ওসি আবদুল হাইয়ের লাগামহীন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা দাবি করেছেন ওসির মদতে গেল এক মাস ধরে কোম্পানীগঞ্জে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। এতে করে পাথরখেকো চক্রের কবলে পড়ে শারপিন টিলা, কালাইরাগ, ধলাই সেতু, সাদা পাথর এলাকা এবং লিলাই বাজারের অস্তিত্ব বিলীন হতে যাচ্ছে। এ কারণে কোম্পানীগঞ্জের বিতর্কিত ওসি আবদুল হাইকে দ্রুত অপসারণ করে প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য কোম্পানীগঞ্জকে লুটপাটের কবল থেকে রক্ষা করার দাবি জানান তারা। সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবর দেয়া এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়। স্মারকলিপি দাতারা হচ্ছেন- কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী শামীম আহমদ, ইছাকলস ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আশিক মিয়া, উত্তর রনিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণধন সিংহ, ইছাকলস ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আছাব মিয়া, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কবির আহমদ, নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, ইসলাম উদ্দিনসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন সিলেটসহ কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারিগুলোতে পাথর উত্তোলনে হাইকোর্টে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞায় কোনো কর্নপাত না করে কোম্পানীগঞ্জের বিতর্কিত ওসি আবদুল হাইয়ের মদতে বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে গোটা উপজেলা।
গুচ্ছগ্রাম মসজিদ এলাকায় স্থানীয় পাথর সিন্ডিকেটের সঙ্গে আঁতাত করে অর্ধশতাধিক বোমা মেশিন লাগিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। শারফিন টিলা এখন বোমা মেশিনের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত। কালাইরাগ ও দয়ারবাজার এলাকায় শ্রমিক মৃত্যুর মিছিল শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। ধলাই ব্রিজের নিচে নিষিদ্ধ স্থানে শতাধিক বোমা মেশিন লাগিয়ে প্রতি রাতেই পাথর লুটপাট হচ্ছে। এতে করে ব্রিজটিও হুমকির মুখে পড়েছে। ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর এলাকা সাদা পাথরের জন্য সমৃদ্ধ। রাতের আঁধারে নৌকা দিয়ে পাথর লুটপাট হচ্ছে। আর এসব কোয়ারিতে পাথর লুটপাটের শেল্টার দেয়া ওসি আবদুল হাই প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তেলিখাল ইউপির ছাতলপারের বালু মহালের নৌকা থেকে ওসি আবদুল হাইয়ের নির্দেশে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। ধলাই নদীতে চলাচলকারী লিস্টার, উৎমা ছড়া, মাঝেরগাঁও কোয়ারি থেকে বড় অংকের চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী বড়পুঞ্জির ইন্ডিয়ার ঘাট এলাকা মাদক চোরাকারবারিদের স্বর্গরাজ্য। ওই এলাকায় মাদক কারবারিদের সঙ্গে সংখ্য গড়ে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করছেন তিনি। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, কোম্পানীগঞ্জের বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিনভর দুর্গম এলাকাগুলোতে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করে পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখেন, আর ওসির নির্দেশে রাত হলেই গোটা উপজেলায় শুরু হয় পাথর লুটপাটের মহোৎসব।