× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

যে বেদনায় কাঁদেন ডেলে আলির মা

বিশ্বজমিন

মোহাম্মদ আবুল হোসেন
(৫ বছর আগে) জুলাই ১০, ২০১৮, মঙ্গলবার, ১২:২২ অপরাহ্ন

বিশ্বকাপে ইংলিশ স্কোয়াডে নিজের কৃতিত্বের পরিচয় দিয়ে হিরোতে পরিণত হয়েছেন ২২ বছর বয়সী মিডফিল্ডার ডেলে আলি। তার কৃতীত্ব দেখে ২৫০০ মাইল দূরে বাকিংহামশায়ারের মিল্টন কিনেসে অবস্থানকারী তার মা উদ্বেলিত। ছেলের এমন কৃতীত্বে তিনি একবারের জন্য হলেও তাকে বুকে জড়িয়ে ধরতে চান। একটু আদর করতে চান, যেমনটা চান প্রতিটি মা-ই। কিন্তু  তার মা ডেনিস পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন। ডেলি আলির সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই। তিনি নিজে একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী। তবু মা তো মা-ই।
তিনি নিজেকে সংবরণ করতে পারেন না। ছেলের কৃতীত্ব দেখে গোপনে অশ্রু ঝরান। বিশেষ করে সুইডেনের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন তার ছেলে ডেলে আলি। এর ফলে ইংল্যান্ড সেমি ফাইনালের স্বস্তিকর অবস্থানে চলে যায় । এই সফলতায় ডেলে আলির পাশে এক ক্যামেরাবন্দি হতে দেখা গেলে তার বিস্ময়কর সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড রুবি মাই’কে। সুইডেনের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর ডেলে আলীকে দেখা গেছে তার পালক পিতামাতা অ্যাল ও স্যালি হিকফোর্ডের সঙ্গে। এসব ছবি দেখে হতাশা প্রকাশ করেন ডেনিস। তার জন্ম দেয়া সন্তানের এমন কৃতীত্বে তার পাশে অন্যরা। অথচ তিনি নেই। ডেনিস এ জন্য নীরবে অশ্রু বিসর্জন করেন। বলেন, আমার মনে হয় ডেলে আলি তাদেরকেই তার পরিবারের সদস্য বলে মনে করে। কিন্তু এখনও তো আমি ওর মা। তাই ওরকম ছবি দেখার পর আমার বুকটা ভেঙে যায়। অবশ্যই আমি রাশিয়া গিয়ে তার পাশে দাঁড়াতে চাই। বিশ্বকাপের জন্য ইংল্যান্ড ছাড়ার পর তাকে আমি একটি বার্তা পাঠিয়েছিলাম। আবার যখন সে গোল করেছে তখন একটি বার্তা পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু এর কোনো জবাব পাই নি। ডেলে আলি আমার সঙ্গে কোনোই যোগাযোগ করে না। এ জন্যই আমার এতটা কষ্ট। সে শুধু আমার মেয়ের পাঠানো ম্যাসেজগুলোর উত্তর দেয়। আমি ডেলে আলির কাছে কিছু চাই না। আমি শুধু আমার ছেলেকে একবার জড়িয়ে ধরতে চাই, যে তার মাকে এতটা গর্বিত করেছে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলে। বিশ্বকাপে গোল করে। ডেলে আলির মা ডেনিস দু’বছর আগে বলেছিলেন, মিল্টন কিনেসে উন্নত জীবন খুঁজে নিতে ডেলে আলিকে চলে যেতে দিয়েছিলেন তিনি। তারপর যখন তিনি জানলেন ডেলে আলি তারকা ফুটবলার হয়ে উঠেছেন, তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে, সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিয়েছেন। ডেনিস বলেন, আমি তাকে একটি উন্নত জীবন খুঁজে নিতে ছেড়ে দিয়েছিলাম। এটা ছিল এক আবেগঘন অবস্থা। এখন বুঝতে পারি আমি ঠিক কাজ করেছি। শৈশব থেকে আমার ড্রিংকিং মারাত্মক ড্রিংকিং সমস্যা ছিল। আমি ভোদকা, বিয়ার বা এমন অন্য কিছুতে মেতে থাকতাম কয়েক বছর। এ  অবস্থায় কিভাবে সন্তানদের বড় করবো তা নিয়ে প্রতিবেশীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর সোশ্যাল সার্ভিসেসের লোকজন এসে আমাকে পর্যবেক্ষণ করে। তবে তারা আমার কাছ থেকে সন্তানদের নিয়ে যান নি। অন্য একটি পরিবারে বড় হওয়ার জন্য ডেলে’কে আমি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এটা ছিল আমারই সিদ্ধান্ত। আমি জানতাম এটাই ছিল একমাত্র পথ। যার মাধ্যমে সে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবে এবং একজন পেশাদার ফুটবলার হয়ে উঠবে। তবে তাকে এভাবে একেবারে অন্য একটি পরিবারের কাছে ত্যাগ করে দেয়া ছিল খুব কঠিন কাজ।

উল্লেখ্য, গত বছর টটেনহ্যামে খুব বাজে একটি সময় পাড় করেছেন ডেলে আলী। তবে বড় বড় বিরোধীদের বিরুদ্ধে তিনি গোল করে নিজেকে প্রমাণ করেন তারকা খেলোয়ার হিসেবে। তিনি গোল করেন চেলসি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়েল মাদ্রিদ এবং লিভারপুলের বিরুদ্ধে। এতে তার ভাগ্য খুলে যায়। ডাক পড়ে বিশ্বকাপ মিশনে। নিজেই স্বীকার করেছেন, তার মনে আশা ছিল। চেয়েছিলেন রাশিয়ায় এসে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে। তার স্বপ্ন সত্য হয়েছে। রাশিয়ায় অবিশ্বাস্য একটি টুর্নামেন্ট খেলছে তার দল। ডেলে আলী বলেছেন, এটা সম্ভব হচ্ছে সবার অভিজ্ঞতার কারণে। আমরা সবাই ভাল খেলছি। আমরা প্রতিনিয়ত শিখছি। আনন্দ করছি। দেশ থেকে পাঠানো ভিডিও দেখছি আমরা। মনে হচ্ছে পুরো দেশ আমাদের সঙ্গে আছে। তাদের এমন সমর্থন আমাদেরকে শক্তি যোগায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর