× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ঈদ সামনে রেখে অস্থির পিয়াজ, মসলা ও কাঁচামরিচের বাজার

দেশ বিদেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৮ আগস্ট ২০১৮, শনিবার

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে পিয়াজ, কাঁচামরিচ ও গরম মসলাসহ বেশকিছু সবজির দাম। এর মধ্যে গত দুইদিনের ব্যবধানে পিয়াজের প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এছাড়া গরম হয়ে উঠেছে মসলার বাজার। দাম বেড়েছে এলাচ-দারুচিনি, জিরা, লবঙ্গর। ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া এলাচের দাম এখন ২ হাজার টাকা।
তবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, ঈদে মসলার বাজার দর সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। তবে মসলার বাজার যাতে অসহনীয় পর্যায়ে না যায় সেজন্য বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর কাওরানবাজার, হাতিরপুল ও সেগুনবাগিচাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাড়িয়ে দিচ্ছে পণ্যের দাম, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।
আর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভোক্তাসাধারণ। তবে সিন্ডিকেটের বিষয় স্বীকার করতে নারাজ ব্যবসায়ীরা।
বাজারে দেখা গেছে, দাম বেড়েছে পিয়াজ, আদা ও রসুনের। গত দুইদিনের ব্যবধানে আরেক দফা বেড়েছে পিয়াজের দাম। প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আর আমদানিকৃত পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ টাকায়। আর গত সপ্তাহের চেয়ে ১৫-২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আদা ও রসুন। আদার কেজি ১৪০ টাকা এবং রসুনের দাম ১৬০ টাকা।
বর্তমানে বাজারে পর্যাপ্ত পিয়াজ রয়েছে। তার পরও বাড়ছে পিয়াজের দাম। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবেও দাম বাড়ার এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সংস্থাটির হিসেবেই মাত্র এক মাসের ব্যবধানে দেশি পিয়াজের দাম ২৭.৭৮ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানিকৃত পিয়াজে বেড়েছে ১৩.৩৩ শতাংশ।
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দেশি পিয়াজের সরবরাহ কম। এছাড়া ভারতে বৃষ্টির জন্য পিয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ভারতের ব্যবসায়ীরা পিয়াজের রপ্তানিমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব কারণে দেশের বাজারে পিয়াজের দাম বেড়েছে
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদে অন্য সময়ের চেয়ে চাহিদা বাড়ে হলুদ-মরিচ, আদা-রসুন আর গরম মসলার। এই সুযোগটাই নিচ্ছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, দাম বেড়েছে এলাচ-দারুচিনি, জয়ত্রী, জিরা, লবঙ্গ ইত্যাদি গরম মসলার। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া এলাচের দাম এখন ২ হাজার টাকা। গত সপ্তাহে এলাচের পাইকারি দর ছিল ১৫০০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেখানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৫০ টাকা। অর্থাৎ এখন এ মসলাটির কেজি ১৮৫০ টাকা।
টিসিবি হিসাব মতে, ২০১৭ সালের এই সময়ে এলাচের দাম ছিল কেজিপ্রতি ১২০০-১৬০০ টাকা। চলতি বছর সেই দাম বেড়েছে হয়েছে ৪০০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কেজিতে ৫৫০ টাকা বেড়েছে সাদা গোলমরিচের দাম। বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে। আর খুচরা বাজারে দাম ১৫০০-১৬০০ টাকা।
খুচরা বাজারে ভারতীয় জিরার দাম ৪০০ টাকা কেজি। একই জিরা পাইকারি বাজারে ৩১০ টাকা। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে এর দাম ছিল ২৮০ টাকা। খুচরা বাজারে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে টার্কি জিরা। পাইকারি বাজারে এর দাম ৪০০-৪০৫ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় এখানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০-৬৫ টাকা।
মসলা ব্যবসায়ী মো. আলী বলেন, আর দাম বাড়বে না। দাম যা বাড়ার বেড়ে গেছে। এখন ঈদের যে ক’দিন আছে, এর মধ্যে দাম না কমলেও বাড়ার সম্ভাবনা দেখছি না। খুচরা বাজারে দারুচিনি বিক্রি হতে দেখা গেছে ৩২০ টাকায়। পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজি দরে। লবঙ্গ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। খুচরা বাজারে ১১০০-১২০০ টাকা কেজি। খুচরা বাজারে ধনিয়া ১২০ টাকা, গুঁড়া হলুদ ২০০ টাকা, কিসমিস ৪৮০ টাকা, গোল মরিচ ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বেশ কয়েকটি সবজি। এর মধ্যে রয়েছে- শিম, বেগুন, টমেটো ও গাজর। সবজিগুলোর কেজি ১০০ টাকা ওপরে বিক্রি হচ্ছে।
সব চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের আগাম সবজি শিম। বাজার ও মান ভেদে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। বাজারে প্রতিকেজি ১০০ টাকা বা তার থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো। বেগুন মান ও বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিটির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকারও বেশি। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয় ৪০-৫০ টাকা কেজি। এছাড়া চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গাজর। ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গাজর।
সবজি ব্যবসায়ীরা বলেন, শিমের দাম আর কিছুদিন ১০০ টাকার ওপরে থাকবে। বাজারে পুরোদমে শিম আসতে শুরু করলে দাম কমবে।
এদিকে শিম ও গাজরের মতো চড়া দাম না হলেও কিছুটা বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ফুলকপি ও বরবটি। বাজার ভেদে ছোট আকারের ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। এছাড়া পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিংগা, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপের দাম কিছুটা কমেছে। কিছু বাজারে এ সবজিগুলো ৩০ টাকা কেজির মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে।
গত এক মাসের বেশি সময় ধরে চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। গত সপ্তাহে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে কোরবানির আগে হাটে বাড়তি দামের অজুহাতে চলতি সপ্তাহে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। আর ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়। আর পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও মুরগির দাম। বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৫০ টাকা ও লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে।
তুলনামূলক স্বস্তি রয়েছে মাছের বাজারে। মানভেদে প্রতি কেজি রুই ও কাতলা ২৫০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-১৫০ ও কৈ, পাবদা, শিং সহ অন্যান্য দেশি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকার মধ্যে। তবে কিছুটা চড়া ইলিশের দাম।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর