× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিশ্বকাপ জিততে কপালও লাগে!

ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০১৯

স্পোর্টস ডেস্ক
১৭ জুলাই ২০১৮, মঙ্গলবার

ইতিহাস-ঐতিহ্যে এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। লড়াকু মনোভাবে শিরোপা জয়ের জানান দেয় প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা ক্রোয়েশিয়া। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে লুকা মদরিচদের পারফরম্যান্স ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করে নেয়। কিন্তু বল দখল ও আক্রমণে দুর্দান্ত লড়েও কেন হার দেখলো ক্রোয়েশিয়া? ভাগ্য পক্ষে ছিল না ক্রোয়াটদের। রোববার রাতের ফাইনালে খেললো ক্রোয়েশিয়া আর বাজিমাত করলো ফ্রান্স। অনেক ফুটবলবোদ্ধার মতে প্রথমার্ধে রেফারির বিতর্কিত দুইটি সিদ্ধান্ত ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। ৪-২ গোলের জয় পায় ফ্রান্স। যার দুইটি আসে আত্মঘাতী গোল ও পেনাল্টি থেকে।
এ দুই গোল নিয়েই বিতর্ক। বিশ্বকাপ ফাইনাল ইতিহাসে এই প্রথম আত্মঘাতী গোল দেখেন দর্শকরা। ম্যাচের ১৮ মিনিটে মারিও মানজুকিচের করা আত্মঘাতী গোলটির উৎস ফ্রি-কিক নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। রেফারি ফাউল না ধরলেও পারতেন বলে মত দেন ফুটবলবোদ্ধারা। আত্মঘাতী গোলের ১০ মিনিট পরই ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান ইভান পেরিসিচ। ৩৮ মিনিটে ভাগ্যের ছোঁয়ায় আবারো এগিয়ে যায় ফ্রান্স। প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজাননি আর্জেন্টাইন রেফারি নেস্তর পিতানা। ডি-বক্সে অনিচ্ছাকৃতভাবে পেরিসিচের হাতে বল লাগে। ফ্রান্সের খেলোয়াড়রা হ্যান্ডবলের দাবি তোলেন। ভিএআর (ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি) প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে পেনাল্টির নির্দেশ দেন পিতানা। স্পট কিক থেকে বল জালে পাঠান ফ্রি-কিকে আত্মঘাতী গোল আদায় করা আন্তোইন গ্রিজম্যান। ফাইনাল শেষে রেফারির দুই সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন অ্যালান শিয়েরার, ইয়ুর্গেন ক্লিন্সম্যান, রিও ফার্ডিন্যান্ডের মতো সাবেক তারকারা।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক শিয়েরার বলেন, ‘এমন হাস্যকর সিদ্ধান্তে ফাইনালের নিষ্পত্তি হতে পারে না। দারুণ এক টুর্নামেন্টের শেষটায় এমনটি অপ্রত্যাশিত। পুরো ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া ছিল দুর্দান্ত। ফাইনালে তারা হারলো এমন এক ফ্রি-কিকের জন্য যেটি ফ্রি-কিক ছিল না এবং এমন এক পেনাল্টির জন্য যেটা পেনাল্টি ছিল না। এটা লজ্জার।’ ভিডিও রিপ্লেতে দেখা যায়, ক্রোয়াট মিডফিল্ডার মার্সেলো ব্রজোভিচ ফরাসি তারকা আন্তোইন গ্রিজম্যানকে ফাউল করেননি। এ নিয়ে শিয়েরার বলেন, ‘এটা ডাইভ। গ্রিজম্যান চাইছিল ব্রজোভিচ তাকে ফাউল করুক। কিন্তু ব্রজোভিচ তা করেনি।’ সাবেক ইংলিশ ডিফেন্ডার রিও ফার্ডিন্যান্ড বলেন, ‘দুইটি বাজে সিদ্ধান্তই খেলাটা বদলে দেয়। এটাকে ১০০% পেনাল্টি বলতে পারবে না কেউই। এটা তার (পেরিসিচ) ইচ্ছাকৃত হ্যান্ডবল ছিল না। আর রেফারি অনেক সময় নিয়েছেন সিদ্ধান্ত নিতে। এর মানে রেফারি নিজেও নিশ্চিত ছিলেন না।’ জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ী তারকা ক্লিন্সম্যান বলেন, ‘নিশ্চিত না হলে আপনি পেনাল্টি দিতে পারেন না। এটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।’
ম্যাচ শেষে ক্রোয়েশিয়ান কোচ জ্লাতকো দালিচও রেফারির সিদ্ধান্তকে কাঠগড়ায় তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো খেলেছি। কিন্তু পেনাল্টি ম্যাচের গতিপথ বদলে দেয়। পেনাল্টি নিয়ে আমি একটি কথাই বলতে পারি, বিশ্বকাপের ফাইনালে আপনি এভাবে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না।’ বল দখল, পাসিং ফুটবল, আক্রমণ সবদিক থেকেই ফ্রান্সের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে ৬৬% বল থাকে মদরিচ-রাকিটিচদের দখলে। কিন্তু ফ্রান্সের সমন্বিত আক্রমণ ছিল দারুণ সফল। যতবার তারা সুযোগ পেয়েছে তার সদ্ব্যবহার করেছে। এটাও ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়। গ্রিজম্যান, এমবাপ্পে, পগবা এই ত্রিফলা গোল আদায় করে নেন। বিপরীতে পেরিসিচ-মানজুকিচদের বেশিরভাগ শট ছিল লক্ষ্যভ্রষ্ট। ফ্রান্সের ৭ শটের ৬টিই ছিল পোস্টে। ক্রোয়েশিয়া ১৪টি শট নিলেও মাত্র চারটি থাকে অন-টার্গেটে।
দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রান্সের দুই গোলের নেপথ্যে ভাগ্য ছিল না। ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগের দুর্বলতা কাজে লাগায় ফ্রান্স। যেখানে ক্রোয়াটদের ঘনঘন আক্রমণের মুখে বড় কোনো ভুল করেনি ফ্রান্সের ডিফেন্স। ৫৯ ও ৬৫ মিনিটে অরক্ষিত পগবার নিখুঁত ফিনিশিং ও ২৫ গজ দূর থেকে এমবাপ্পের দুরন্ত স্কিলে ৪-১ ব্যবধানে পিছিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় মদরিচের দল। ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক ও অধিনায়ক হুগো লরিসের ভুলে ৬৯ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করেন মানজুকিচ। গোলমুখের সামনে মানজুকিচের সঙ্গে বল কাটাতে গিয়ে ব্যর্থ হন লরিস। ম্যাচে ফিরতে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেছে ক্রোয়াটরা। কিন্তু ব্যবধান আর কমেনি। অদম্য মানসিকতা আর লড়াকু পারফরম্যান্স দেখিয়ে মাথা উঁচু করেই মাঠ ছাড়ে ক্রোয়েশিয়া। এবারের আসরে গ্যালারিতে উপস্থিত থেকে ফুটবলপ্রেমীদের নজর কাড়েন ক্রোয়েশিয়ান প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা গ্রাবার কিতারোভিচ। বৃষ্টির মধ্যে পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে খেলোয়াড়দের জড়িয়ে ধরে ফুটবলের প্রতি আবারো নিজের ভালোবাসা জানান তিনি। কোনো কোনো হার অগৌরবের নয়, কোনো কোনো পরাজয় লজ্জার নয়। তারই বড় উদাহরণ হয়ে থাকবে ক্রোয়েশিয়া।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর