মণিরামপুরে গরুর খামারি ওমর ফারুখ এবার কোরবানির ঈদে ৬১টি গরু প্রস্তুত করেছেন বিক্রির জন্য। গত বছরও ৫৪টি গরু বিক্রি করেছিলেন। দেশি গরু পালনে বেশ পরিচিতি রয়েছে ওমর ফারুখের। তাঁর খামারে পোষা ষাঁড়গুলো প্রস্তুত করা হয় মূলত: কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য। গরুগুলো বিক্রি করা হয় অনলাইনের মাধ্যমে। এতে সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। এজন্য কয়েকবার পুরস্কারও পেয়েছেন ওমর ফারুখ। উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে ওমর ফারুক।
১৯৯২ সালে এসএসসি পাস করে শেয়ারে কাঠ ও ভূসি মালের ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ব্যবসায় লস হতে থাকে তার। ২০০৩ সালে ছোট ভাই আসাদুল্লাহ ঢাকার কেরানীগঞ্জে থাকার সুবাধে ওমর ফারুখের সঙ্গে পরিচয় ঘটে ‘কিউএ’ গ্রুপ কোম্পানির চেয়ারম্যান কাজী জয়নুল আবেদীনের সঙ্গে। তিনি ওমর ফারুখকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশি গরু পালনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেন। একপর্যায়ে তিনি ফারুখকে তিনি দিনের প্রশিক্ষণ দেন এবং আড়াই লাখ টাকা দেন। বাড়ি ফিরে দেশি গরু পালন করে কোরবানির ঈদে বিক্রি করে ফারুখ অর্ধলাখ টাকা লাভ করেন। দেশি গরু পুষে ধীরে ধীরে বেশ সাফল্য আসে তার। গত বছর কোরবানির ঈদে ৫৪টি গরু বিক্রি করে প্রায় ৪ লাখ টাকা লাভ করেছিলেন তিনি। এবারও ৬১টি গরু প্রস্তুত করেছেন বিক্রির জন্য। গরুগুলো সাধারণত: বিক্রি করেন ‘বিক্রয় ডটকম’ নামের একটি অনলাইনের মাধ্যমে। ঈদের এক দুইদিন আগে গরু বিক্রি শুরু করেন। ঈদের তিন-চারদিন আগে গরুগুলো ঢাকায় নেয়া হয়। ওমর ফারুখের গরু পালনের এ প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘জাজ এগ্রো খাবার’। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খামারে গরুগুলোর ছবিসহ সম্ভাব্য বিক্রি মূল্য নির্ধারণ করে ‘বিক্রয় ডটকম’ নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনলাইনে আপলোড করা হয়। এরপর ক্রেতারা যোগাযোগ করে সবকিছু ঠিকঠাক হলে ক্রেতার ঠিকানায় গরুগুলো পৌঁছায়ে দেয়া হয়। এবারও সাড়া পড়েছে বলে জানা গেছে। অনলাইনে বিক্রির জরিপ করে নিউজল্যান্ড ভিত্তিক একটি সংস্থা ওমর ফারুখকে দুই দু’বার পুরস্কৃত করেছেন।
খামারি ওমর ফারুখ বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই তিনি আমাকে এ কাজের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। আমি ধন্যবাদ জানাই আমার খামারের দায়িত্ব নিয়োজিত কর্মচারীদের। যারা প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করে গরুগুলোকে লালন পালন ও দেখভাল করেছেন। বিশেষ করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের, যারা প্রতিনিয়ত খোঁ খবর নেন। ঈদের আগে ভারতীয়সহ বাইরের গরু না ঢুকলে এবারও লাভ করতে পারবো ইনশাআল্লাহ্। মণিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. আবুজার সিদ্দিকী বলেন, ওমর ফারুখ দেশি গরুর খামারি হিসেবে উপজেলার শ্রেষ্ঠ। তার খামারে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটা তাজা করন করা হয়। ধৈর্য্য ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে যে সাফল্য অর্জন করা যায় তার দৃষ্টান্ত হলো ওমর ফারুখ। আমি তার খামারের সমৃদ্ধি কামনা করি।