তুরস্কের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, তুরস্কে বন্দি মার্কিন যাজকের মুক্তি দিলে তারা তুরস্কের ওপর আরো অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। বৃহস্পতিবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মনুচিন এই ঘোষণা দেন। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে মার্কিন যাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসন প্রায় দুই বছর ধরে তুরস্কে বন্দি রয়েছেন। সম্প্রতি তার মুক্তি দেয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দুই দেশই পরস্পরের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছে। ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়েছে তুরস্কের মুদ্রা।
এরই মধ্যে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিলো যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা যদি ব্রানসনকে দ্রুতই মুক্তি না দেয়, আমরা আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করছি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কোনো হুমকিতেই নতি স্বীকার করছে না তুরস্ক। সম্প্রতি দেশটির একটি আদালত ব্রানসনের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। শুক্রবার এক টুইটার বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বহু বছর ধরে তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের থেকে সুবিধা নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের এই সুবিধা কমিয়ে দেবে।
এদিকে, তুরস্কের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে ঘনিষ্ঠ মিত্র কাতার। দেশটি তুরস্কে নতুন করে ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ঘোষণা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ব বাজারে তুর্কি মুদ্রার দর কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে নতুন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ঘোষণায় তা আবারো হুমকির মুখে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায়
বসতে চায় তুরস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে তুরস্ক। দেশটি বলেছে, ন্যাটোর দুই সদস্য দেশের মধ্যে সৃষ্ট সংকটের সমাধানে তারা আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক। বুধবার বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগ্লু।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তুরস্কের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বিশ্ববাজারে নজিরবিহীনভাবে তুর্কি মুদ্রা লিরার মান কমে যাওয়ায় তুরস্কের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। এমন অবস্থায় সংকটের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করলো তুরস্ক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুক কাভুসোগ্লু বলেন, ‘সবকিছুর পরেও আমরা বর্তমান সমস্যার সমধানে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
এদিকে, ওয়াশিংটন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানিকৃত তুর্কি স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করার সঙ্গে মার্কিন যাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে আটক করার ঘটনার কোনো যোগসূত্র নেই। তাকে মুক্তি দেয়ার পরেও এ শুল্ক আরোপ থাকবে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ হুকাবি স্যান্ডার্স বলেন, ‘বর্তমানে যে শুল্ক আরোপিত রয়েছে, যাজক ব্রানসনকে মুক্তি দেয়ার পরেও তা অব্যাহত থাকবে। এটা সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে দেয়া হয়েছে।’