পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে অব্যাহত সহিংসতায় শনিবার থেকে এ পর্যন্ত ছয়জন নিহত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যজুড়ে মাথাচাড়া দিয়েছে ব্যাপক সহিংসতা। কোথাও শাসক দলের মধ্যেকার অন্তর্দ্বন্দ্বে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির কর্মীদের সংঘর্ষে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। বোমা থেকে গুলি চালনার ঘটনাও ঘটছে। শনিবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছেন এক তৃণমূল কর্মী। এরপর গত সোমবার মালদার মানিকচকে ২ তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে পুরুলিয়ার জয়পুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ বিজেপিকর্মীর। এবার ঝাড়গ্রামে খুন হলেন ১ তৃণমূল কর্মী।
এ খুনের পেছনে বিজেপি ও সিপিআইএম-এর হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহতের পরিবার। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরে রাজনৈতিক সংঘর্ষে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বোর্ড গঠন নিয়ে সহিংসতার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছেন, তৃণমূলকে শান্তিপূর্ণভাবে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের কাজ করতে হবে। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, বিধানসভা বা লোকসভার ভোটে এ ধরনের গোলমাল হয় না। পঞ্চায়েতে ব্যক্তিগত শত্রুতা কাজ করে। আমার তরফে যতটা সম্ভব করার চেষ্টা করছি। তা সত্ত্বেও এত বড় রাজ্যে দু-একটা ঘটনা ঘটে গেলে তা সমর্থন করি না। শুনতেও খারাপ লাগে। আমার দলের একজন মারা গেলে যেমন আমার বুকে লাগে, অন্য দলের কেউ মারা গেলেও খারাপ লাগে। যা ঘটছে, দুর্ভাগ্যজনক। বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের মধ্যেই মারপিট করে মরছে। সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, বারুদের স্তূপের উপর বসে রয়েছে রাজ্য। যা ঘটছে তা নির্বাচনে সন্ত্রাসেরই পুনরাবৃত্তি। কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও মনে করেন, কংগ্রেস, বামকে ভেঙে বিজেপির সুবিধা করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন শাসক দলে অরাজকতার কারণেই রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটছে।