× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ক্যাথলিক গির্জায় হাজারো শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৫ বছর আগে) আগস্ট ১৬, ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৫২ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের রোমান ক্যাথলিক গির্জার তিন শতাধিক ধর্মযাজককে যৌন নির্যাতনের জন্য দায়ী করা হয়েছে। তারা দীর্ঘকাল ধরে এক হাজারেরও অধিক শিশুকে যৌন নির্যাতন করেছে। মঙ্গলবার, এক গ্র্যান্ড জুরির প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অভিযুক্ত ধর্মযাজকদের এধরনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে গির্জার কর্মকর্তারা অবগত ছিলেন। কিন্তু তারা নির্যাতনকারী যাজকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। পাশাপাশি এ ঘটনা যাতে বাইরে প্রকাশিত না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

গ্র্যান্ড জুরির দেয়া প্রতিবেদনটি প্রায় ৯০০ পৃষ্ঠার। দীর্ঘ এ প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি নির্যাতনের শিকার শিশুদের সংখ্যা এক হাজারেরও অধিক। দীর্ঘদিন ধরে চাপা থাকার কারণে অসংখ্য প্রমাণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
ধর্মযাজকরা ছোট ছোট ছেলেমেয়ে উভয়কেই ধর্ষণ করেছে। এবং গির্জার কর্মকর্তারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয় নি। কয়েক দশক ধরে প্রধান বিশপ, বিশপ, আর্চবিশপ ও কার্ডিনালরা এ ধরনের অপকর্ম করে গেছে কিন্তু তাদের এ তথ্য গোপন রাখা হয়েছে। ঐতিহাসিক এ প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়। ১৯৪৭ সালের পর থেকে এলেনটাউন, এরি, গ্রিনসবার্গ, হ্যারিসবার্গ, পিটার্সবার্গ ও স্ক্র্যানটনের গির্জাগুলোতে শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলো তদন্ত করেই এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়া ও আলটুনা-জনসটাউন গির্জা দুটির সব ধরনের তথ্য বিনষ্ট করে দেয়া হয়েছে।

এর আগে ক্যাথলিক চার্চে যৌন নির্যাতনের আরো ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু একসঙ্গে এত যৌন নির্যাতনের তথ্য এর আগে কখনো উন্মোচিত হয়নি। গ্র্যান্ড জুরিরা বলেন, আমরা এ ধরনের কথা বিভিন্ন স্থানে শুনতে পাই। কখনো বিশ্বাস করি, কখনো করি না। কিন্তু এখন আমরা জানি, এধরনের অপরাধ সর্বত্রই সংঘটিত হচ্ছে। তারা আরো জানিয়েছেন যে, এ ধরনের অপরাধের প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে তা অনেক আগে সংঘটিত হওয়ায় এখন বিচার করা সহজ নয়। তবে ইতিমধ্যে দুইজন যাজকের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। তারা আরো বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এ ধরনের অপরাধ গির্জাতেই হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে গির্জার কর্মপদ্ধতির পরিবর্তন হয়েছে। এর পরেও হয়তো ভবিষ্যতে গির্জাগুলোতে আরো যৌন নির্যাতন হবে। আমরা আমাদের তদন্ত অব্যাহত রাখবো।

প্রতিবেদনটিতে বেশকিছু ঘটনা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, একজন যাজক এক শিশুকে ধর্ষণ করলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরে ওই শিশুর গর্ভপাত করাতে তিনি সাহায্য করেন। পরে ওই যাজককে আবার গির্জাতেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়। আরেক যাজক স্বীকার করেছেন তিনি ১৫ জন কিশোরীকে ধর্ষণ করেছেন। এর মধ্যে সাত বছরের এক শিশুও ছিল।

পেনসিলভানিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল জোশ শাপিরো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গির্জার বিরুদ্ধে একসঙ্গে এত শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ কখনো আসেনি। দুই বছর ধরে এসব ঘটনা নিয়ে তদন্ত চালানো হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, পেনসিলভানিয়া ও ভ্যাটিকানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পদ্ধতিগতভাবে এসব নির্যাতনের ঘটনা গোপন করেছে। তিনি আরো বলেন, এসব নির্যাতনের ঘটনা খুবই সূক্ষ্ম উপায়ে গোপন করা হয়েছে। গির্জার কর্মকর্তারাও এসব নির্যাতন ও নির্যাতনের ঘটনা গোপন করার রেকর্ডও রেখেছে। তিনি জানিয়েছেন, যেসব এলাকায় নির্যাতনের ঘটনা হয়েছে সেসব এলাকার বিশপের গোপন আর্কাইভ থেকে পাওয়া গেছে এসব ঘটনার নথিপত্র। এগুলোই তদন্তের ভিত্তি তৈরি করেছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর