ফুটবলে কলম্বিয়ার বিপক্ষে কখনোই হারেনি ইংল্যান্ড। আগের পাঁচবারের দেখায় এক ম্যাচেও ইংল্যান্ডকে হারাতে পারেনি কলম্বিয়া। এবার রাশিয়া বিশ্বকাপে নকআউট পর্বের লড়াইয়ে নামছে দুই দল। মস্কোর স্পার্তাক স্টেডিয়ামে আজ রাত ১২টায় দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচটি শুরু হবে। ৬৬’র চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে সমীহ করেই মাঠে নামছে কলম্বিয়া। দারুণ ছন্দে থাকা ইংলিশদের খারাপ দিনের প্রত্যাশা করছেন কলম্বিয়ার আর্জেন্টাইন কোচ হোসে পেকারম্যান। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই ইংল্যান্ডের ভালো দিন অথবা খারাপ দিন যেতে পারে। ইংল্যান্ড তারুণ্যে পরিপূর্ণ একটি দল।
নিজেদের ওপর তাদের বিশ্বাসের জায়গাটা অনেক বড়। শেষ ষোলোতে কোনো দলকে খারাপ বলার সুযোগ নেই।’ ফিটনেসের কারণে কলম্বিয়ান তারকা হামেস রদ্রিগেজের খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সেনেগালের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পায়ের ইনজুরি নিয়ে প্রথমার্ধে মাঠ ছাড়েন তিনি। অন্যদিকে উরুর ইনজুরি কাটিয়ে খেলার জন্য ফিট ইংল্যান্ডের ড্যালে আলী। টানা দুই ম্যাচ মিস করেন এই উঠতি উইঙ্গার। অধিনায়ক হ্যারি কেইনসহ দলের নিয়মিত খেলোয়াড়রা ফিরছেন। বেলজিয়ামের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে একাদশের আটজনকে বিশ্রামে রাখেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। বিপরীতে ৯টি পরিবর্তন আনেন বেলজিয়ামে স্প্যানিয়ার্ড কোচ রবার্তো মার্টিনেজ। যেকোনো ধরনের ফুটবলে এক ম্যাচে রেকর্ড ১৭টি পরিবর্তন দেখেন দর্শকরা। ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডকে ১-০
গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় বেলজিয়াম। কলম্বিয়ার বিপক্ষে দলের পারফরম্যান্সের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী সাউথগেট। ইংলিশ কোচ বলেন, ‘আমি মনে করি খেলার ধরনে আমরা একটা উত্তেজনা তৈরি করেছি। মানুষের সঙ্গে ইংল্যান্ড দল আবারো সংযোগ স্থাপন করা শুরু করেছে। তরুণ ইংলিশ খেলোয়াড়রা কি করতে পারে আমাদের খেলার মধ্য দিয়েই তার একটা অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। আমি তা অব্যাহত রাখতে চাই।’ ইংল্যান্ড দলকে সামনে থেকে নেতৃত্বে দিচ্ছেন হ্যারি কেইন। প্রথম দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ গোল করে ‘গোল্ডেন বুট’ জয়ের রেসে আছেন ২৪ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার। তিউনিশিয়ার বিপক্ষে (২-১) গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে ইনজুরি সময়ে কেইনের গোলেই ড্র এড়ায় ইংল্যান্ড। পানামার বিপক্ষে ৬-১ গোলের দাপুটে জয়ে হ্যাটট্রিক করেন কেইন। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটাই ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়। অন্যদিকে জাপানের বিপক্ষে ২-১ গোলের পরাজয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে রাদামেল ফ্যালকাওয়ের কলম্বিয়া। পোল্যান্ডকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে ছন্দে ফেরে দক্ষিণ আমেরিকার দলটি। শেষ ম্যাচে সেনেগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় কলম্বিয়া। কলম্বিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার জয়ী দল কোয়ার্টার ফাইনালে সুইডেন কিংবা সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে। বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার বিপক্ষে একবারই খেলে ইংল্যান্ড। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ২-০ গোলের জয় পায় থ্রি লায়ন্সরা। সব মিলিয়ে পাঁচবারের সাক্ষাতে তিন ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। দুই ম্যাচ ড্র। সবশেষ ২০০৫ সালে নিউজার্সিতে প্রীতি ম্যাচে কলম্বিয়াকে ৩-২ গোলে হারায় ইংল্যান্ড। গত বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে কলম্বিয়া। বিশ্বকাপে এটাই তাদের সেরা সাফল্য। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় ইংলিশরা। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে নিজেদের শেষ আট ম্যাচে মাত্র দুইটিতে জয় দেখে ইংল্যান্ড। সবশেষ জয়টি আসে দক্ষিণ আমেরিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। ২০০৬ আসরের শেষ ষোলোতে ইকুয়েডরকে ১-০ গোলে হারায় তারা। নকআউট পর্বে ১৮ ম্যাচের মধ্যে একবারই গোল করতে ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ড। ২০০৬ আসরে গোলূশন্য কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডকে হারায় পর্তুগাল। বিশ্বকাপ মঞ্চে এটি হবে দক্ষিণ আমেরিকান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ১৮তম ম্যাচ। আগের ১৭ ম্যাচের আটটিতে জয় পায় ইংল্যান্ড (৩ ড্র, ৬ হার)।