× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জমে উঠেছে পশুর হাট, বেড়েছে বিক্রি

শেষের পাতা

মারুফ কিবরিয়া
২০ আগস্ট ২০১৮, সোমবার

ঈদের বাকি আর দুদিন। এর মধ্যে পুরোদমে জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাট। প্রতিটি হাটেই ক্রেতার পাশাপাশি বেড়েছে বিক্রিও। গতকাল রাজধানীর কয়েকটি  হাট ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। শনিরআখড়া পশুর হাটে সকাল থেকেই ছিল ক্রেতার ভিড়। বেপারিদের সঙ্গে দরদাম চলছিল তাদের। পছন্দ হলেই কোরবানির জন্য গরু কিনে নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে অনেককে। আবার কেউ কেউ দর দাম দেখে ফিরে যাচ্ছেন।


পরে কিনবেন। জয়পুরহাট থেকে আলীম মুন্সি ১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন শনিরআখড়ার ওই হাটে। এর মধ্যে শনিবার রাতে ৩টি বিক্রি হয়েছে। গতকাল সকালে বিক্রি হয়েছে আরো দুটি। আলীম মুন্সি বলেন, মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা অনেক। ১৫টা আনছি। এখন আছে ১০টা। তিনি বলেন, ‘আমি গেলবারও ৯টা গরু নিয়ে আসছিলাম। দাম বেশি ধইরা বইসা থাইকা তো লাভ নাই। পোষাইলে বিক্রি কইরা দেই।

এই হাটের আরেক বেপারি সলিম মিয়া ১২টি গরু নিয়ে এসেছেন কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার হাটে আসার পর থেকে বিক্রি না হলেও শনিবার রাত থেকে বিক্রি বেড়েছে। তার ১২টির মধ্যে দুটি বিক্রি হয়েছে শনিবার রাতে। সলিম মিয়া বলেন, ‘মাঝারি-বড় মিলাইয়া ১২টা গরু এনেছি। এখন আর দশটা আছে। কাস্টমার বাড়ছে। অনেকে আইসা দর দাম কইরা গেছে। ভালো দাম না কওয়ায় ছাড়ি নাই।

গরু কিনতে এসে শফিউল নামের এক ব্যক্তি জানান, এই হাটে প্রতিবারই গরু কিনি। গতবারের চেয়ে এবার অনেক গরু দেখা গেছে। আমার বাসা যাত্রাবাড়ীতেই। তাই নিয়মিত এসে খবর রাখি। আজ কেনার জন্য এসেছি। ৮০ থেকে এক লাখ টাকার মধ্যে গরু কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। দুপুর দেড়টার দিকে হাটের পশ্চিম পাশ থেকে আরিফুল হাসান নামের এক ব্যক্তি গরু কিনে ফিরছেন। তিনি জানান, সাধ্যের মধ্যে পছন্দের গরুটি কিনতে পেরেছি।

আরিফুল বলেন, গরুটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়েছে। দুই লাখ টাকা দাম চেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই দামে কিনতে পেরেছি। অন্য দিনের তুলনায় হাটে অনেক মানুষের সমাগম। অনেক গরুও দেখা যাচ্ছে। কাল রাতে দেখেছি ট্রাকের পর ট্রাক এই হাটে প্রবেশ করেছে। শেষ দুইদিনে আরো জমবে।

কোরবানির পশুর হাটের জমজমাট দৃশ্য দেখা গেছে মুগদা ও মানিকনগর এলাকায়ও। সেখানে স্টেডিয়ামের পাশের খালি জায়গা ও মুগদা বাসস্ট্যান্ড থেকে কিছু দূরে রাস্তার উপর অস্থায়ী হাট বসেছে। এই হাটেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে দুপুরের পর। দুপুর আড়াইটার দিকে প্রচুর সংখ্যক ক্রেতা হাটে প্রবেশ করছিলেন। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে কোরবানির পশু বেচাকেনা। এক পাশে ছাগল এবং অন্য পাশে সাজানো গরু।

ফরিদপুর থেকে আল আমিন নামের এক যুবক ৩৭টি গরু এনেছেন। এর সবক’টি তার একার নয়। আল আমিন বলেন, ‘আমরা ছয়জন একসঙ্গে আসছি। আমার গরু আছে ১১টা। এর মধ্যে সকালে বিক্রি হইছে ২টা। মনমতো দাম পাইলে বাকিগুলোও বিক্রি কইরা বাড়ি চইলা যামু। শনিবার থেইকা আজকে বেশি মানুষ আসছে। আমার গরুগুলোর একেকটা ৯০ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দাম ঠিক করা আছে।

এখন দেখি কেমন বিক্রি করতে পারি। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সোহান এসেছিলেন কোরবানির গরু কিনতে। ৮৫ হাজার টাকায় একটি গরু কিনে বাড়ি ফিরছেন তিনি। সোহান বলেন, কাল ঘুরে গেছি। সবাইকে দেখলাম দরদাম করেছে। কিন্তু আজ পুরোদমে বিক্রি হয়েছে। এই হাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,  রোববার থেকে আনুষ্ঠানিক বিক্রি শুরু হওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। অনেকেই তাদের পছন্দের গরু-ছাগল কিনতে পারছেন। কোরবানির পশু বিক্রির জমজমাট অবস্থা দেখা গেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠেও।

সেখানে বড়, ছোট ও মাঝারি সব ধরনের গরুর পাশাপাশি ছাগল ও উটও পাওয়া যাচ্ছে। বেপারিরা  বেশির ভাগই ঢাকার বাইরে থেকে গরু নিয়ে এসেছেন। ফারুক নামের এক বেপারি জানান, তিনি ৪টি গরু নিয়ে এসেছেন রংপুর থেকে। একেকটি গরুর দাম ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দাম হাঁকাচ্ছেন। একটি গরু এক লাখ টাকায় বিক্রি করতে পেরেছেন। ওই হাটের পাশে আরেকটি স্থানে বেশি ক্রেতার সংখ্যা লক্ষ্য করা গেছে।

পশু বিক্রি বাড়ায় বেশ সন্তুষ্ট বেপারিরাও। নাটোরের বনপাড়া থেকে আনোয়ারুল ২টি গরু নিয়ে এসেছেন। একেকটি গরু এক লাখ চল্লিশ হাজার করে বিক্রি করবেন বলে ঠিক করেছেন। আনোয়ারুল বলেন, আজকে এখানে অনেক মানুষ আসছে। আমি বৃহস্পতিবার আসছি। এতদিন মানুষ গরু কিনতে আসে নাই। আমি বেপারি না। বাড়ির পালা গরু বিক্রি করতে আসছি। আমার সঙ্গে আরো ছয়জন আসছে। বনপাড়া থেকে মোট ৩৬টা গরু এনেছি আমরা। আমার ছেলেটা রাজশাহী মেডিকেলে পড়ে। বাড়িতে গিয়ে আমাকে না দেখতে পেয়ে ফোন দিয়ে বললো বাড়ি কখন ফিরবো। এতদিন পর ছেলেটা ফিরছে আমি নাই। খুব খারাপ লাগছে। এখন গরু বিক্রি না করেও ফিরতে পারছি না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর