× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় / ১০ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য অনুসন্ধানে দুদক

দেশ বিদেশ

নূর মোহাম্মদ
১২ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার

৫২ জনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ১১২ জনের নিয়োগ দিতে যাচ্ছে নতুন অনুমোদন পাওয়া ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। এরমধ্যে ভিসির নিজ এলাকা চট্টগ্রামের ২৭ জন। বাকিদের আলিয়া মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীদের সংগঠন জমিয়াতুল মোদার্রেসিন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোটায় নিয়োগ দেয়ার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও প্রায় ১০ হাজার আবেদনকারীর পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ প্রার্থীদের নিয়োগে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। চাকরি আবেদনের ফরম বিক্রির নামে আরো প্রায় ১ কোটি টাকা আয় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমন বিতর্কিত নিয়োগ বন্ধ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তৎপরতা চালিয়েও বন্ধ করতে পারেনি। বিষয়টি এখন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক পর্যন্ত গড়িয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, যেনতেন নিয়োগ দিয়ে ছাড় পাবে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকলে কারও বেতন ভাতা ছাড় হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ইচ্ছেমত নিয়োগ  দিতে পারে না। ইউজিসির অনুমোদন লাগবে। যদি অনুমোদন থাকে তাহলে সমস্যা নেই। আর যদি অনুমোদন না থাকে কারও বেতন ভাতা ছাড়া হবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এর আগে কী হয়েছে সেটি আমার জানার দরকার নেই। এবার কেউ ছাড় পাবে না। জানা গেছে, ফাযিল ও কামিল মাদরাসাসমূহ পরিচালনার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আদলে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। ধানমণ্ডিতে কিছুদিন ক্যাম্পাস থাকলেও বর্তমান ক্যাম্পাস মোহাম্মদপুরের বছিলায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথমে গত বছরের ২১শে আগস্ট ৫২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। এরপর আবার একই ক্যাটাগরিতে চলতি বছরের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি আরেকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়। দুই বিজ্ঞপ্তি মিলিয়ে পাঁচ হাজারের বেশি প্রার্থী আবেদন করে। গত ৪ঠা এপ্রিল নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এমনকি প্রার্থীদের নিজ নিজ ঠিকানায় প্রবেশপত্রও ইস্যু করা হয়। এরপর হঠাৎ করেই গত ২৭শে মার্চ নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে গত ২৪ই মে ১১২টি পদের জন্য সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সোমবার থেকে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়েছে, যা চলবে ১৩ই জুলাই পর্যন্ত। সব মিলিয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ হাজার। আবেদনকারী প্রত্যেকের এক হাজার ও পাঁচশ টাকা করে ব্যাংক ড্রাফট চাওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে ব্যাংক ড্রাফট থেকেই আয় হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।

সূত্র জানায়, তিন দফায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেও পছন্দের প্রার্থী আগে থেকেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব পদে অস্থায়ী নিয়োগ দিয়ে রেখেছে। অভিযোগ রয়েছে, কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পেতে প্রত্যেক প্রার্থীকে দিতে হয়েছে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা। আর কর্মচারী পদে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। মূলত এসব অস্থায়ী প্রার্থীদেরই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হবে। এমনকি পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে সর্বশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ১৪ নম্বর শর্তে বয়স শিথিল করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স-এর শর্ত শিথিলযোগ্য। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরই যেকোনো শর্তে নিয়োগ দিতে চায় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এদিকে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকে অভিযোগ করেছেন চাকরি প্রার্থী রফিকুল ইসলাম। দুদক থেকে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও পরিদর্শক এই তিন জন মিলে পছন্দের প্রার্থীদের চূড়ান্ত করেছেন। চাকরির কোটা না মেনে আগেই ১১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে অ্যাডহক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে পদ অনুযায়ী ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা লেনদেন করা হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ হবে প্রায় ১০ কোটি টাকা। এমনকি নিয়োগ কমিটির যারা ঘুষ-দুর্নীতির প্রতিবাদ করেছে তাদের কৌশলে বাদ দেয়া হয়েছে। যেসব প্রার্থীদের অ্যাডহক নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের তালিকাও অভিযোগ পত্রের সঙ্গে দেয়া হয়েছে। এই নিয়োগের মাধ্যমেই মূলত তাদের স্থায়ী করা হবে। অ্যাডহক নিয়োগ পাওয়া ১১২ জনের মধ্যে ২৭ জনের বাড়িই চট্টগ্রামে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ভিসির বাড়ি চট্টগ্রামের কক্সবাজারে। তাই এই জেলা থেকেই নেয়া হয়েছে বেশিরভাগ প্রার্থী।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর