রাখাইনে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর জাতি নিধন অভিযান চালানোর দায়ে মিয়ানমারের চার সেনা কর্মকর্তা ও পুলিশ কমান্ডারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর চারটি ইউনিটকেও নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়া হয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে মানবাধিকারের তীব্র লঙ্ঘন ও রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে কঠোর। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের টেরোরিজম অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি সিগ্যাল ম্যান্ডেলকার নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দেন। ঘোষণায় তিনি মিয়ানমারের পরিবর্তে ‘বার্মা’ শব্দের ব্যবহার করেন।
তিনি বলেন, বার্মায় সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর ওপর সহিংস অভিযান চালিয়েছে। তারা সেখানে জাতি নিধন অভিযান, গণহত্যা, যৌন নির্যাতন, বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগের জন্য দোষীদের জবাবদিহি করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারে নীতি অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয় ভয়াবহ ওই অভিযানের দায়িত্বে থাকা সেনা কর্মকর্তা ও ইউনিটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত চার কর্মকর্তা হলেন, সেনা কমান্ডার অং ক্যাও জ্য, খিন মং সো, খিন হ্লাইং ও বর্ডার পুলিশের কমান্ডার থুরা স্যান ল্যুইন। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর ৩৩ ও ৯৯ লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের ওপরেও এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এসব ব্যক্তির মালিকানায় থাকা সব সম্পদ জব্দ করা হবে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও এর সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করতে পারবে না। তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতেও দেয়া হবে না।
তবে সমালোচকরা বলছেন, রাখাইনে মানবাধিকারের তীব্র লঙ্ঘন হওয়া সত্ত্বেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি সুর নরম করতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার সেনাবাহিনীর চার কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেও শক্তিধর সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংকে ছাড় দেয়া হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের গবেষক রিচ ওয়ার বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে শীর্ষ কর্মকর্তাদের ছাড় দেয়া উদ্বেগজনক বিষয়।