নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বৃহস্পতিবার রাতে মেলামাইন কারখানার এক শ্রমিককে (১৪) তুলে নিয়ে জোরপূর্বক চার লম্পট ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকালে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শুক্রবার রাতেই তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে। উপজেলার তারাব পৌরসভার তেতলাবো এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
ধর্ষিতার পরিবারের বরাত দিয়ে রূপগঞ্জ থানার এসআই ফরিদ আহমেদ জানান, ধর্ষণের শিকার কিশোরী তার পরিবারের সঙ্গে তারাব পৌরসভার তেতলাবো এলাকায় ভাড়াবাড়িতে বসবাস করে আসছে। সে স্থানীয় একটি মেলামাইন কারখানায় কাজ করে। ১৬ই আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে কারখানায় কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে তেতলাবো খালপাড় এলাকায় পৌঁছলে মাসাবো এলাকার রবিউলের ছেলে মামুন, আইয়ুব আলীর ছেলে হাসান মাতবর, ইব্রাহীমের ছেলে শাহীন আলম ও নিরঞ্জন বিশ্বাসের ছেলে অর্জুন বিশ্বাস তার মুখ চেপে ধরে তেতলাবো একটি নির্জন স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে। পরে তাকে সেখানে ফেলে রেখে ধর্ষকরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনা কিশোরী পরিবারের কাছে জানালে তার পিতা বাদী হয়ে শুক্রবার বিকালে চার জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে। রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত হাসান মাতব্বর, শাহীন ও অর্জুন বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত চার আসামির মধ্যে তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে এক মাদরাসাছাত্রী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা পুখুরিয়া শিয়ালকোল নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ভূঞাপুর ফাজিল মাদরাসার ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত। তার বাড়ি গোবিন্দাসী ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে। এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই হিটলার (৩০) ও জাহিদ (৩২) নামে দুই ধর্ষককে আটক করে। হিটলার উপজেলার চরপাড়া ভারই গ্রামের কিসমত আলীর ছেলে ও জাহিদ একই গ্রামের আসাদ ওরফে আছারের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ই পুলিশের কাছে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
জানা যায়, উপজেলার ভূঞাপুর ফাজিল মাদরাসার ১ম বর্ষের ওই ছাত্রী শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়ি জিগাতলা থেকে বাবা-মা’র সঙ্গে অভিমান করে ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ডে চলে আসে। বাসস্ট্যান্ড থেকে এলেঙ্গা যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় উঠতে গেলে দুই পরিবহন শ্রমিক হিটলার ও জাহিদ তার কাছে যায় এবং গন্তব্যের বিষয়টি জিজ্ঞাসা করে তাকে পৌঁছে দেয়ার আশ্বাস দেয়। বিষয়টি ছাত্রীর সন্দেহ হলে সে হেঁটেই শিয়ালকোলের দিকে রওনা দেয়। এ সময় জাহিদ ও হিটলার তার পিছু নেয়। মেয়েটি পুখুরিয়া শিয়ালকোল কবিরের ইট ভাটার কাছে পৌঁছলে হিটলার ও জাহিদ তার মুখ চেপে রাস্তার পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। প্রথমে জাহিদ ও পরে হিটলার তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটির ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে হিটলার কে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার ও হিটলারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে হিটলারের দেয়া তথ্যে অপর ধর্ষক জাহিদকে নিজ এলাকা থেকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ই পুলিশের কাছে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় মেয়ের পিতা বাদী হয়ে হিটলার ও জাহিদকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছে।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুছ ছালাম মিয়া বলেন, ঘটনার পর পরই রাতেই দুই ধর্ষককে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করেছে। মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও দুই ধর্ষককে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে।