× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রাজশাহীতে ক্রমশ ঘোলাটে হচ্ছে পরিবেশ

প্রথম পাতা

প্রতীক ওমর, রাজশাহী থেকে
২৩ জুলাই ২০১৮, সোমবার

যতই দিন যাচ্ছে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে ততই শঙ্কা বাড়ছে। খুলনা গাজীপুরের অবিশ্বাস রাজশাহীর সাধারণ মানুষের মধ্যে দৃঢ় হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রচারণার শুরু থেকেই প্রশাসন এবং সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন। ইতিমধ্যেই  বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে এমন ২১টি অভিযোগ নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন বরাবরই বলে আসছে অভিযোগগুলো সুনির্দিষ্ট নয়।

বিএনপির অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাজশাহীর কয়েকজন এমপি নৌকার পক্ষে সরাসরি ভোট চেয়েছেন। বৃস্পতিবার এক সমাবেশ থেকে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা এবং নাটোর-২ আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। এমপিদের এমন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিতে শনিবার বিকালে খোদ বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে যান।
তার সঙ্গে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুসহ আরো কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। লিখিত অভিযোগটি দেন বুলবুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু।

শনিবার এই অভিযোগে মোট আটটি বিষয় ইসিকে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে তিন এমপির নির্বাচনী সমাবেশ করার বিষয়টি। অন্য অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি। এ ছাড়া একের পর এক অভিযোগ করেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ইসির বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।

এদিকে একের পর এক অভিযোগ দায়েরের পরও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করছে বিএনপি। গত ১৭ই জুলাই বিএনপির পথ সভায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় শনিবার রাতে রাজশাহী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে মহানগর পুলিশ। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার সংবাদ সম্মেলন করে ওই নেতাকে আটকের বিষয়টি জানিয়েছেন। এ সময় মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন মোবাইলে কথোপকথনের একটি রেকর্ডের আলোকে তাকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। এর বাইরে তিনি আর কোনো কথার উত্তর সাংবাদিকদের দেননি।

এ ছাড়াও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নিয়মিত ভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপির। যদিও নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়েছিল নির্বাচন চলাকালীন সময়ে নতুন করে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা যাবে না। ইসির এই ঘোষণা কেবল ঘোষণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। বিএনপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে আরো বলা হচ্ছে কোনো মামলা বা পরোয়ানা ছাড়াই এসব নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।  

বিএনপির অভিযোগ দাখিলের সময় সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম তার দপ্তরে ছিলেন না। তাই বিএনপি নেতারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিয়ার রহমানের কাছে অভিযোগপত্রটি হস্তান্তর করেন। এ সময় তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কিছু সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা হয়। বিএনপির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা  বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত পুলিশ তাদের অধীনে থাকলেও যদি কোনো আগের মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে এ ব্যাপারে ইসির কিছু করণীয় নেই। যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে থানায় আগে থেকে মামলা আছে বলে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন। তাই এ ব্যাপারেও ইসির কিছু করণীয় নেই। তিনি বলেন, বিএনপির সব অভিযোগই তদন্ত করা হয়। বেশির ভাগ সময়ই কোনো সত্যতা পাওয়া যায় না।  

এদিকে বিশ দলের প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, খুলনা গাজীপুরের নির্বাচন দেশের মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। সরকারদলীয় নেতাকর্মীরাই সেখানে ভোট করেছে। ওই দুই সিটির অবিশ্বাসের দানা রাজশাহীর সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও দৃঢ় হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ইসির প্রতি কখনোই আস্থা হারাতে চাই না। আমরা চাই, তারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুন্দর একটা নির্বাচন উপহার দিক। জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটুক। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে তার দায় ইসিকেই নিতে হবে।

নৌকার প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন কৌশলে বিএনপির অভিযোগগুলো এড়িয়ে যাচ্ছেন। তিনি কারো কোনো কথায় কান না দিয়ে আপন গতিতে প্রচারণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্বাচনী কার্যক্রমে বাধা প্রদান সম্পর্কে বলেন, আওয়ামী লীগ কর্মীরা কোথাও তাদের প্রচারণায় বাধা দেয়নি। তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করে বলেন, তারাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। তার মতে পুলিশ প্রশাসনও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর