সেপ্টেম্বরে দুবাইয়ে এশিয়া কাপে সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। এমনটা অনেকটাই নিশ্চিত। মূলত ইনজুরির কারণেই বলি হচ্ছে সাকিবের ‘এশিয়া কাপ’। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন আজ হোক বা কাল তার আঙুলে অস্ত্রোপচার লাগবে। তবে ইনজেকশন দিয়ে তিনি খেলতে পারবেন। এখন যেভাবে খেলছেন। তবে তা ক্ষণস্থায়ী সমাধান। যে কোনো সময় তার ইনজুরি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
যেমনি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাতে। লডারহিল স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তাকে ইনজেকশন নিয়ে মাঠে নামতে হয়েছিল। তবে অপারেশনের সিদ্ধান্ত চিকিৎসকরা ছেড়ে দিয়েছিলেন সাকিবের ওপর। গতকাল দেশে ফিরে জানালেন যত দ্রুত সম্ভব তিনি অপারেশন করাতে চান। আর সেটি এশিয়া কাপের আগেই। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক গতকাল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ফিজিও ভালো বলতে পারবে হাতের অবস্থা কী! এটা তো আমরা সবাই জানি এখন যে সার্জারি করতে হবে। ওটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে কোথায় করলে ভালো হয়, কবে করলে ভালো হয়। তবে আমি মনে করি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করে ফেলা ভালো। খুব সম্ভবত এশিয়া কাপের আগেই অপারেশন হবে।’
বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবারের এশিয়া কাপ। কারণ আগামী বছর ইংল্যান্ডের মাঠে গড়াবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তার আগে শীর্ষ এশিয়ার দলগুলোর লড়াই বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সেলই বলা যেতে পারে। সূচি অনুসারে আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে এশিয়া কাপের আসর বসার কথা। যদিও গুঞ্জন রয়েছে ভারতের দাবিতে এ আসরের সূচি পরিবর্তন হতে পারে। তবে যাই হোক প্রস্তুত থাকতে হবে টাইগারদের। বড় বিষয় সাকিবকে ছাড়া এশিয়া কাপের বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে বলেই মনে করেন ক্রিকেট বোদ্ধা ও ভক্তরা। তাই প্রশ্ন উঠেছে কেন এশিয়া কাপের আগেই অস্ত্রোপচার করাবেন সাকিব। তবে নিজের ব্যাখ্যাতে বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘পুরো ফিট না হয়ে খেলা উচিত তা বলেই মনে করি। কারণ চাই না যে ফুল ফিট না থেকে খেলতে। কাজেই সেভাবে যদি চিন্তা করি এশিয়া কাপের আগে হবে এটাই নরমাল।’
সাকিব আল হাসান পুরো ফিট থাকবেন এটি অবশ্য সবারই চাওয়া। কারণ এশিয়া কাপের পরই টাইগারদের সামনে রয়েছে আরো বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে এ বছর শেষ ভাগে বাংলাদেশ সফরে আসবে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই দলের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। এরপরই আগামী বছর দল যাবে নিউজিল্যান্ড সফরে। সেখানে দীর্ঘদিন পর ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে সেই সিরিজ সাকিবের জন্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। যদি তার হাতে নেতৃত্ব না থাকে তারপরও তিনি দলের অন্যতম একজন। এছাড়াও আগামী বছর ইংল্যান্ডে রয়েছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সব মিলিয়ে সাকিবের জন্য এশিয়া কাপের পরের চ্যালেঞ্জগুলোই আসল। যে কারণে তিনি চাইছেন নিজেকে বড় চ্যালেঞ্জের আগে পুরো ফিট করে নিতে। তার অস্ত্রোপচারের বিষয়ে বিসিবির চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী বলেছেন, ‘ওর অপারেশন করাতে হবে। নয়তো স্থায়ীভাবে ভালো হবে না। যদি সাকিব ও টিম ম্যানেজমেন্ট চায় তাহলে সেটি করানো উচিত। বিশেষ করে সাকিব চাইলে। কারণ এখন এ আঙুল নিয়ে শতভাগ দিতে পারছে না। বল করতে পারলেও ঠিকভাবে ব্যাট করতে পারছে না।’
অন্যদিকে প্রশ্ন উঠেছে সাকিবকে ছাড়াও এশিয়া কাপ কতটা ভাল করবে তা নিয়ে। কিন্তু সাকিব মনে করেন তাকে ছাড়াই দলের লড়াই করার সামর্থ্য আছে ভালভাবেই। বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের সাফল্য বেশ কাজে দিবে বলেই মনে করে তিনি। সাকিব বলেন, ‘আসলে সবার আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে। বিশেষ করে এরকম একটা ভালো সিরিজের পর আমি বিশ্বাস করি এখান থেকে হয়তো নতুন কিছু করার দিকে চিন্তা করতে পারি। যেটা আমাদের সামনে এশিয়া কাপে অনেক কাজে দেবে।’ তার এমন আত্মবিশ্বাসের কারণও রয়েছে। বিদেশের মাটিতে ৯ বছর পর ওয়ানডে সিরিজ ও ৬ বছর পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে টাইগাররা বেশ আত্মবিশ্বাসী। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে নিজেদের দাপুটে লড়াই নিয়ে সাকিব বলেন, ‘হ্যাঁ সব মিলিয়ে বলতে গেলে এই ট্যুরটা সফল বলতে হবে, তিনটা ট্রফির মধ্যে দুইটা জিতেছি। দেশের বাইরে তো এরকম রেজাল্ট আমরা করি না সাধারণত। খুবই সন্তুষ্ট। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে অবশ্যই খুশি। হয়তো আরো অবদান রাখতে পারলে আরো ভালো হতো। ওভারঅল যে ধরনের পারফরম্যান্স হয়েছে তা নিয়ে খুবই আনন্দিত।’