× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পশুর চামড়ার দাম আরো কমলো

শেষের পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১০ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার

গত ৫ বছর ধরে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম ৫ থেকে ১০ টাকা কমিয়ে মূল্য নির্ধারণ করে আসছে সরকার। এবারের কোরবানির ঈদে পশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার, যা গতবারের চেয়ে ৫ টাকা কম।
গতকাল দাম কমিয়ে পুনঃনির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সচিবালয়ে ট্যানারি মালিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ বছর প্রতি ফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম হবে ঢাকা শহরে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

এছাড়া সারা দেশে প্রতি ফুট খাসির চামড়ার দাম হবে ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং প্রতিফুট বকরির চামড়ার দর নির্ধারিত হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা। এবারের নির্ধারণ করা দর অনুযায়ী, গত বছরের চামড়ার দরের তুলনায় এবার গরুর চামড়ার দর প্রতি ফুটে ৫ টাকা কমেছে। গত বছর প্রতি ফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারিত হয়েছিল সর্বনিম্ন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকা। একইভাবে খাসির চামড়ার দাম গত বছরের চেয়ে প্রতি ফুটে কমেছে ২ টাকা করে।
গত বছর এর দর ছিল ২০ থেকে ২২ টাকা। অন্যদিকে বকরির চামড়াতেও এবার প্রতি ফুটে ২ টাকা করে দাম কমিয়েছে সরকার। গত বছর এই দর ছিল ১৫ থেকে ১৭ টাকা। তবে মহিষের চামড়ার দামের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।

চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেও চামড়ার দাম নির্ধারণ ছাড়াই আলোচনা শেষ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। পরে চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একান্তে আলোচনা করে এবারের দাম ঘোষণা করেন তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজার এবং চলমান বাণিজ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ বছর বাস্তব ভিত্তিক চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চামড়া পাচার রোধ ও উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকার সবধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এ বিষয়ে দেশের প্রচার মাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীগণ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন বলে সরকার আশা করে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে প্রতিবছরই গরু, খাসি ও বকরির চামড়ার দাম কমছে। ২০১৩ সালে ঢাকায় গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ৮৫-৯০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৭৫-৮০ টাকা; খাসির চামড়ার দাম ছিল সারা দেশে প্রতি বর্গফুট ৫০-৫৫ টাকা। ২০১৪ সালে প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ছিল ঢাকার ভেতরে ৭০-৭৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৬০-৬৫ টাকা। এ সময় সারা দেশে খাসির চামড়ার দাম নির্ধারিত ছিল প্রতি বর্গফুট ৩০-৩৫ টাকা। পরের বছর ২০১৫ সালে গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ঢাকার ভেতরে ৫০-৫৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৪০-৪৫ টাকা। এ সময় সারা দেশে খাসির চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ২০-২২ টাকা।

এর পরের বছর ২০১৬ সালে ব্যবসায়ীরা চামড়ার দাম নির্ধারণ করেন। ওই বছর গরুর চামড়ার দাম নির্ধারিত হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ঢাকার ভেতরে ৫০ ঢাকা, ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা। ওই বছর ব্যবসায়ীরা খাসির চামড়ার দাম নির্ধারণ করেন সারা দেশে প্রতি বর্গফুট ২০ টাকা। এক বছরের বিরতিতে ফের চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। ২০১৭ সালে গরুর চামড়ার দাম নির্ধারিত ছিল প্রতি বর্গফুট ঢাকার ভেতরে ৫০-৫৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৪০-৪৫ টাকা; আর খাসির চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ঢাকার ভেতরে ২০-২২ টাকা, ঢাকার বাইরে ১৫-১৭ টাকা।

গত বছরের চেয়ে কোরবানির চামড়ার দাম কমার কারণ সম্পর্কে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, মূলত দুটি কারণে এবার কোরবানির চামড়ার দাম কমানো হয়েছে। প্রথম কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার চাহিদা ব্যাপক হারে কমেছে। দ্বিতীয়ত সাভারে চামড়া শিল্পনগরী স্থাপিত হলেও এখনো তা পরিপূর্ণভাবে কাজ শুরু করতে পারেনি। নানা ধরনের ত্রুটি রয়েছে সেখানে। যে কারণে সেখানে এখনো ঠিকভাবে চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের বন্ধু। সবাই দেশকে ভালোবাসি। আসলেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চামড়ার সেক্টরটি খারাপ পর্যায়ে আছে। তাই ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতেই দর কম করে নির্ধারণ করে দিয়েছি। ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করার অর্থ জিম্মি হওয়া নয়। দেশের এই ব্যাপক উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের অবদান অনস্বীকার্য। এছাড়া এবছর রপ্তানির অন্য খাতে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও চামড়া খাতে প্রবৃদ্ধি ১২ শতাংশ কমেছে।

পরে ট্যানার্স ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, কোনো লক্ষ্য এখনো আমরা নির্ধারণ করিনি। কারণ গত বছরে কেনা চামড়ার ৪০ শতাংশ এখনো মজুত আছে। যার গুণগত মান অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। চামড়া কেনার জন্য ব্যাংক আমাদের যে ঋণ দিয়েছে তাও অনিশ্চিত। কারণ গত বছর পাওয়া ঋণ আমরা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি।
ট্যানার্স এসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে বাংলাদেশ থেকে মোটামুটি ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৪.৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১.৮২ শতাংশ ছাগলের, ২.২৫ শতাংশ মহিষের এবং ১.২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া। এর অর্ধেকের বেশি আসে কোরবানির ঈদের সময়।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর কোরবানি উপলক্ষে সারা দেশে এক কোটি ৫ লাখের মতো গবাদিপশু বিক্রি হয়েছিল। আর এবার দেশের খামারগুলোতে কোরবানিযোগ্য পশু আছে এক কোটি ১৬ লাখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর