নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কঠোরভাবে দমন ও প্রখ্যাত ফটোগ্রাফার শহিদুল আলমকে ‘বেআইনিভাবে গ্রেপ্তারের’ তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিখ্যাত শিক্ষাবিদ ও অধিকারকর্মী নোয়াম চমস্কি, অরুন্ধতী রায়সহ একদল বুদ্ধিজীবী। এক বিবৃতিতে তারা বলেন, তথ্য উপস্থাপন ও সমালোচনা মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনো রাষ্ট্র যদি তার নাগরিককে যা ঘটছে তা বলতে না দেয় এবং এজন্য কঠোর অবস্থান নেয়, তাহলে তা মানুষের অধিকারকে লঙ্ঘন করে। তারা সরকারের সমালোচনা করার দায়ে গ্রেপ্তার শহিদুল আলমের মুক্তির দাবি জানান। বিবৃতিতে অরুন্ধতী রায়, নোয়াম চমস্কি ছাড়াও বিশ্বের আরো কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি স্বাক্ষর করেন। এদের মধ্যে নাওমি ক্লেইন, ইভ এন্সলার ও বিজয় প্রসাদ অন্যতম।
এদিকে, পৃথক এক বিবৃতিতে শহিদুল আলমসহ আটক সকল ছাত্রদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা ৬০ জনেরও অধিক বাংলাদেশি অধিকারকর্মী, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী ও শিল্পীরা। বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেছেন, ইস্ট-ওয়েস্ট, নর্থ-সাউথ, সাউ-ইস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন ছাত্রকে আটক করা হয়েছে।
আটক সাংবাদিক ও ছাত্রদের মুক্তি দাবি করেন তারা। একইসঙ্গে, তারা বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের যথাযথ তদন্ত ও সরকারের নিপীড়ন বন্ধেরও দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপরে পুলিশ ও সরকারপন্থিদের হামলার ছবি তোলায় শহিদুল আলমের ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে সরকারপন্থি ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। রোববার আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নেয়ায় সরকারের সমালোচনা করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিছু মানুষ তার বাসায় প্রবেশ করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী রহনুমা আহমেদ জানিয়েছেন, আমি তখন বাসায় ছিলাম না। তার চিৎকার শুনতে পেয়ে আমি নিচে যাই। সেখানে গিয়ে বাড়ির মালিক ও দারোয়ানের কাছে শুনতে পাই ৩০ থেকে ৩৫ জন মানুষ তাকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে গেছে। তারা সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজও সঙ্গে করে নিয়ে যায়। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে পুলিশ স্বীকার করে নেয় যে শহিদুল আলম তাদের হেফাজতে রয়েছে। তাকে বিতর্কিত ৫৭ ধারায় আটক দেখানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি ৭ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।