বঙ্গবন্ধু হত্যার বিষয়ে বিএনপির কাছে তিনটি প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমি বারবার একই প্রশ্ন করছি বিএনপির নেতৃত্বের কাছে, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত? সেই খুনিদের বিচারের পথ বন্ধ করতে কেন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল? কেন এই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে বাংলাদেশের লাখো শহীদের রক্তের আখরে রচিত সংবিধান পরিবর্তন করে পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল? কিন্তু এসব প্রশ্নের জবাব বিএনপি আজও দেয়নি। আমি আবারো সেই প্রশ্নের জবাব চাচ্ছি।’ গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য অনলাইন স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এই প্রশ্ন করেন। সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন গৌরব ৭১, কানাডা আওয়ামী লীগ অল ওভারসিস বাংলাদেশি, ‘মুভমেন্ট ফর ডিপারটেশন অব কিলার নূর চৌধুরী টু বাংলাদেশ’ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান প্রমুখ। কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশের একজন জেনারেল জিয়াউর রহমান, মেজর ডালিমের সঙ্গে দেখা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন ‘ওয়েল ডান! মেজর ডালিম; কনগ্রাচ্যুলেশন’। তার অর্থটা কি? এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে তিনিও আছেন নেপথ্যে।’ তিনি বলেন, যে খুনিদের আজ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের কূটনৈতিক প্রয়াস এমনকি মামলা পর্যন্ত করতে হচ্ছে সেই খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এই খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছিলেন তিনি।
এই খুনিদের বিচার হবে না- এই মর্মে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিলেন এবং এই খুনিদের বিচার কাজ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে পঞ্চম সংশোধনীতে আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকাজ শেষ হয়েছে এবং হত্যাকারীদের অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তবে এর মধ্যে আমার জানা মতে ছয়জন খুনি বিদেশে আছেন। এদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী, নূর চৌধুরী, ডালিম, মাজেদ মোসলেম এবং রশীদ বিদেশে আছেন। শুধু আজিজ পাশা মারা গেছেন। এদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জোরদার হচ্ছে। তিনি জানান, এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন খুনি রাশেদ চৌধুরী। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারও আমাদের সহযোগিতা করছে। সেখানে একটা মামলা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে। তেমনি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে পিটিশন দেয়ার লক্ষ্যে এখানে স্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন হচ্ছে। কাদের আরো বলেন, নূর চৌধুরীর ব্যাপারে কানাডার একটি আইন আছে, সেটা হলো কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান সেদেশের আইনে নেই। এই কারণে আইনটিকে শিথিল করে নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কানাডায় একটি মামলাও বাংলাদেশ সরকার করেছে এবং সেখানে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত আছে।