× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভারতের সংসদে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ

ভারত

কলকাতা প্রতিনিধি
(৫ বছর আগে) জুলাই ২১, ২০১৮, শনিবার, ১২:৪০ অপরাহ্ন

ভারতের সংসদে আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব শুক্রবার রাতে ধ্বনিভোটে খারিজ হয়ে গিয়েছে। প্রত্যাশিতভাবে জয় পেয়েছে মোদী সরকার। ১২ ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর ভারতীয় সময় রাত ১১টা থেকে শুরু হয়েছিল ভোটাভুটি প্রক্রিয়া। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে পড়েছে ১২৬টি ভোট এবং বিপক্ষে পড়েছে ৩২৫টি ভোট। মোট ৪৫১ জন ভোট দিয়েছেন। শিবসেনা ও বিজেডি ভোটাভুটিতে অংশগ্রহণ করেনি। পরাজয় হলেও এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীরা সংসদে মোদী সরকারের কাজের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন। দেশের সামনে তুলে ধরেছেন মোদী সরকারের চার বছরের ‘অপশাসন’-এর তালিকা।
সংখ্যায় হারানো মুশকিল জেনেও তেলেগু দেশম দলের পাশাপাশি কংগ্রেস এবং সিপিআইএম অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল। গত চার বছরে এবারই প্রথম স্পীকার সুমিত্রা মহাজন তেলেগু দেশমের অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহন করে শুক্রবার আলোচনা ও ভোটাভুটির দিন ধার্য করেছিলেন। বিজেপিও এই আলোচনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রমাণ করতে চেযেছে যে, গত চার বছরে সরকার অনেক কাজ করলেও বিরোধীরা রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে কাদা ছুড়ছে। অনাস্থা প্রস্তাবের উপর সারাদিন বিতর্কের পর রাতে জবাবি ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধীদের ‘নেতিবাচক’ রাজনীতিকে তাঁর আক্রমণের নিশানা করেছিলেন। তিনি তাঁর ভাষণে বিজেপির সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে শেষ কথা বলবে জনতা জনার্দন। কিন্তু বিরোধীরা তাঁদের উপর বিশ্বাস হারিয়েছেন। তাই লম্বা চওড়া দাবি করছেন। এদিন অধিবেশনের শুরু থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও পাল্টা আক্রমণে সংসদ সরব ছিল। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী তার ভাষনে মোদী সরকারের সমালোচন করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, কোথায় ১৫ লক্ষ টাকা ? প্রত্যেক নাগরিকের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এটা প্রথম ধাপ্পা। দেশের দু’কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয় হয়েছিল। সেই কর্মসংস্থানের কী হল ? বাস্তবে দেশের চার লক্ষ মানুষের চাকরি হয়েছে। কখনও এরা(বিজেপি) বলেন, পকোড়া বানাও, পরে বলেন, ব্যবসা কর, দোকান খোলো। এটা দ্বিতীয় ধাপ্পা। এই ভাবে একে একে বিমুদ্রাকরণ, দুর্নীতি, রাফায়ে জেট ক্রয় ও ডোকালাম ইত্যাদি নানা ইস্যুতে মোদীকে চেপে ধরেছিলেন রাহুল। তবে রাহুল গান্ধরি বক্তব্যকে হজম করতে না পেরে বিজেপি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সংসদে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব পেশ করতে চলেছে । বিজেপি নেতা তথা সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, অধিবেশনে ভুল ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য রাখার জন্য রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনবেন বিজেপি সাংসদরা।





উপনির্বাচনে হারের ফলে লোকসভায় বিজেপির সাংসদ ২০১৪-র তুলনায় কমে (স্পিকারকে ধরে) ২৭৪-এ নেমে এসেছে। বিজেপির দাবি, তাতেও গরিষ্ঠতা প্রমাণে অসুবিধা হবে না। কারণ জগন্মোহনের দলের ৫ সাংসদ ইস্তফা দেওয়ায় গরিষ্ঠতা প্রমাণের ‘জাদুসংখ্যা’ তাতে নেমে এসেছে ২৬৮-তে। বিরোধীরা যার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারবে না।
বুধবার বিরোধীদের শক্তি নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সনিয়া গাঁধী প্রশ্ন ছুড়েছিলেন, ‘‘কে বলেছে আমাদের পক্ষে সংখ্যা নেই?’’ বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গে সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অনন্ত কুমার বলেন, ‘‘সনিয়াজি অঙ্কে কাঁচা। ১৯৯৬ সালেও কংগ্রেস একইরকম গণনা করেছিলেন, আর তার পর কী হয়েছিল, তা সবাই জানেন। এনডিএ শরিকরা প্রত্যেকেই অনাস্থার বিরুদ্ধে ভোট দেবেন।’’


২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে শিবসেনা একাই লড়বে বলে জানিয়েছিলেন, দলের প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তবে এনডিএ থেকে সমর্থন সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেনি তারা। মুম্বইয়ে পুরভোটে বিজেপি ও শিবসেনা আলাদাভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিজেপির তরফে শিবসেনার প্রার্থীকেই মেয়র পদ মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়।

শুক্রবার অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে সরকার পড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। ৫৩৫ সদস্যের লোকসভায় ৩১৩ জন সদস্যই এনডিএ-র শরিক। এর মধ্যে বিজেপির দখলেই রয়েছে ২৭৪টি আসন, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ম্যাজিক ফিগার ২৬৮-র তুলনায় অনেকটাই বেশি।

আগামিকাল অর্থাৎ ২০ জুলাই মোদী সরকারের চার বছরের ‘অপশাসন’-এর তালিকা দেশের সামনে তুলে ধরতে চাইবেন বিরোধীরা। অনাস্থা বিতর্কে যাবতীয় আক্রমণের জবাব মোদীই দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই সরাসরি বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করার সুযোগ বিরোধীরা ছেড়ে দেবেন না বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। বিরোধীদের আশা, শিবসেনা তাঁদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবেই সমর্থন জানাবেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য বিজেপির পাশে শিবসেনার থাকারই ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর