ঝিনাইদহে ডাকাতের কোপে সাইফুল ইসলাম (৩২) নামে এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল সেনানিবাসের মেডিকেল কোরের ল্যান্স করপোরাল সাইফুল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের হাফিজ উদ্দীন হাবুর ছেলে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বংকিরা গ্রামের পুলিশ ফাঁড়ির অনতিদূরে হাওনঘাটা নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে। রাতেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে নিহতের পিতা হাফিজুদ্দিন বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন। এদিকে সেনাসদস্য হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো মিজানুর রহমান মিজার ও আকিমুল হোসেন। রোববার ভোরে তাদের সদর উপজেলার আসাননগর ও সাধুহাটী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের দাবি গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকোরোক্তি মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি হাসুয়া উদ্ধার উদ্ধার করা হয়।
নিহতের ছোট ভাই নৌবাহিনীর সদস্য মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, শনিবার রাতে তারা বদরগঞ্জ বাজার থেকে সাইফুলের শ্বশুর ছামছুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে তিনজন এক মটরসাইকেলে নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। তারা বাড়ির কাছাকাছি হাওনঘাটা মাঠের মধ্যে পৌঁছালে ৬-৭ জনের একদল ডাকাত জাম গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে গতি রোধ করে। এ সময় ডাকাতদলের সঙ্গে সাইফুলের বাদানুবাদের একপর্যায়ে তারা প্রথমে তার হাতে ও পরে গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. প্রিন্স তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডা. প্রিন্স জানান, অনেক আগেই রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ডাকাতদের চিনে ফেলার কারণে সাইফুলকে হত্যা করা হতে পারে বলে তার ছোট ভাই নৌসদস্য মনিরুল দাবি করেন। গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, নিহত সাইফুলের স্ত্রী শাম্মি আক্তার দেশের সেরা একজন অ্যাথলেটিক হিসেবে বহু দেশে ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করে খ্যাতি অর্জন করেন। এই দম্পতির দুই সন্তান। নাম আবু হামজা ও আবু হুরাইরা। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, দুর্বৃত্তদের ধরতে এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করার চেষ্টা করছি। তিনি জানান, রোববার ভোরের দিকে পুলিশ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। এদিকে সেনাসদস্য সাইফুলের মৃত্যুর খবর বংকিরা গ্রামে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। গ্রামের মানুষ দলে দলে সদর হাসপাতালে ভিড় করতে থাকে। যশোর সেনাসিবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিহত সাইফুলের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন।