যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, চীনের সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। কংগ্রেসের কাছে দেয়া এই প্রতিবেদনে পেন্টাগন বলছে, চীন তাদের বোমারু বিমানগুলোকে যেন আরো দূরে পাঠানো যায় সেই সক্ষমতা বাড়াচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
খবরে বলা হয়েছে, পেন্টাগনের এই প্রতিবেদনে চীন যে তাদের সামরিক ব্যয় এবং সামরিক সক্ষমতা ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে তা তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে চীনের বার্ষিক সামরিক ব্যয় ১৯০ বিলিয়ন ডলারের মতো। তবে এটি এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ব্যয়ের এক তৃতীয়াংশ। এখন পর্যন্ত চীন পেন্টাগনের এই প্রতিবেদনের ব্যাপারে চীন এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
পেন্টাগনের প্রতিবেদনটি মূলত চীনের সামরিক সক্ষমতা এবং অর্থনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার একটি মূল্যায়ন। এতে বলা হয়, গত তিনবছরে পিপলস লিবারেশন আর্মি সাগরে নাটকীয়ভাবে তাদের বোমারু বিমানগুলোর বিচরণ এলাকা বাড়িয়েছে। বিশেষ করে সমুদ্রপথের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অঞ্চলে।
এর পাশাপাশি তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুতে হামলার প্রশিক্ষণও দিচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয় চীন এর মাধ্যমে কি অর্জন করতে চাচ্ছে তা স্পষ্ট নয়। চীন তাদের স্থল বাহিনীকেও পুনর্গঠন করছে যাতে তারা লড়াইয়ে জয়ী হতে পারে। সেখানে উল্লিখিত হয়েছে যে, এসব সংস্কারের লক্ষ্য আরও গতিশীল এবং মারাত্মক এক স্থলবাহিনী তৈরি করা যা দিয়ে যৌথ অভিযানে তারা মূল শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। আগামী দশ বছরে চীনের সামরিক ব্যয় ২৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যেভাবে চীনের শক্তি ও প্রভাব বাড়াছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে সমপ্রতি উত্তেজনা অনেক বেড়েছে। চীন দক্ষিণ চীন সাগরের বেশির ভাগ অংশ চীন এবং অন্যান্য দেশ তাদের বলে দাবি করে। দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে যে তাদের নৌ চলাচলের অধিকার আছে, সেটা প্রমাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রায়শই ঐ অঞ্চলের আকাশে তাদের বিমান পাঠায়। তবে চীন সেখানে সাগরের মাঝখানে কৃত্রিম দ্বীপ সৃষ্টি করে সামরিক স্থাপনা গড়ে তুলছে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণের সময় সেখানে চীনের সামরিক বিমানও অবতরণ করেছে। চীন-মার্কিন সম্পর্কে উত্তেজনার আরেকটি কারণ তাইওয়ান। চীন মনে করে তাইওয়ান তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া একটি প্রদেশ।
পেন্টাগনের প্রতিবেদনে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে যে, চীন হয়তো জোর করে তাইওয়ানকে তাদের অংশ করার একটি পরিকল্পনার প্রস্তুত রাখছে। চীনকে আস্থায় নেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭৯ সালে তাইওয়ানের সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। কিন্তু তারপরও কিন্তু তারা তাইওয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সামরিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।