× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সব খবর সরকারের কাছে আছে - হাছান মাহমুদ

দেশ বিদেশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
২০ আগস্ট ২০১৮, সোমবার

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সমপাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশে আবারো ১/১১ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সরকার আবারো ক্ষমতায় আসবে বুঝতে পেরেই এই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র কারা করছে, কোথায় হচ্ছে, কীভাবে হচ্ছে, সে সমস্ত খবর সরকারের কাছে আছে। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুরপাড় লেইনে নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। শনিবার ঢাকায় বিএনপির মুখপাত্র ও যুগ্ম সাধারণ সমপাদক রিজভী আহমেদের সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগের জবাব দিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদের বক্তব্যের সূত্র ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল রিজভী আহমেদ বলেছেন আমাদের কর্মকাণ্ডেই নাকি এক-এগারোর পথ প্রশস্ত হচ্ছে। এই কথা বলার মাধ্যমে রিজভী আহমেদ প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন, তারা এক-এগারোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত আছেন। প্রকৃতপক্ষে এই ধরনের ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, আগস্ট মাস আসলেই নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ই আগস্টের কালোরাত্রিতে হত্যা করা হয়েছিল। ২১শে আগস্ট বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুড়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছিল। আইভী রহমানসহ ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী সেদিন মৃত্যুবরণ করেছেন। আমাদের নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শ্রবণশক্তি অনেকটা লোপ পেয়েছে এ ঘটনার প্রেক্ষিতে। ২০০৫ সালের ১৭ই আগস্ট সারা দেশে বোমা হামলা হয়েছিল। এবার কিশোর-কিশোরীদের ঘাড়ে চড়ে যে ষড়যন্ত্র, সেটিও এই আগস্ট মাসে।
তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন সাহেবসহ একটি পক্ষ হাঙ্গামায় জড়িত ছাত্রদের মুক্তি দেয়ার জন্য খুব সরব। কিন্তু তাদের হামলায় আমাদের দলের একজন নেতার চোখ উপড়ে ফেলা হলো, ২১ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গুরুতর আহত, সবমিলিয়ে ৫০ জন আহত, আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা হলো- সেটা নিয়ে কোনো কথা নেই।
তিনি বলেন, গত রমজানের আগের ঈদে কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়েছিল। সে আন্দোলনে বাতাস দিয়েছিলেন মওদুদ আহমদসহ আরো অনেকেই। সেই আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর মওদুদ আহমদ গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন এবং গ্রামে গিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল বলেও তিনি নাটক সাজিয়েছিলেন।
মওদুদ আহমদ আগে কখনোই ঈদের পাঁচদিন-সাতদিন বা কয়েকদিন আগে গ্রামের বাড়ি যেতেন না জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি যতদিন ধরে রাজনীতি করছেন, ক্ষমতায় থাকাকালীন এবং গত কয়েক বছর সাধারণত ঈদের পরদিন গ্রামের বাড়ি যেতেন। গত রমজানের ঈদের আগে তিনি গ্রামের বাড়ি গেছেন। এবার কোরবানির ঈদের পাঁচদিন আগে তিনি গ্রামের বাড়ি গেছেন।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে কিশোর-কিশোরীদের আন্দোলনে সরকারের পূর্ণ সমর্থন ছিল এবং প্রধানমন্ত্রী সব দাবিগুলো মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নের কাজও শুরু করেছেন জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, সে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য মওদুদ আহমদসহ আরো অনেকেই ২৫-৩০ বছরের যুবক-নারীদেরকে স্কুলের ড্রেস পরিয়ে পেছনে ব্যাগ ঝুলিয়ে কোমলমতি সাজিয়ে দিয়েছেন।

তাদের ব্যাগের মধ্যে পাথর পাওয়া গেছে। কোনো কোনো ব্যাগে আবার চাপাতিও পাওয়া গেছে। লোহার রডও পাওয়া গেছে। মওদুদ আহমদরাই এই কাজগুলো করেছেন। তাদের সেই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে এই কিশোর-কিশোরীদের ঘাড়ের ওপর বন্দুক রেখে শিকার করার যে পাঁয়তারা তারা করেছিলেন সেটিও ব্যর্থ হয়েছে।
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ার পর মওদুদ আহমদ আবারো নোয়াখালীতে গেছেন। আবারো অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে মর্মে নাটক সাজিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পুলিশ নাকি তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেখানে কিন্তু তার বাড়ির আশেপাশে কোনো পুলিশ নেই। পুলিশ যেখানে নেই, সেখানে পুলিশ কীভাবে অবরুদ্ধ করে রাখলো? আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, সেখানে কোনো পুলিশ নেই।
তিনি বলেন, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ অনেক আগেই বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনেরই আস্থা হারিয়েছেন। কিছুদিন আগে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, আইনজীবী প্রতিনিধিদলকে বেগম জিয়া বলে দিয়েছেন মওদুদ আহমদকে যেন মামলায় রাখা না হয়। অর্থাৎ তার ওপর বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান কারোরই আস্থা নেই। বিএনপি নেতাকর্মীরাও তাকে সন্দেহের চোখে দেখেন।
একদিকে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য এবং অন্যদিকে দেশবাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য মওদুদ আহমদ এ ধরনের নাটক সাজাচ্ছেন বলেও দাবি করেন হাছান মাহমুদ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তার (মওদুদ) নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি কয়েক ভাগে বিভক্ত। এ কারণে তাদের মধ্যেই দলাদলি আছে, কোন্দল আছে। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে ঘায়েল করার জন্য সবসময় তৎপর। তিনি সেটিকে আড়াল করার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সমপাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপন করছেন। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।
এ ধরনের নাটক করে মওদুদ আহমদ ও বিএনপি নেতারা নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব- যেমন লুকাতে পারবেন না, একই সঙ্গে নাটক করে খালেদা ও তারেকের কাছে হারানো আস্থা মওদুদ আহমদ ফিরে পাবেন বলেও মনে হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সমপাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সমপাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সমপাদক ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর