, কারো পৈতৃক সম্পত্তি নয়। অবশ্যই জনগণের যে আশা-আকাঙ্ক্ষার তাকে করবার জন্য তাদের সে কথাগুলোর উত্তর দিতে হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনকালীন সরকার ও দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসনের মুক্তি- কোন বিষয়টিকে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি? এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত আমরা গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে বেশি ভাবছি। এ প্রশ্নের উত্তর পরে বিস্তারিতভাবে দেয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী পুলিশের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তখন ওখানকার এসপির দায়িত্বটা কী ছিল? নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব কী ছিল। কেউ কি এসপিকে জিজ্ঞাসা করেছেন, আপনার পুলিশের গাড়িতে করে সরকারি দলের প্রার্থী ঘুরে বেড়াচ্ছেন? আমির খসরু বলেন, গাজীপুরে আওয়ামী লীগের নির্বাচন তাদের দলের নেতাকর্মীরা পরিচালনা করছেন না। তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব নিয়েছেন সেখানকার পুলিশ সুপার আর গোয়েন্দা সংস্থা। পুরো নির্বাচনটা পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুলিশ বিভাগ, এসবি-ডিবি এরা করছে। মনে হচ্ছে প্রার্থী আওয়ামী লীগের নন, এসপি নিজেই প্রার্থী। এরকম একটা ভাবসাব দেখা গেছে। ভোটারদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ। গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে রোববার দিনভর আওয়ামী লীগের বহিরাগতরা নির্বাচনী প্রচারণা করেছেন। মাইক লাগিয়ে জনসভা করেছেন। আর নির্বাচন কমিশন নীরবতা পালন করে তাদের পক্ষপাতমূলক আচরণ স্পষ্ট করেছে। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর