চুক্তিতে আর বাস না চালানোর শপথ নিয়েছেন ঢাকার বাস মালিকরা। গতকাল রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বাস মালিকদের শপথ পড়ান।
সুষ্ঠু সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনা ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং ঢাকা মহানগরী ও বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে গণপরিবহন সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এ সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।
এনায়েত উল্যাহ বলেন, আপনাদের পরিবার যে বাসের কারণে ফিট। সেই বাস কেন আনফিট? দেশে সাড়ে ৩ লাখ গাড়ি রয়েছে। আমাদের ২ লাখ গাড়ির চালক সংকট। ভারি যান চালানোর প্রশিক্ষণের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নাই। তাই সরকারের কাছে আবেদন আমাদের একটি স্থান নির্ধারণ করে দিন আমরা সেখানে নতুন ড্রাইভার প্রশিক্ষণ দেই।
বাস মালিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের ২টি গাড়ি হলেই ম্যানেজার নিয়োগ দেন। আর গাড়ির কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না।
আপনারা আপনার গাড়ির খোঁজ- খবর নিন। দেখুন কিভাবে তা সড়কে চলছে। আমরা টিকিট সিস্টেমে ফিরে যেতে রাজি আছি। কাউন্টার নির্মাণের জন্য আমাদের স্থান দিন তবে মালিকরা নিজেদের গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিজেরাই করতে পারবে।
সভায় অংশ নেয়া মালিকদের কথায় উঠে আসে সড়কে বিভিন্ন সমস্যার তথ্য। পুলিশের র?্যাকার সমস্যার কথা উঠে আসে বারবার। রংধনু পরিবহনের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, তার নতুন ৩টি গাড়ি ফিটনেস পরীক্ষার জন্য বি আর টি এ অফিসে নিয়ে যাবার সময় পুলিশ আটকায়। ফিটনেস পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানালেও তারা আমার কাছে ৩টি গাড়ির র্যাকার খরচের জন্য নেন ২২০০ টাকা করে।
তানজিল পরিবহনের মালিক জানান, তার গাড়ি পুলিশ আটকালে দেখা যায় গাড়ির কোনো কাগজপত্র নেই। কিন্তু আমি জানি আছে। পরে জানতে পারি চালক গাড়ির কাগজ পুলিশকে দেয় নাই। কারণ দিলেই তার লাইসেন্স আটকিয়ে রাখবে পুলিশ।
মোহনা পরিবহনের মালিক ৬টি কোম্পানির মাধ্যমে ঢাকা শহরে বাস চালানোর সিদ্ধান্তের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সভায় হইচই শুরু করেন মালিকরা। পরে খন্দকার এনায়েত উল্যার হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বিকাশ পরিবহনের মালিক আনিসুর রহমান খান বলেন, গাড়ির ৫টি কাগজ বিভিন্ন সাইজের হবার কারণে পড়তে হচ্ছে নানান সমস্যায়। তাই এই ৫টি কাগজ বই সিস্টেম করলে আমাদের জন্য সহজ হবে। প্রতিটি চালকের ডাটাবেজ তৈরি করা যেতে পারে যাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে চালক পালিয়ে গেলেও তার সন্ধান মেলে।
এদিকে নির্ধারিত স্থানে বাস দাঁড়ানোর বিষয়ে মালিকরা অভিযোগ করেন এখন পর্যন্ত পুলিশ সুনির্দিষ্ট স্টপেজ দেখিয়ে দিতে পারছে না। এজন্য চালকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ফুলবাড়িয়া বাস টার্মিনালের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল আমিন নুরু, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম, মহাখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আবুল কালাম প্রমুখ।