× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ডিজিটাল জালিয়াতির বৃহৎ চক্র গ্রেপ্তার

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১০ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার

ডিভাইস ব্যবহার করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে সরকারি চাকরি এমনকি বিসিএস পরীক্ষাতেও জালিয়াতি করতো চক্রটি। নিয়োগ প্রার্থীদের কাছে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র পৌঁছে দিতো। এই ডিভাইস চক্রের প্রধান একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলীপ কুমার বিশ্বাস। গ্রেপ্তারের পর গতকাল সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে  এ তথ্য জানানো হয়।

সিআইডির এএসপি (মিডিয়া) শারমিন জাহান জানান, অলীপ কুমার বিশ্বাসসহ ডিজিটাল জালিয়াত চক্রের নয় সদস্যকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। শারমিন জাহান বলেন, এই চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সরকারি পরীক্ষাসহ বিসিএস পরীক্ষাতেও জালিয়াতি করে আসছে। পাঁচ দিনের এক সাঁড়াশি অভিযানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ডিজিটাল ডিভাইস চক্রের মাস্টার মাইন্ড বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলীপ কুমার বিশ্বাস, বিএডিসির সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, ৩৬তম বিসিএসে নন ক্যাডার পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত ইব্রাহিম এবং ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিতে উত্তীর্ণ আয়ুব আলী বাধনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। এছাড়াও পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নপত্র সরবরাহের অভিযোগে রাজধানীর অগ্রণী স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক গোলাম মোহম্মদ বাবুল, অফিস সহায়ক (পিওন) আনোয়ার হোসেন মজুমদার এবং মো. নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
একই অভিযোগে ধানমন্ডি গভ. বয়েজ স্কুলের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক হোসনে আরা বেগম এবং পিওন হাসমত আলী শিকদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার গ্রেপ্তারের সময় হাসমতের কাছ থেকে ওই দিনের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার কয়েক কপি প্রশ্নপত্র এবং ৬০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। এই ৯ জনসহ এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে ৩৭ জন।

সিআইডি জানায়, বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলীপ কুমার বিশ্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড। কয়েক বছরে সে জালিয়াতির মাধ্যমে তিন কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। ইব্রাহিম, মোস্তফা ও বাধন বিসিএসসহ সকল নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির মূল হোতা। এদের চারজনের প্রায় ১০ কোটি টাকার নগদ অর্থ ও সম্পদের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি। তাদের মধ্যে একদম আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যায় ইব্রাহীমের বিলাসী জীবন। দরিদ্র পরিবারের সন্তান ইব্রাহীম জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৬তম বিসিএসে নন ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে। রাতারাতি হয়েছে বাড়ি-গাড়ি। খুলনার মুজগুন্নী এলাকায় সাড়ে ছয় শতাংশ জমির ওপর চারতলা ভবন নির্মাণ করেছে। নড়াইলে তৈরি করেছে ডুপ্লেক্স বাড়ি। তার ব্যবহৃত গাড়ির ৩৬ লাখ টাকা। গত কয়েক বছরে বিসিএস, বিভিন্ন ব্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে শতাধিক ব্যক্তিকে জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে ইব্রাহীম।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা সিআইডিকে জানিয়েছে, ভর্তি কিংবা নিয়োগ পরীক্ষায় মূলত দুই ভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র আগের রাতে প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। আরেকটি চক্র পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র দ্রুত সমাধান করে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীকে সরবরাহ করে। কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন ফাঁসের পর রাজধানীর আলিয়া মাদরাসা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের দুটি কক্ষে বসে তারা অভিজ্ঞদের দিয়ে সে প্রশ্নপত্র সমাধান করতো।

গত বছরের ১৯শে অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় রাকিবুল হাসান এছামিসহ ২৮ জনকে। ওই চক্রটি প্রেস থেকে সরাসরি প্রশ্ন ফাঁস করতো। এর প্রধান ছিল এছামি। ওই সময়ে ডিভাইস চক্রের প্রধান বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলীপ কুমার বিশ্বাস গণমাধ্যমে নাম প্রকাশের পর গা-ঢাকা দিয়েছিল। এই কয়েক দিনের অভিযানে রাজবাড়ির বালিকান্দির পুষআমলা গ্রামের অলীপ কুমার বিশ্বাসসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত অন্যারা হচ্ছে- গোপালগঞ্জের জালালাবাদের ইব্রাহিম, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ভেলারায়ের আইয়ুব আলী (বাধন), একই জেলা সদরের পাইককান্দির হাসমত আলী শিকদার, সিরাজগঞ্জের দক্ষিণ কলিকাপুরের মোস্তফা কামাল (২৮), চাঁদপুরের হাজিগঞ্জের সিদলা গ্রামের মনোয়ার হোসেন, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান মধ্যপাড়ার নুরুল ইসলাম, রাজবাড়ির বালিকান্দির বাড়াদীর গোলাম মোহাম্মদ আবুল ও বাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের মহিউদ্দিন নগরের হোসনে আরা বেগম। হোসনে আরা বেগম ও গোলাম মোহাম্মদ আবুল দু’জনেই শিক্ষক।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর