× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রতারণা মামলায় সাজা তবুও চাকরিতে বহাল রোকসানা

বাংলারজমিন

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
১১ আগস্ট ২০১৮, শনিবার

রোকসানা খাতুন। পেশায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অফিস সহায়ক। সরকারি চাকরি করেন তিনি সেই সুবাদে এলাকার বেকার যুবকদের টার্গেট করেন। তাদের চাকরি দেবেন মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন পোস্টে। কলেজের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাদের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক। এলাকার যুবকরা সহজেই তার পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে দেয়। লাখ লাখ টাকা এভাবে চাকরি দেয়ার কথা বলে অনেকের নিকট থেকে কৌশলে হাতিয়ে নেন রোকসানা। তার পর অর্থ প্রতারণার মামলা হয়।
সম্প্রতি একটি মামলায় আদালত রায় দিয়েছেন। রায়ে  রোকসানাকে এক বছরের সাজা এবং ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আদালতের সাজায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও হয়েছে।  রোকসানা সাজা এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ান নিয়েও অদৃশ্য ক্ষমতায় চাকরিতে বহাল তবিয়তে আছেন। রোকসানার বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গাড়িদহ। তার স্বামীর নাম সুজাউদ্দৌলা। মামলা সূত্রে জানা যায়, রোকসানা এক সময় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অফিস সহায়ক পদে চাকরি করতেন। বগুড়ায় চাকরি করার সময় থেকেই তিনি বিভিন্ন জনকে হাসপাতালে চাকরি দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এমন প্রতারণা শিকার হয়েছেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বিজরুল গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে নাজমুস সাকিব ওরফে সোহাগ। রোকসানা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে উচ্চপদে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রথমে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। সাকিব পরে রোকসানার সঙ্গে আলোচনা করে ১১ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। রোকসানা ওই টাকাতেই চাকরি দিতে রাজি হয়ে যায় এবং ১১ লাখ টাকা সাকিবের নিকট থেকে বুঝে নেন। রোকসানা টাকা হাতে পাওয়ার পর থেকে সাকিবকে চাকরি দেই-দিচ্ছি করে দুই বছর অতিক্রম করে। এই সময় রোকসানা ২০১৬ সালের ৩রা জানুয়ারি কৌশলে বদলি হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যায়। বগুড়ার ছাড়ার পর তিনি আর সহজে ধরা দেন না। মোবাইলও রিসিভ করে না। পরে সাকিব তার প্রতারণা বুঝতে পেরে টাকা ফেরতের চাপ দিলে রোকসানা এক সময় তাকে সমপরিমাণ টাকার একটি চেক প্রদান করেন। চেকটি ছিল সোনালী ব্যাংক শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ শাখার। সাকিব ওই চেক নিয়ে অনেক দিন ব্যাংকে গিয়ে অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় টাকা তুলতে পারেনি। পরে ২০১৬ সালের ১২ই জুলাই ব্যাংক থেকে চেকটি ডিজঅনার করেন। পরে বগুড়া জেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতে একটি অর্থ প্রতারণার মামলা করেন। চলতি বছরের ৫ই মে যুগ্ম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শওকত আলী মামলাটির রায় দেন। ওই রায়ে রোকসানার এক বছরের জেল এবং ১১ লাখ টাকা ফেরতের আদেশ দেয়া হয়। এদিকে মামলার রায়ের তিন মাস পার হলেও রোকসানাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি। এমনকি তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বহাল তবিয়তে চাকরিও করে যাচ্ছেন।

মামালার বাদী নাজমুস সাকিব ওরফে সোহাগ জানান, রোকসানা বগুড়ার বিভিন্ন জায়গার বেকার যুবকদের থেকে চাকরি দেয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এরপর তিনি বগুড়া ছেড়ে রাজশাহীতে চলে যান। সাকিব আরো বলেন, ওই প্রতারক তার থেকে ১১ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে মামলা করলে আদালত ওই মামলার রায় দিয়েছেন। রায়ে রোকসানার এক বছরের জেল এবং পাওনা টাকা ফেরত দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।

মামলার আইনজীবী আশরাফুন নাহার স্বপ্না জানান, দীর্ঘদিন মামলাটি আদালতে পরিচালিত হওয়ার পরে সাম্প্রতি রায় হয়েছে। তিনি আশা করেন দ্রুত আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের রায় কার্যকর করতে পুলিশ ভূমিকা রাখবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর