বরগুনায় শ্বশুরের সঙ্গে পরকীয়ার ‘অপবাদ’ দেয়ার অভিযোগে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে। আমতলী উপজেলার পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে এ ঘটনার দিন রাতেই আমতলী থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামি শ্বশুর শানু হাওলাদার ও শাশুড়ি আকলিমা বেগম বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।

সূত্রমতে জানা যায়, উপজেলার শানু হাওলাদারের ছেলে মামুনের সঙ্গে তার গত ডিসেম্বরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মামুন তার বাবা-মায়ের কাছে তাকে রেখে ঢাকায় কাঁচামালের ব্যবসা করতে গেলে কিছুদিন পর থেকে তার সঙ্গে শ্বশুরের পরকীয়া আছে বলে অভিযোগ করেন শাশুড়ি। অন্যদিকে এ অভিযোগ বার বার অস্বীকার করে আসছিলেন তিনি। এসব ঘটনার এক পর্যায়ে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। নিহত গৃহবধূর পরিবার ও পুলিশের সন্দেহ শাশুড়ির ‘অপবাদের’ কারণেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
মাস দুয়েক আগে শ্বশুর শানু হাওলাদারের সঙ্গে গৃহবধূর পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ করেন শ^াশুড়ি আকলিমা বেগম। গত শুক্রবার দুপুরে আকলিমা একই বিষয় তুলে তাকে আবার গালিগালাজ করলে তিনি এসব ঘটনার কথা মোবাইলে তার স্বামী মামুনকে জানান। মামুন এ সময় মায়ের সঙ্গে একমত হয়ে তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনেন। পরবর্তীতে ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গত শনিবার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার (১০ আগস্ট) রাতেই লাইজুর মা গোলেনুর বেগম বাদী হয়ে মামুনকে প্রধান আসামি করে ৩ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই শ্বশুর শানু হাওলাদার ও শাশুড়ি আকলিমা বেগমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরের দিন শনিবার পুলিশ গ্রেফতার দু’জনকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
নিহত গৃহবধূর মা গোলেনুর বেগম বলেন, শুক্রবার আমার মেয়ে আমাকে ফোন দিয়ে ওর স্বামী মামুন ও শাশুড়ি আকলিমা অপবাদ দিয়ে গালাগাল করেছে বলে জানায়। আমার মেয়ে শাশুড়ি ও জামাইয়ের অপবাদ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আমতলী থানার এসআই ইমানুল ইসলাম ইমন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আমতলী থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন মিলন বলেন, এ ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা হয়েছে। মামলার আসামি শ্বশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।