ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ) নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিলের আবেদন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে রোববার লিভ টু আপিলের আবেদন জমা দেয়া হয় বলে গতকাল সাংবাদিকদের জানান রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, ‘ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের জন্য হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই রায়টি স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল দায়ের করেছে।’ আপিলের এই পদক্ষেপকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে ‘তামাশা’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘ঢাবি কর্তৃপক্ষ একদিকে পরিষদের সভা ডাকলেন, সবাইকে দেখালেন তারা নির্বাচন দিচ্ছেন, আগামী মার্চের মধ্যে নির্বাচন হবে। একই সঙ্গে আবার এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করলেন।
এটা তো এক ধরনের স্ববিরোধী অবস্থান। ঢাবি কর্তৃপক্ষের এ অবস্থানের কারণে ছাত্ররা হতাশ হবে। প্রসঙ্গত, রোববার ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার পর ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়ে প্রশাসন কাজ করছে।
চলতি বছরের ১৭ই জানুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে ৬ মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে আদেশ দেন। এর আগে ডাকসু নির্বাচনের পদক্ষেপ নিতে ২০১২ সালের ১১ই মার্চ ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর ও ট্রেজারারকে লিগ্যাল নোটিশ দেন মনজিল মোরসেদ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশের কোনো জবাব না দেয়ায় ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়। পরে একই বছরের ৮ই এপ্রিল হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। হাইকোর্টের আদেশের পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ৪ঠা সেপ্টেম্বর ঢাবি’র উপাচার্য (ভিসি) ড. মো. আখতারুজ্জামান, প্রক্টর ড. একেএম গোলাম রাব্বানী ও ট্রেজারার ড. কামাল উদ্দিনকে আইনি নোটিশ পাঠান রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। নোটিশের জবাব না পাওয়ায় ১২ই সেপ্টেম্বর তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করেন তিনি। গতকাল শুনানি নিয়ে আদালত অবমাননার মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ।