× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

থিয়েরি অঁরি যখন ফ্রান্সের শত্রু

ইংল্যান্ড থেকে

স্পোর্টস রিপোর্টার, সেইন্ট পিটার্সবার্গ (রাশিয়া) থ
১০ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার
বেলজিয়াম দলের অনুশীলনে থিয়েরি অঁরি

১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন থিয়েরি অঁরি। ওই দলের অধিনায়ক ছিলেন দিদিয়ের দেশম। ২০ বছর পর আবারও দু’জনের সুযোগ এসেছে আরেকটি বিশ্বকাপ ট্রফি ছুঁয়ে দেখার। এবারের বিশ্বকাপে দু’জনের ভূমিকা এক হলেও দু’জনের প্রার্থনা ভিন্ন। দেশম রাশিয়া বিশ্বকাপে এসেছেন ফ্রান্সের কোচ হয়ে। আর থিয়েরি অঁরি সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করছেন বেলজিয়ামের। আজ এই দু’দল মুখোমুখি হচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে। তাইতো সেমিফাইনালের আগে ঘুরে ফিরে আসছে অঁরি প্রসঙ্গ।
থিয়েরি অঁরিও বিষয়টিকে খুব উপভোগ করছেন। গতকাল সেইন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে বেলজিয়ামের অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের অঁরি বলেন, আমি প্রফেশনাল। একজন প্রফেশনাল ব্যক্তি হিসেবে এই ম্যাচে আমার ভূমিকা যেমন হওয়া উচিত, তেমনি হবে। তবে আমার শুভকামনা থাকবে ফ্রান্সের জন্য।   
২০ বছর আগে বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন থিয়েরি অঁরি। যদিও ওই বিশ্বকাপের ফাইনালে একাদশে সুযোগ হয়নি তার। আট বছর পর সেই থিয়েরি অঁরি জুটি বেঁধেছিলেন জিনেদিন জিদানের সঙ্গে। তার এবং জিদানের নৈপুণ্যে ২০০৬ জার্মানি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ফ্রান্স। ফাইনালে ইতালিকে হারিয়ে জিদান-অঁরির হাত ধরেই ফরাসিরা ভেবেছিল দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলবে; কিন্তু ইতালির বিপক্ষে ফাইনালে টাইব্রেকারে হার নিয়ে স্বপ্ন ভাঙে ফরাসিদের। সেদিন টাইব্রেকারে শট নেয়ার সুযোগ পাননি অঁরি। তার আগেই পায়ের ব্যথা নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। ১০ বছর পর আবারো শিরোপা জয়ের হাতছানি অঁরির সামনে। তবে এবার আর খেলোয়াড় হিসেবে নয়, কোচ হিসেবে। আর মাত্র দুটি বাধা পার হতে পারলেই দু’দশক পর আরও একবার বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখতে পারবেন ফ্রান্সের ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার। যে দেশটিকে বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছেন, যে দেশের হয়ে খেলেছেন আরও একটি বিশ্বকাপের ফাইনাল, সে নিজ দেশের বিপক্ষেই কি না রণ পরিকল্পনা সাজাতে হচ্ছে থিয়েরি অঁরিকে। আজ হয়তো ফ্রান্সের বিপক্ষে তেমনই কৌশল নির্ধারণ করবেন অঁরি। নিজ দেশকে কিভাবে হারাতে হবে, কিভাবে ভিন্ন একটি দেশের হাতে তুলে দিতে হবে বিশ্বকাপ শিরোপা, সে পরিকল্পনাই এখন করছেন এই ফরাসি তারকা। ফ্রান্সের এই দলটিকে তিনি খুব ভালো করেই চেনেন, জানেন। নিজ দেশের ফুটবলারদের খুব কাছ থেকে দেখার-জানার সৌভাগ্য হয়েছে অঁরির। সুতরাং, তাদের দুর্বলতা বের করা কোনো ব্যাপারই না অঁরির জন্য। সেই অঁরি কি ভাবছেন ফ্রান্স ম্যাচের আগে। এক ফরাসি সাংবাদিকের করা এমন এক প্রশ্নে জবাবে থিয়েরি অঁরি জানান, একজন প্রফেশনাল ব্যক্তির জন্য যা করার উচিত আমি তাই করবো। আমার চেষ্টা থাকবে বেলজিয়ামকে বিজয়ী করে মাঠ ছাড়তে। এদিকে প্রতিপক্ষ শিবিরে থিরেরি অঁরির উপস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না ফরাসি ফুটবলাররা। আর কোচ দিদিয়ের বলেন, দেশম ‘অঁরি ওর কৌশল দিয়ে আমাদের আটকাতে চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা আমাদের খেলাটা খেলে যাবো। আমাদের ভাবনায় থাকা উচিত না, ওই দলে কে আছে। সে এক সময় আমাদের কী ছিল।
দুই বছর ধরে বেলজিয়ামের ডাগআউটে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফ্রান্সের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। অঁরি যে ভুল দল পছন্দ করেছেন সেটি দেখিয়ে দিতে চায় ফ্রান্স। ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ড অলিভার জিরু বলেন, ‘অঁরিকে আমাদের বিপক্ষে দেখাটা উদ্ভট ব্যাপার। তিনি যে ভুল দলকে বেছে নিয়েছেন সেটি প্রমাণ করতে চাই। সফল হলে সেটি হবে আমার জন্য গর্বের। তাকে আমাদের কোচিং স্টাফে পেলে খুশি হতাম। তার উপদেশ ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ডদের কাজে লাগতো। কিন্তু আমি খুব বেশি ঈর্ষা করছি না। অঁরি ফ্রেঞ্চ ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি। তাকে আমরা অনেক সম্মান করি। কিন্তু এখন এটি নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। আমাদের পুরো মনোযোগ ম্যাচের দিকে।’ কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে ফ্রান্স ও ব্রাজিলকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কাটে ইউরোপের ‘ডার্ক হর্স’ বেলজিয়াম। ২০১৬ সালে রবার্তো মার্টিনেজের সহকারী হিসেবে বেলজিয়ামের কোচিং স্টাফে যোগ দেন অঁরি। জিরুর কথারই প্রতিধ্বনি করেন ফ্রান্সের উঠতি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ১৯ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার বলেন, ‘থিয়েরি অঁরি আমাদের বিপক্ষ দলে। ব্যাপারটা অদ্ভুত। তাকে আমি অনেক পছন্দ করি। তিনি অসাধারণ একজন খেলোয়াড় এবং তাকে দেখে আমি অনুপ্রাণিত। আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অনেক। এই ম্যাচ নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। নিখুঁত পারফরম্যান্স প্রদর্শন করতে সবাই প্রস্তুত।’ ফ্রান্সের ৯৮’র বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য অঁরি। দুই বছর পর জেতেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ (ইউরো)। সেরা ফর্মে থেকে ২০০২ আসরে গ্রুপ পর্বে দলের বিদায় দেখেন অঁরি। ২০০৬ বিশ্বকাপে ফ্রান্সকে ফাইনালে নিয়ে যেতে অবদান রাখেন আর্সেনাল কিংবদন্তি। ফ্রান্সের জার্সিতে ১২৩ ম্যাচে ৫১ গোলের মালিক থিয়েরি অঁরি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর