কলম্বিয়া ম্যাচের শেষে পেশিতে টেন ধরেছিলো হ্যারি কেনের। সংশয় জেগেছিলো সুইডেনের বিপক্ষের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা নিয়ে। সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে দুদিনের বিশ্রামে পূর্ণ সুস্থ হয়ে একাদশে থাকা নিশ্চিত করেছেন এই ইংলিশ অধিনায়ক। সকালের পাওয়া তথ্য মতে সামারা এরিনার হ্যারি কেনকে একাদশ রেখেই টিম সাজিয়েছেন সাউথগেট। মানসিক ভাবে শক্তিশালী কেনও নিজেকে ফিট দাবি করছেন। বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় শুরু হবে সুইডেন ইংল্যান্ডের এই তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল। রাত বারোটায় আরেক কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিক রাশিয়ার মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়া।
মস্কোর স্পার্টাকে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ১২০ মিনিটের হাড্ডহাড্ডি লড়াই জয়ের পর সুইডেন ম্যাচের আগে কোচ সাউথগেটের একটাই লক্ষ্য ছিলো ফুটবলারদের চোট সমস্যা ও শারীরিক-মানসিক ক্লান্তি কাটিয়ে তরতাজা করে তোলা। তাই সুইমিং পুলে একঘেয়ে ব্যায়ামের বদলে ঘোড়ায় চেপে পানিতে ঘুরিয়েছেন।
খেলার ছলে ব্যায়াম হয়েও যাচ্ছে। দম ও স্ট্যামিনা বাড়াতে কাবাডি খেলিয়েছেন সাউথগেট। তাঁর মতে, ১২০ মিনিট খেলতে হলে এই বাড়তি দমটুকু দরকার। তাছাড়া পেনাল্টি নেওয়ার মুহূর্তে কবাডির দম ধরে রাখার অনুশীলনটা প্রচুর কাজে দেয় বলে দাবি তার। তাছাড়া ফুটবলারদের মনঃসংযোগ ঠিক রাখতে ও চাপ কমাতে সবসময় নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে চলেছেন মনোবিদ, ইংল্যান্ড মহিলা দলের প্রাক্তন বাস্কেটব খেলোয়াড় ডাঃ পিপ্পা গ্যার্যাঞ্জেস। নিজ হাতে সব ফুটবলারের ঘরে ও জিমের দেওয়ালে লাগিয়েছেন উৎসাহব্যঞ্জক স্লোগান। কোচ সাউথগেটও মনে করেন, এমন একজন দলে থাকলে ফুটবলাররা সবসময়ই কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারেন অনায়াসে। যেমন পেরেছেন কলম্বিয়ার সঙ্গে টাইব্রেকারে পেনাল্টি নেওয়ার সময়। সাউথগেট পেনাল্টিতে সফল হওয়ার মধ্যে ভাগ্যের দোহাই দিতে নারাজ। তাঁর মতে, ‘দক্ষতা ও মানসিক শক্তির পরিচয় যারা দিতে পারে, তারাই সফল হয়। সুইডেনের বিরুদ্ধে খেলার আগেও ফুটবলারদের একই কথা বলেছি। খেলাটা উপভোগ করতে। ওদের বলেছি, এটা লাইফ টাইম অপরচুনিটি। ২০০৬-এর পর আবার কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ তোমাদের সামনে। হয়তো দু’বছর বাদে এই নবীন দলটা আরও পরিণত হবে, কিন্তু বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠার এই সুযোগটা আর না-ও আসতে পারে। সুইডেনকে হারালে ১৯৯০-এর পর শেষ চারে খেলার সুযোগ মিলবে। অতএব নিজেদের উজাড় করে দাও। জানি দলে অনেক চোট সমস্যা আছে, তবু সেগুলো মাথায় রেখেই একটা ফিট দল নামাতে হবে আজ।
গত এক বছরে সুইডেনের সাফল্য প্রশ্নাতীত। বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জনের পথে তারা ছিটকে দিয়েছে হল্যান্ড ও ইতালির মতো হেভিওয়েট দলকে। ১৫টি সাক্ষাতের মধ্যে ইংল্যান্ড জিতেছে মাত্র দুবার। সাউথগেটের বক্তব্য, ‘সুইডেন সম্পর্কে আমার অন্তত বাড়তি সমীহ বোধ আছে। অতীতে ওদের খাটো করে দেখার ফল ভুগেছে ইংল্যান্ড। সেই ভুল করতে নারাজ আমার ফুটবলাররা। সুইডেনের এই দলে অভিজ্ঞ ফুটবলারের সংখ্যা বেশি। টুর্নামেন্ট রেকর্ডও আমাদের থেকে ভাল। তাই হালকাভাবে ওদের দেখার প্রশ্নই নেই। এদিকে কলম্বিয়া ম্যাচে চোট পাওয়া হ্যারি কেনও সুস্থ হয়ে উঠছেন। ৬ গোল করে গোন্ডেন বুটের দাবিদার কেন বলেন, আমি ফিট। বিশ্বকাপের এমন একটা ম্যাচে না খেলার কথা ভাবতেই পারি না। সুইডেনের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে চাই। আমাদের দলটা নবীন। কিন্তু খেলতে খেলতে আমরা উন্নতি করেছি, একটা দল হয়ে লড়তে শিখেছি। এই দলগত সংহতিটাই আমাদের আসল অস্ত্র।