× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে-সম্পাদক পরিষদ

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, সোমবার

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া পাস না করতে জাতীয় সংসদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি বিষয়ক জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির দেয়া চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে পরিষদ। বলা হয়েছে, এই আইন স্বাধীন সাংবাদিকতা ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

গতকাল রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে এক বৈঠক শেষে দেয়া বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে ওই পরিষদ। বিবৃতিতে বলা হয়,  ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি বিষয়ক জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির খসড়া ডিজিটাল আইনের ওপর দেয়া চূড়ান্ত রিপোর্টে বিস্ময়, অসন্তোষ ও হতাশা প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ। এর সদস্যরা বলেছেন, চূড়ান্ত ওই রিপোর্টে সাংবাদিক ও মিডিয়া বিষয়ক সংগঠনগুলোর প্রতিবাদ ও উদ্বেগের বিষয়টি পুরোপুরিভাবে অবজ্ঞা করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত ওই রিপোর্টে খসড়া আইন (ড্রাফট অ্যাক্ট)-এর ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২ ও ৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আনা হয় নি। এই অনুচ্ছেদগুলো মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মিডিয়া পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুতর হুমকি বলে ওই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে সম্পাদক পরিষদ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীনে তথ্য পাওয়ার অধিকার বিষয়ক আইন (আরটিআই) অন্তর্ভুক্ত করাকে আমরা স্বাগত জানাই।

কিন্তু ঔপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট যুক্ত করায় আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এটি আরটিআইয়ের সঙ্গে সুস্পষ্ট সাংঘর্ষিক বা বিপরীত। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা আইসিটি মন্ত্রীর উপস্থিতিতে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। ওই সাক্ষাতে উভয় মন্ত্রীই আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, আমাদের উদ্বেগের বিষয়গুলো সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, পূর্বে উল্লিখিত জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটি সম্পাদক পরিষদ, বিএফইউজে ও এটিসিও’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে দু’দফা সাক্ষাৎ করেছে। সেখানে আমরা দেখিয়েছি কীভাবে খসড়া আইনটি মিডিয়ার স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করবে। মিডিয়ার স্বাধীনতা হলো যেকোনো গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। রিপোর্ট চূড়ান্ত করার আগে জাতীয় সংসদের ওই স্থায়ী কমিটি আমাদের সঙ্গে আরো একবার বৈঠক করার কথা ছিল। কিন্তু সেই বৈঠক কখনো আর হয় নি।

এরই প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদের ওই কমিটির রিপোর্ট ও খসড়া ডিজিটাল আইন প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হচ্ছে সম্পাদক পরিষদ।  কারণ-

ক) সংবিধানের ৩৯(২) ক ও খ ধারায় মত প্রকাশ ও প্রেসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে যে গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে এটা তার বিপরীত।
খ) এটি চিন্তা করার স্বাধীনতা ও মিডিয়ার নিরপেক্ষতায় স্বাধীনতার বিরোধী। এ স্বাধীনতা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের উদ্দীপনার মধ্যে নিহিত রয়েছে।

গ) এটি গণতন্ত্রের মৌলিক চর্চার বিরোধী। এর জন্য সব সময় বাংলাদেশ লড়াই করেছে এবং এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
ঘ) এটি সাংবাদিকতার মৌলিক নীতি ও মিডিয়ার স্বাধীনতার বিরোধী। এ অধিকারের পক্ষে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা লড়াই করে আসছেন।

ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, জাতীয় সংসদ হলো জনগণের বা হাউজ অব দ্য পিপল এবং জনগণের সব রকম স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা পুনঃস্থাপনের জায়গা। তাই জাতীয় সংসদের প্রতি আমরা আন্তরিকভাবে আহ্বান জানাচ্ছি এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া পাস না করার জন্য। কারণ, তা পাস করা হলে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র মারাত্মকভাবে খর্ব হবে।

বিবৃতিদাতারা হলেন- নিউজ টুডের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর, দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, করতোয়ার সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার সম্পাদক এম শামসুর রহমান, সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, যুগান্তর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকাল পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহিদুজ্জামান খান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর