ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শায়েস্তাগঞ্জের থানা ও পৌর শহরের বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে জাল নোটের আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ করে, পশুরহাটগুলোতে জাল নোটের আতঙ্ক সবচেয়ে বেশি, কারণ পশুরহাটে কেনাবেচাসহ নগদ টাকা লেনদেন সাধারণত সন্ধ্যার পর বেশি হয়ে থাকে। আলো আঁধারে উক্ত জাল নোট শনাক্ত করা খুবই কঠিন কাজ। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার যেন জাল টাকার আতঙ্ক বেশি কাজ করছে। যার কারণে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ ব্যাংক গ্রাহকগণ ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট দেখলেই সন্দেহ প্রকাশ করেন। ব্যবসায়ীদের হাতে প্রতিনিয়ত আসছে জাল টাকার নোট, ঝট ঝামেলা এড়াতে জাল নোট পাওয়া মাত্র তারা তা ছিড়ে ফেলা হচ্ছে বা আগুনে পুড়ে ফেলেন। আর পুলিশের ঝামেলা এড়াতে অনেকেই নীরব ভূমিকা পালন করছেন। রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকে নানামুখি হয়রানী ও বিড়ম্বনাকে পুঁজি করে হুন্ডি ব্যাবসায়ীদের তৎপরতা ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ ও তৎসংলগ্ন শায়েস্তাগঞ্জের অধিকাংশ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। এসব প্রবাসীরা সাংসারিক খরচাদিসহ নানা প্রয়োজনে কষ্টার্জিত অর্থ দেশে প্রেরণ করেন। নিয়মানুসারে প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের অর্থ দেশে পাঠানোর কথা। এতে প্রবাসীদের অর্থের হিসাব রাষ্ট্রের নিকট যেমন সংরক্ষিত থাকে তেমনি উক্ত অর্থ থেকে সরকার রাজস্ব পেয়ে থাকে। সারা দিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনি শেষে উপার্জিত টাকা দেশে পাঠাতে গিয়ে ব্যাংকের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে এবং কিছু দাপ্তরিক বিড়ম্বনায় মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। এই সমস্ত বিড়ম্বনা এড়াতে এবং মূল্যবান সময় অপচয় রোধ করার জন্য সংশ্লিষ্ঠ প্রবাসীরা হুন্ডি মাধ্যমকে অধিকতর সহজ ও ঝামেলা মুক্ত মনে করেন। জাল টাকার ছড়াছড়ি ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা। জাল টাকার কারবারি চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় জাল নোট এর চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে শায়েস্তাগঞ্জসহ বিভিন্ন হাট-বাজার, ব্যাংক-বীমা অফিস সহ ব্যবসায়ীদের নিকট জাল টাকা ছড়িয়ে দিচ্ছে। চক্রটি শতভাগ লাভবান হয়ে সহজ সরল মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। যার ফলে শায়েস্তাগঞ্জ থানার বিভিন্ন স্থানে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে জাল টাকার নোট। পৌর শহরের দোকানপাট ও হাট বাজারগুলোতে ক্রেতারা ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট দিলে বিক্রেতারা টাকা আসল না নকল তা শনাক্ত করতে পারেন না। অনেকেই আবার আসল ও নকল নোট চেনার জন্য স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সহায়তা নিচ্ছেন। খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে পাইকারী বিক্রেতাদের হাতে আসছে জাল টাকা। আইনি জটিলতা এড়াতে জাল টাকা হাতে পাওয়া মাত্রই ব্যবসায়ীরা তা পুড়িয়ে ফেলেন। জাল টাকার নোটগুলো এতটাই সুক্ষ যে প্রাথমিক ভাবে তা আসল-নকল ধরা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।