× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অন্যমনস্ক ছিলেন রবিউল সাত দফা দাবি শিক্ষার্থীদের

বাংলারজমিন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
১০ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার

শাটল ট্রেনে দুটি পা কেটে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পেছনে রবিউলের অন্যমনস্কতাকে দায়ী করছেন পুলিশ। তবে পা হারানো রবিউলের চাকরিসহ নিরাপদ যোগাযোগের ক্ষেত্রে সাত দফা দাবি তুলে মানববন্ধন করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, রবিউল ক্যামপাসে এসেছিল দুই পায়ে দাঁড়াতে, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে। কিন্তু তার পা-ই কাটা পড়ল। ট্রেনে শুধু তার পা কাটা পড়েনি, পড়েছে একটি পরিবারের স্বপ্নও। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে রবিউলের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিতে হবে। তার চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে। ৯ই আগস্ট, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নগরীর ষোলশহর রেল স্টেশনে এই মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন ব্যবস্থার সংকট নিয়ে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের দাবি কখনোই কানে নেয়নি। যদি তারা পরিবহন সংকটের বিষয়টি সমাধান করতো তবে, রবিউলের এমন অবস্থা হতো না। বক্তারা প্রশাসনের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রশাসন কি উদরপূর্তির জন্যই প্রতিবছর বিশাল অঙ্কের বাজেট পাস করে? হলের খাবারের ন্যূনতম কোনো মান নেই, রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। এসবসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমস্যা সমাধান করতে হবে। বক্তারা শাটলের বগি বৃদ্ধি, শাটলের বগি সংস্কার, রেললাইন সংস্কার, ষোলো শহর থেকে ক্যাম্পাস পর্যন্ত ডাবললাইন চালু, প্রত্যেক স্টেশনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জোরদার ও জনবল নিয়োগ, শাটলে বহিরাগতদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ, রবিউলের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ও পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত বাস সার্ভিস চালুসহ মোট সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। একই দাবিতে চবি ভিসিকে স্মারকলিপিও দেন শিক্ষার্থীরা। চবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পালি বিভাগের শুভ মারমা, কিরণ মারমা, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ইমতিয়াজ ইমতু, ফিন্যান্স বিভাগের প্রতীক রায় ও আহত রবিউলের বন্ধু, সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আলমগীর। এদিকে শাটল ট্রেনে পা কাটার জন্য রবিউলের অন্যমনস্কতাকে দায়ি করছেন নগরীর খুলশী থানার এসআই হাশেম। তিনি বলেন, বুধবার সকাল ৮টার দিকে ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে রবিউলের দুটি পা। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, যে শাটল ট্রেনটিতে রবিউল উঠতে চেয়েছিল সেটি থেকে পড়ে যাওয়ার পর পাশের লাইনে আসা ট্রেনটি হর্ন বাজালেও সেদিকে খেয়ালই করেনি রবিউল। প্রায় অন্যমনস্ক থাকায় ওই শাটল ট্রেনে কাটা পড়ে তার পা দুটি।
রবিউল চবির সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র সে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৮নং ওয়ার্ডের নিউ সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। দুর্ঘটনা সম্পর্কে ষোলশহর স্টেশন মাস্টার এসএম শাহাবউদ্দিন বলেন, সকাল আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেন বারবার বাঁশি বাজালেও ওই শিক্ষার্থী রেললাইন থেকে সরেননি। এতে তার দুই পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেয়া হয়। প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, প্লাটফর্মে ভিড় থাকার কারণে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে নিচে রেললাইনে পড়ে যান রবিউল। তার কানে হেডফোন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার সময় তিনি কারো সঙ্গে কথা বলছিলেন। যার কারণে ট্রেন আসার আওয়াজ শুনতে পাননি রবিউল। রবিউলের বন্ধু আলমগীর বলেন, সামনে ১২ তারিখ আমাদের মাস্টার্সের পরীক্ষা। আমরা যখন চেয়ার টেবিলে পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত রবিউল তখন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। তার ফরম ছাড়া হয়নি। সেজন্য সে মানসিক যন্ত্রণার মধ্যেও ছিল। গতকালও বিভাগের চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল সে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মিজানুর রহমান বলেন, রবিউলের হাঁটুর নিচে থেকে পা দুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় আর জোড়া দেওয়া সম্ভব নয়। রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাকে অনেক রক্ত দিতে হয়েছে। মাথায় কিছুটা আঘাত পেলেও তা গুরুতর নয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর