রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের অভিযোগ ও শঙ্কা ততই বাড়ছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই সরকারি দলের প্রার্থী ছাড়া অন্যরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। প্রতীক পেয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকে প্রার্থীদের এ অভিযোগ বাড়ছে। প্রচারে সমান সুযোগ মিলছে না এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী কাজে বাধার অভিযোগ করছেন কোনো কোনো প্রার্থী। খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেই প্রার্থীদের কাছ থেকে একই অভিযোগ এসেছিল। তখন নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের নানা আশ্বাস দিলেও নির্বাচনে অনিয়ম-জালিয়াতির ঘটনা ঘটে, যা নির্বাচন কমিশনের তদন্তেও উঠে আসে। এমন অবস্থায় ৩০শে জুলাই তিন সিটির নির্বাচনে আগের দুই নির্বাচনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তিন সিটির নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বৈঠক করেছে ইসি।
বৈঠকে তিন সিটির নির্বাচন যাতে অতীতের মতো প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা। জাতীয় নির্বাচনের আগে এই তিন সিটি নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সিইসি বলেছেন, সিটি নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বৈঠকের শুরুতেই সিইসি উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, এখন থেকে দুই মাসের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রক্রিয়ার দিকে যাব। সুতরাং সেই প্রস্তুতির পূর্বকালে এই তিন সিটি নির্বাচন আমাদের নির্বাচন কমিশন, মাঠপর্যায়ে যারা এই নির্বাচন পরিচালনা করবেন এবং এই নির্বাচনে সহায়তাকারী সব কর্মকর্তাসহ সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, কবিতা খানম ছাড়াও আইজিপি, র্যাব মহাপরিচালক, তিন বিভাগীয় কমিশনার, রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে নির্বাচন কমিশন অভয় দিলেও প্রার্থীরা শুরু থেকেই নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের অভিযোগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের আদেশ অমান্য করে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর নেতাকর্মীরাও প্রচারে বাধা সৃষ্টি করছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মূল লড়াইয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান ও বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে কামরান সন্তোষ প্রকাশ করলেও আরিফুল হক চৌধুরী শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছেন। এ নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন নগর নেতা বদরুজ্জামান সেলিম। আলোচনা আছে চাপে পড়ে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। এই সিটিতে বিএনপির জোট শরিক জামায়াতও প্রার্থী দিয়েছে। শুরুতে প্রত্যাহারের আলোচনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত জামায়াত প্রার্থী লড়াইয়ে রয়েছেন। তার নির্বাচনে থাকা নিয়েও দুই ধরনের আলোচনা রয়েছে ভোটারদের মাঝে। কেউ কেউ জামায়াতের এ অবস্থানে রাজনৈতিক সমঝোতার ইঙ্গিত খুঁজছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, জোটের সঙ্গে ভবিষ্যৎ দর কষাকষির অংশ হিসেবে জামায়াত এ অবস্থান নিয়েছে। রাজশাহী সিটিতেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নেই দাবি করে বিএনপি প্রার্থী বিদায়ী মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দুই থানার ওসির অপসারণ দাবি করেছেন। তার অভিযোগ নেতাকর্মীদের পুলিশ হয়রানি করছে নানাভাবে। বরিশালে বিএনপির প্রার্থী মুজিবুর রহমান সারোয়ার প্রচারে বাধার অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়া প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়ে বিএনপি সমর্থিত দুই কাউন্সিলর প্রার্থীকে জোর করে নির্বাচন থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তারা দু’জন যে দুই ওয়ার্ডে প্রার্থী ছিলেন এ দুই ওয়ার্ডে এখন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ছাড়া আর কোন প্রার্থী নেই।
দুই ওসির প্রত্যাহার চায় বুলবুল
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার খাতিরে নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ও মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শকের প্রত্যাহার দাবি করেছেন বিএনপি সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী। তারা অভিযোগ করেন, নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে সাদা পোশাকে পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলের নেতাকার্মীদের গ্রেপ্তার করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর বিএনপির কার্যালয়ে সিটির সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। এছাড়া বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট মামলায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর দলীয় নেতাকর্মীদের আটকের প্রতিকার ও অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের আবেদন জানান।
এদিকে বিএনপির অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘পুরোনো অভ্যাসের অংশ হিসেবে রাসিক নির্বাচন ঘিরেও বিএনপি শুরুতেই নানা অভিযোগ করে চলেছে। কিন্তু তারাই নানাভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছে।’
বিএনপি জানিয়েছে, প্রচারণার শুরুর দিন থেকে ধানের শীষের ব্যানার-পোস্টার লাগাতে বাধা দেয়া, পোস্টার-ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা, দলীয় কর্মীদের গ্রেপ্তার, মারধর ও হুমকি দেয়া হচ্ছে। যতদিন যাচ্ছে তারা আগ্রাসী হয়ে উঠছে।
বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘দুই দিনে জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকসহ অন্তত ১৮ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাদের অনেককে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চালান দেয়া হয়েছে। সাদা পোশাকে পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ না করতে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ ছাড়া গত বুধবার রাতে চেম্বার ভবনের সামনে পোস্টার টাঙ্গাতে গেলে নৌকার সমর্থকরা আমার এক কর্মীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে। পরে তাকে পুলিশেও দেয়া হয়েছে।’ মাত্র দুই দিনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অবৈধভাবে অন্তত চার কোটি টাকার পোস্টার, ব্যানার ছাপিয়েছে বলেও অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর ১৬নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করেন বুলবুল। বিকালে আদালত চত্বর থেকে শুরু করে ২নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি।
বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘বিএনপির মেয়রপ্রার্থীর লোকজনই বিভিন্ন স্থানে আমার ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলছে। তারা আমার সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কাজেই তাদের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘মাঠে খেলতে নামার শুরুতেই যদি কেউ ঝগড়া বাধানোর চেষ্টা করে তাহলে বুঝতে হবে পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা খেলতে চাচ্ছে না। বিএনপির অবস্থা হয়েছে তাই। তারা পরাজয় নিশ্চিত জেনে শুরুতেই নানা ধরনের অভিযোগ করা শুরু করেছে।’
প্রকাশ্যে নৌকা-হাতপাখা-লাঙ্গল
নীরবে ধানের শীষ
জিয়া শাহীন, বরিশাল থেকে জানান, বরিশালে মাইকের শব্দে এখন কান ঝালাপালা অবস্থা। ওমুক ভাইকে ভোট দিন, তমুক ভাই ভোলো লোক, পোস্টারে পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে চারদিক। কান পাতলে নৌকা-লাঙ্গল কিংবা হাতপাখার প্রচারণা শোনা যাচ্ছে। পোস্টারেও এদের আধিক্য। কিন্তু পোস্টার বা মাইকে বিএনপিকে তেমন দেখা না গেলেও প্রচারণায় পিছিয়ে নেই তারা। ঘরে ঘরে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কিংবা ব্যস্ততম এলাকায় বিএনপির প্রচারণা চলছে জোরেশোরে।
আগামী ৩০শে জুলাই বরিশাল সিটি করপোরেশন। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে হতে যাচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন। দলীয় প্রতীকের বিসিসি নির্বাচন হওয়ায় বরিশালের মেয়র প্রার্থী ভোটারদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা দেখা গেছে। তাই বিশেষ করে বড় দু’রাজনৈতিক দলের মেয়রপ্রার্থীদের মাঝেও শুরু হয়েছে নতুন উদ্দীপনা। নির্বাচনে বিজয়ী হতে নিজ নিজ প্রতীককে বড় করে দেখাতে চলছে প্রচার-প্রচারণা। মঙ্গলবার প্রতীক পেয়েই নেতাকর্মীদের নিয়ে গণসংযোগে নেমেছেন ১৪ দলের মেয়রপ্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এবং বিএনপির প্রার্থী সাবেক মেয়র বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার। বসে নেই অন্য মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন এবং গণসংযোগে নেমেছেন সকল প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা। সমর্থকদের হাতে হাতে রয়েছে তাদের পছন্দের প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার লিফলেট। লিফলেটগুলো সমর্থকরা সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
এবারই প্রথম সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক হাতে পেয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহ। যদিও তিনি এইবারই প্রথম মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নৌকাকে স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবেই দেখছেন তিনি। বরিশালে আওয়ামী লীগের ঘরের কোনো কোন্দল না থাকায় দলীয় প্রতীক নিয়ে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্যে আছেন সাদিক।
অপরদিকে, বিএনপির সরোয়ারের হাতে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ। নীরবে ব্যস্ত সময় পার করছেন ২০ দলীয় জোটের এই প্রার্থী। সরোয়ারের বিশ্বাস ধানের শীষই গণতন্ত্র ও উন্নয়নের প্রতীক। তাই ভোট ডাকাতির জবাব এবার ব্যালটেই দেবেন বরিশালের ভোটারা।
পোস্টারে পোস্টারে নগরী ছেয়ে গেছে। তবে সেখানে আধিক্য নেই বিএনপির। হাতে লিফলেট নিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত তার কর্মীরা। নিজে ছুটে যাচ্ছেন বাড়িতে বাড়িতে। সঙ্গে রায়েছেন বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের সব নেতা। হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছুটছেন ভোর না হতেই। মাইকিংও নেই তেমন বিএনপির কাউন্সিলর বা মেয়র প্রার্থীর। তবে তাদের উপস্থিতে টের পাচ্ছেন সবাই।
আওয়ামী লীগের পর প্রচার-প্রচারণায় এদিয়ে হাতপাখা মার্কার ইসলামী আন্দোলনের ওবায়েদুর রহমানের। বাসদের ডা. মনিষা চক্রবর্তীর প্রচার প্রচারণায় রিকশা শ্রমিকদের বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে দলে বিদ্রোহ থাকায় বেশি সুবধা তিনি করতে পারবেন না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
প্রচারণায় বাধা দেয়ার অভিযোগ: বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্নভাবে বাধা এবং হুমকি দিচ্ছেন ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালানো বিএনপি নেতাকর্মীদের। বুধবার বরিশাল নগরীর সদর রোডে গণসংযোগকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে টুকিটাকি সমস্যা হবে। এ নিয়ে আমরা মাথা ঘামাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। বিএনপির মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার সদর রোডে গণসংযোগ শেষে পোর্ট রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন।
এদিকে নগরীর বর্ধিতাংশ রসূলপুরে গণসংযোগকালে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার দ্বিতীয় দিনে এখন পর্যন্ত কিছু হয়নি। তাছাড়া নির্বাচনে কিছু সমস্যা হবেই। সেই সমস্যাগুলো অতিক্রম করে আমরা নির্বাচনে জয়ী হবো।
নগরীর মল্লিক রোডে গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ জানান, বিএনপি প্রার্থী যে অভিযোগ করেছেন সেটা ভিত্তিহীন। এরকম কোনো ঘটনা ঘটলে সবার আগে সাংবাদিকরাই জানবেন। সেরকম খবর পেয়ে থাকলে প্রমাণ দিতে বলা হয়। তিনি জানান, নগরীতে বেকারত্ব নিরসনের জন্য আমি কাজ করবো। এটাই আমার প্রধান উদ্দেশ্য। তাছাড়া তরুণদের জন্য ডিজিটালভাবে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বরিশালে সর্বোচ্চ ইভিএম: তিন সিটির মধ্যে বরিশালে সর্বাধিক বুথে ইভিএম থাকছে। সিলেট ও রাজশাহীতে ২টি হলেও বরিশালে ১০টি কেন্দ্রে বসছে ইভিএম। এ ১০টি কেন্দ্রে মোট ২২ হাজার ৮৪৮ জন ভোটার ইভিএমে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন। বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে বিসিসি নির্বাচনের প্রার্থীরা আচরণবিধি মানছেন কি-না তা তদারকি করতে পৃথক ভিজিল্যান্স টিম ও মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। গোটা নির্বাচনে আইনি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে রিটার্নিং কর্মকর্তার অধীনে থাকবেন জেলা প্রশাসনের ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
ইভিএমে যে কেন্দ্রগুলোয় ভোট গ্রহণ করা হবে সেগুলো হচ্ছে- ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কিশোর মজলিস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নুরিয়া আইডিয়াল স্কুল, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অক্সফোর্ড মিশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও গোবিন্দমোহন চৈতন্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিএম কলেজের কলা বিভাগ কেন্দ্র ও বিএম কলেজের বাণিজ্য বিভাগ কেন্দ্র এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, সৈয়দ আবদুল মান্নান ডিডিএফ মাদরাসা নিচ তলা এবং সৈয়দ আবদুল মান্নান ডিডিএফ মাদরাসার দ্বিতীয় তলা।
এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী আচরণবিধি তদারকি করতে ১০ সদস্যের ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান এবং সদস্য সদস্য সচিব সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন খান। অপর আট সদস্যের মধ্যে রয়েছেন প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি।