× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আলোচনা সভায় বক্তারা /জনগণের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদী তৎপরতা রুখতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
১২ জুলাই ২০১৮, বৃহস্পতিবার

দেশে সভা-সমাবেশ করা যেখানে গণতান্ত্রিক অধিকার সেখানে পুলিশ গিয়ে হামলা চালাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে। ন্যায্য দাবি আদায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামলে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। দেশের স্বার্থে জনগণের বিরুদ্ধে এই অপতৎপরতা রুখে দেয়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গতকাল সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী জাতীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নির্দ্বিধায় বলা যায় স্বাধীনতার পর দেশে যত ছাত্র আন্দোলন হয়েছে তার মধ্যে কোটা সংস্কারের আন্দোলন হচ্ছে অন্যতম। এই আন্দোলন অত্যন্ত সুকৌশলে দমন করছে সরকার। তারা বলছে এই প্রজ্ঞাপন হচ্ছে, এই কমিটি হচ্ছে, এই প্রজ্ঞাপন হচ্ছে।
যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হচ্ছে আর পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছে পুলিশ। পুলিশ কার টাকায় চলে? এই পুলিশতো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলে। তাহলেতো পুলিশকে জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে। তারা জবাব দিবে না। কারণ, তাদের এই শিক্ষার্থীদের পেছনে কারা লেলিয়ে দিয়েছে তা আমরা খুব ভালোভাবে জানি। তিনি বলেন, কোটায় কোন স্থানে বৈষম্য রয়েছে তা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আঙুল দিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে। তাহলে কেন তাদের যৌক্তিক দাবি মানা হবে না? এই প্রশ্ন এখন সবার। এই আন্দোলনকে আবার কেউ কেউ জঙ্গিতত্ত্ব আবিষ্কার করলেন। আগেতো আমরা দেখেছি কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে ব্যবসা করতো। এই জঙ্গিতত্ত্ব সেই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কী-না সেটা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রকাশ্যে সভা সমাবেশতো দূরের কথা কোনো স্থানে ঘরোয়া সমাবেশেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হানা দিচ্ছে। লোকজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাহলে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা কোথায় থাকলো? যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে না সেখানে গণতন্ত্র দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ে। সরকারের প্রতি জনগণের আস্তায় চিড় ধরে। তিনি বলেন, দেশ আজ হাতুড়ির নিচে কাতরাচ্ছে। যারা কোটা আন্দোলন শুরু করেছিল তারা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে মনে করেছিল যে, যেখানে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কথা বলছেন তারা তাঁর কথা আমলে নিয়ে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ফিরে গেছেন। শিক্ষার্থীদের একটি ভুল আছে। তারা আন্দোলন সম্পন্ন না করেই ফিরে গেছে। এজন্য তো তারা এখন ভুলের মাসুল দিচ্ছে, এই মাসুল তাদের আরো দিতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, দেশের শাসক শ্রেণি পরিবর্তন খুব জরুরি হয়ে গেছে। কারণ বর্তমান শাসক শ্রেণি দেশের সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোক ধ্বংস করে দিয়েছে। যেগুলো বাকি আছে সেগুলোতেও তারা হাত বাড়াচ্ছে।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একজন রাজনৈতিক উপদেষ্টা আবারও তাদের সেই অবৈধ ক্ষমতাকে পাকা করার জন্য ভারতে গিয়ে কীভাবে সেদেশের শাসক শ্রেণির দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছে তা দেখে গোটা জাতি লজ্জিত। তিনি সেখানে বলেছেন, তিস্তা কোনো সমস্যা না। অথচ এই তিস্তায় পানি না থাকার কারণে গোটা এলাকা খা-খা করছে। এই মোসাহেবগিরি শুধু কী মাত্র আওয়ামী লীগ করছে? আমরা জানি বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলও ভারতে গিয়েছিল। তারা বলেছে যে, ভারতকে তারা খুব কাছের বন্ধু মনে করে। এই দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের মালিক সাম্রাজ্যবাদ শক্তি। আমরা এই দেশকে কারো কাছে দাসখত দিতে পারি না। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধ করিনি। গুম হয়ে যাওয়া বিএনপির নেতা সাজিদুল হক সুমনের বোন আফরোজা ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রাষ্ট্রের আইন আছে, আমরা এই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কেউ কোনো অপরাধ করলে তার বিচার হোক। কিন্তু, দিন-দুপুরে একটি মানুষকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যাচ্ছে এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাহলে আমরা কোন রাষ্ট্রে বসবাস করছি।
সভাপতির বক্তব্যে বিশিষ্ট লেখক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব কিছুতেই জিরো টলারেন্স এর কথা বলেন। তার কাছে আশা করছি, তিনি যেন বলেন যে, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হলো। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তার মুখ দিয়ে এই কথাটি শুনতে পেলাম না। তিনি আরো বলেন, দেশের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে বর্তমান শাসক দল আবারও ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের মতো একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে আওয়াজ তুলতে হবে, এই সরকার আর না, এই সরকার আর না। যদি তারা না যায়, তাহলে তাদেরকে যেতে বাধ্য করতে হবে। আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সি আর আবরার, বাংলাদেশে ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু ও বাংলাদেশে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম ও জাতীয় গণফন্টের প্রধান সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর