× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আনপ্রেডিকটেবল ওয়ার্ল্ডকাপ

ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১৯

রাহাত মাহমুদ চৌধুরী
১৬ জুলাই ২০১৮, সোমবার

রাশিয়া বিশ্বকাপকে অনেক বিশেষণে বিশেষায়িত করা যায়। আনপ্রেডিকটেবল, অঘটন, সেটপিসের বিশ্বকাপ বললে বাড়িয়ে বলা হবে না। ফেভারিটদের ভরাডুবির বড় প্রদর্শনী হয়ে গেছে এবারের আসরে। বিশ্বকাপ মঞ্চে অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দেয়া গুঁড়িয়ে দেয়ার দিন শেষ। উল্টো বড় দলগুলোকে এবার ঘাম ঝরাতে হয়েছে। বেশ কয়েকটি অঘটনের জন্ম দেয় ২০১৮ বিশ্বকাপ। ইউরোপের গতির কাছে লাতিন ফুটবলের অসহায়ত্ব দেখে ফুটবল বিশ্ব। রুশ বিপ্লবও অনেকদিন মনে রাখবেন ফুটবলপ্রেমীরা।
ক্রোয়েশিয়ার হাত ধরে আসে ১৩তম ফাইনালিস্ট। আগের ২০টি আসরে ঘুরেফিরে ১২টি দেশের দখলে থাকে শিরোপা। অথচ বিশ্বকাপ শুরুর আগে কে ভেবেছিল যে ক্রোয়েশিয়া এবার ফাইনালে উঠবে! তাই রাশিয়া বিশ্বকাপের সঙ্গে আনপ্রেডিকটেবল তকমাটা বেশ যায়। এবার সেটপিস থেকে আসে রেকর্ডসংখ্যক গোল। এদিক থেকে সেটপিসের বিশ্বকাপ বললেও ভুল হবে না।
অঘটনের বিশ্বকাপ
এবার পূর্বানুমান করে ম্যাচের ফলাফল বলার উপায় ছিল না। গ্রুপ পর্বে যেমন মরক্কোর বিপক্ষে হারের কিনার থেকে বেঁচে যায় স্পেন। পর্তুগালকে কাঁপিয়ে দেয় ইরান। বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে রুখে দেয় আইসল্যান্ড। সবচেয়ে বড় আপসেটের শিকার হয় গতবারের শিরোপাধারী জার্মানি। গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়ার লজ্জায় ডোবে চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়ে প্রথম অঘটনের জন্ম দেয় মেক্সিকো। আর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে একরাশ হতাশা সঙ্গী করে দেশে ফেরে কোচ জোয়াকিম লোর শিষ্যরা। জার্মানির হাত ধরে শুরু নকআউট পর্বে অঘটনের শিকার হয় ২০১০ আসরের চ্যাম্পিয়ন স্পেন। স্বাগতিক রাশিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে হেরে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়েন রামোস-ইনিয়েস্তারা। অঘটনের হাত থেকে বেঁচে যায় বেলজিয়াম। জাপানের বিপক্ষে ২ গোলে পিছিয়ে পড়েও দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে অতিরিক্ত সময়ের গোলে ৩-২ ব্যবধানে জয় পায় তারা। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে এশিয়ান পরাশক্তিরা।
লাতিন ফুটবলের অসহায়ত্ব
বিশ্বকাপের গত ২০ আসরে ৯ বার শিরোপা ভাগাভাগি করে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে। ফুটবলীয় ঐতিহ্যে তিন লাতিন পরাশক্তি এবার সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নেয়। তাতে রঙ হারায় রাশিয়া বিশ্বকাপ। ইউরোপের গতির কাছে পেরে ওঠেনি তারা। দ্বিতীয় রাউন্ডের বাধা পেরোলেও কোয়ার্টার ফাইনালে আটকে যায় ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। নেইমারের ব্রাজিলকে ২-১ গোলে হারিয়ে ৩২ বছর পর সেমিফাইনালের টিকিট কাটে বেলজিয়াম। ২-০ গোলের জয়ে সুয়ারেজ-কাভানির উরুগুয়েকে বিদায় করে ফ্রান্স। ব্রাজিল তারকা নেইমার এবার হাস্যরসের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। প্রতিপক্ষের ফাউলে অতিরঞ্জিত প্রতিক্রিয়া দেখানোর কারণে অনেক ফুটবলবোদ্ধা তার সমালোচনা করেন। এ তালিকায় আছেন দিয়েগো ম্যারাডোনা থেকে শুরু করে জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউস।
রুশ বিপ্লব
৩২ দলের মধ্যে র‌্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে তলানিতে থেকে বিশ্বকাপ মিশনে নামে আয়োজক দেশ রাশিয়া। কিন্তু পারফরম্যান্সে রুশ বিপ্লবই দেখে ফুটবল বিশ্ব। ফাইনালের মঞ্চে ক্রোয়েশিয়ার জায়গায় রাশিয়াও থাকতে পারতো। দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পেনকে বিদায় করার পর কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে হার দেখে স্বাগতিকরা। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রাখে ক্রোয়াটরা।
সেটপিসের বিশ্বকাপ
কর্নার, ফ্রি-কিক, পেনাল্টি অর্থাৎ সেটপিস থেকে এবার ভূরি ভূরি গোল দেখা যায়। তাতে লেখা হয় নতুন রেকর্ড। সেমিফাইনাল পর্যন্ত ৬২ ম্যাচে ৬৮ গোল আসে সেটপিস থেকে। শতাংশের হিসেবে ৪২%। কোয়ার্টার ফাইনালে ১১ গোলের ৫টি ও সেমিফাইনালে ৪ গোলের ২টি আসে সেটপিস থেকে। প্রতিযোগিতায় ১৯৯৮ বিশ্বকাপে হওয়া ৬২টি সেটপিস গোলের রেকর্ড ছাড়িয়ে এবারের আসর। এবার পেনাল্টির নতুন রেকর্ড গড়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ। ২৮টি স্পট কিকের ২১টি গোলে রূপ নেয়। বিশ্বকাপে আগের সর্বোচ্চ ১৮টি পেনাল্টির রেকর্ড সৃষ্টি হয় ১৯৯০ বিশ্বকাপে। পরে ১৯৯৮ ও ২০০২ আসরে সমান সংখ্যক পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। অনেক বোদ্ধা-বিশ্লেষক মনে করেন এবার এতো বেশি পেনাল্টির পেছনে প্রভাব রাখে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)। বিশ্বকাপে এবারই প্রথম এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। গ্রুপ পর্বেই আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। ইরানের বিপক্ষে আসরের ১৯তম স্পট কিক নেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ওই ম্যাচেই ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তা পেনাল্টি পায় ইরান। ম্যাচটি ১-১ সমতায় শেষ হয়। পর্তুগাল-ইরান ম্যাচ পর্যন্ত প্রথম ৩৫ ম্যাচে সাতটি পেনাল্টি উপহার দেয় ভিএআর।
আত্মঘাতী গোলের রেকর্ড
বিশ্বকাপের এবারের আসরে রেকর্ডসংখ্যক আত্মঘাতী গোল দেখেন দর্শকরা। ফাইনালের আগ পর্যন্ত আত্মঘাতী গোল ১১টি, যা আগের রেকর্ডের প্রায় দ্বিগুণ। ১৯৯৮ আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬টি আত্মঘাতী গোল হয়। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে পাঁচটি। রাশিয়া বিশ্বকাপে ১০ দলের ১১ জন ভিন্ন খেলোয়াড় নিজেদের জালে বল পাঠান। শুধুমাত্র স্বাগতিক রাশিয়ার ২ জন খেলোয়াড় আত্মঘাতী গোল করেন। একমাত্র গোলরক্ষক হিসেবে আত্মঘাতী গোলের তালিকায় নাম লেখান সুইজারল্যান্ডের ইয়ান সোমার। ১১তম আত্মঘাতী গোলটি করেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফার্নান্দিনহো (বেলজিয়ামের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে)।
এক রাতে দুই মহাতারকার কান্না

শেষ ষোলো রাউন্ডে এক রাতেই সময়ের দুই সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অশ্রুসিক্ত বিদায় দেখে দর্শকরা। গত ১০ বছর ধরে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর এই দুইজনের দখলে (পাঁচবার করে)। বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল মেসি ও রোনালদোর। বয়স আর ফর্ম বিবেচনায় এটাই ছিল তাদের ‘শেষ সুযোগ’। সাত গোলের থ্রিলারে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৪-৩ গোলে হার দেখে মেসির আর্জেন্টিনা। রোনালদোর পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারায় উরুগুয়ে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর