‘জনসেবার জন্য প্রসাশন’-এর আলোকে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় গতকাল জলঢাকা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. শাহাজাহান আলীকে জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মচারী (ইনোভেশন) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ক্রেস্ট প্রদান করেন সদ্য যোগদানকৃত জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন। এ সময় উপকারভোগী জলঢাকা গোলমুণ্ডা ইউনিয়নের কাজী মোশাররফ বলেন, দেশে তার মতো করে একটি করে শাহাজাহান তৈরি হলে জনগণের সেবা পেতে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। শাহাজাহান আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে ২০০৮ সালে রূপালী ব্যাংক লিমিটেডে সিনিয়র অফিসার হিসেবে যোগদান করেন এবং একাধিক শাখায় ‘শাখা ব্যবস্থাপক’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে ২৯তম বিসিএস এ উত্তীর্ণ হয়ে সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০১৪ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই-এর সহযোগিতায় রেজিস্ট্রি অফিসের বিভিন্ন সেবার সহজীকরণ নিয়ে কাজ শুরু করেন। ২০১৫ সালে ‘রেজিস্ট্রিকৃত মূল দলিল দ্রুত ফেরত প্রদানে ও সেগুলো ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক একটি পাইলট প্রকল্প সফলভাবে সমাপ্ত করে উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এর পরের বছর তিনি ‘ভূমি ও রেজিস্ট্রি সেবা’ নামক একটি অত্যাধুনিক মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে দেশে হইচই ফেলে দেন। অ্যাপটিতে তিনি ‘সোনার হরিণ’ নামে খ্যাত দলিল রেজিস্ট্রি ও জমি-জমা সংক্রান্ত প্রায় সব তথ্য সহজে সন্নিবেশ করেন। অ্যাপটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন জেলা প্রশাসক নুরুল আমিন তার সম্মেলন কক্ষে উদ্বোধন করা হলে পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনগণ ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন মর্মে দেশের অনেক শীর্ষ জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে এবং একাধিক টেলিভিশনে গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রচারিত হয়।
তিনি ২০১৭ সালে প্রত্যেক দলিলের সরকার নির্ধারিত রেজিস্ট্রি খরচ সহজে হিসাবায়নের জন্য ‘দলিল ক্যালকুলেটর’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে আইসিটি অধিদপ্তরের আর্থিক সহায়তায় তিনি মোবাইল অ্যাপ ‘দলিল ক্যালকুলেটর’ তৈরির কাজ শেষ করেন। অ্যাপটিতে নির্ধারিত কয়েকটি ক্লিকের মাধ্যমে যে কেউ দলিলের রেজিস্ট্রি খরচ বের করতে পারছে। তার উদ্ভাবিত মোবাইল অ্যাপস দু’টি ভূমি অফিস ও রেজিস্ট্রি অফিসে বিদ্যমান অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে দেশব্যাপী ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এবং জনগণের দোড়গোড়ায় ভূমি ও দলিল রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত তথ্যসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।