মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের মৃত্যুতে তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে বাস মালিকদের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) ৮ই অক্টোবর শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এদিন ধার্য করেন। আদালতে বাস মালিকদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। বাদী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সারা হোসেন ও রমজান আলী শিকদার। এই মামলায় গত বছরের ৩রা ডিসেম্বর বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ক্ষতিপূরণের বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে তারেক মাসুদের পরিবারকে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয় সংশ্লিষ্টদের। পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে বাস মালিকপক্ষ, যা গতকাল শুনানির জন্য ওঠে।
২০১১ সালের ১৩ই আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মনির।
তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসটির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গাগামী একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরসহ মাইক্রোবাসের পাঁচ আরোহী নিহত হন। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ঘিওর থানায় একটি মামলা করে। এই মামলায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিচারিক আদালতের রায়ে বাসের চালক জমির হোসেনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয়। ২০১২ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জ জেলা জজ আদালতে ১৯৮৩ সালের মোটরযান অর্ডিন্যান্সের ১২৮ ধারায় বাস মালিক, চালক এবং ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। পরবর্তীতে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে মামলা দুটি হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন বাদীরা। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৩রা অক্টোবর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৪ সালের ২৯শে অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলা ও মোটর ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে করা মামলা দুটি হাইকোর্টে বদলির আবেদন মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট। মিশুক মনিরের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ চেয়ে তাঁর পরিবারের করা মামলাটি হাইকোর্টে শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।