মানহানির পৃথক দুই মামলায় জামিন পেতে এবার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল তার পক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিনের এ আবেদন করেন। এর আগে গত ৫ই জুলাই খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন নাকচ করেন ঢাকার মহানগর হাকিম আদালত। এই দুই মামলার বিচারকাজ রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে চলছে। পরে মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘এ দুই মামলায় মহানগর হাকিম আদালত গত ৫ই জুলাই জামিনের আবেদন না-মঞ্জুর করেছিলেন। আজ (গতকাল) মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়েছে। আদালত ৩১শে জুলাই জামিন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।’
এ দু’টি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য গত ২২শে মে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবীরা। শুনানি নিয়ে ৩১শে মে এক আদেশে খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারিক আদালতে তার করা আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
গত ৬ই জুন এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশিত হয়। আদেশের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, ‘খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর ও জামিনের আবেদন নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ভুল পথে পরিচালিত হয়েছেন।’ পরে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে আবেদন করে। ১১ই জুন চেম্বার আদালত এক আদেশে হাইকোর্টের দেয়া ওই আদেশ বহাল রেখে রাষ্ট্রপক্ষের করা পৃথক দু’টি আবেদনের ওপর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। ২৫শে জুন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত আপিল বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানানো এবং তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ার অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩রা নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা দায়ের করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। শুনানি নিয়ে আদালত ঘটনার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তেজগাও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। পরে তেজগাঁও থানা পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। অন্যদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০শে আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মহানগর হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে খালেদাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন।