× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সিলেটে রানার স্বীকারোক্তি / টাকার বিনিময়ে প্রবাসী আহাদকে খুন করেছি

শেষের পাতা

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার

‘টাকার বিনিময়ে সিলেটের জিন্দাবাজারে কুয়েত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আবদুল আহাদকে খুন করেছি। খুনের ঘটনায় চারজন অংশ নেই। উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতের পর আহাদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যাই।’ সিলেটের আদালতে প্রবাসী আহাদ হত্যার এমন লোমহর্ষক বিবরণ জানায় খুনের মিশনে অংশ নেয়া মুরাদ হোসেন রানা। আদালতে সে জানায়, ‘খুনের ঘটনার পর তারা গা ঢাকা দেয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।’ মুরাদ হোসেন রানা রোববার বিকালে সিলেট মহানগর-২ এর বিচারক সাইফুর রহমানের আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। এ সময় আদালতকে জানায় কেন খুন করা হয়েছে আহাদকে। কুয়েত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আব্দুল আহাদের বাড়ি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার খলাগাঁও গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন কুয়েতে বসবাস করছেন।
কয়েক বছর ধরে তিনি সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। গত ১৫ই আগস্ট ছুটি কাটাতে সিলেটে আসেন আব্দুল আহাদ। এরপর তিনি দেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হয়ে পড়েন। সিলেটে ১৫ই আগস্টের অনুষ্ঠানে যোগদান করা ছাড়াও ৩০শে আগস্ট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের অনুষ্ঠানেও তিনি অংশগ্রহণ করেন।

এ ছাড়া সার্কিট হাউসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠকেও ছিলেন তিনি। ৩১শে আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে আহাদকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করে ঘাতকরা। আহাদকে গুরুতর অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহাদ খুনের ঘটনায় তার স্ত্রী রাসনা বেগম বাদী হয়ে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে ঘটনার পরদিনই মামলা করেন। মামলার পর কোতোয়ালি থানার এসআই অনুপ কুমার চৌধুরী নিহত আওয়ামী লীগ নেতা আহাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সিরাজুল ইসলাম সুরুকী ও ফখরুল ইসলাম শান্তকে গ্রেপ্তার করেন। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও খুনের ব্যাপারে কিছুই পায়নি। এ কারণে পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রাখে। অবশেষে প্রযুক্তি ব্যবহার ও সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ ১০ই সেপ্টেম্বর রাতে নগরীর ঘাষিটুলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে মুরাদ হোসেন রানাকে। তার বিরুদ্ধে নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ রানাকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে খুনের ঘটনা এড়িয়ে যায়। পরে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রানা খুনের ঘটনা খুলে বলে এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল বলেও জানায়। রানা সিলেটের গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ রায়গড় গ্রামের কামরুল হাসানের ছেলে। সে সিলেট নগরীতে বসবাস করে। খুনের পর রানা আত্মগোপন করে। অবস্থান নেয় নগরীর ঘাষিটুলায় তার এক বন্ধুর বাসায়। পুলিশ তাকে ওই বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে।

আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে রানা জানায়, ২৫শে আগস্ট থেকে তারা কুয়েত আওয়ামী লীগের নেতা আব্দুল আহাদকে হত্যার জন্য একাধিকবার টার্গেট করে। কিন্তু সময় সুযোগ মতো পাচ্ছিল না। ওবায়দুল কাদের যেদিন সিলেটে ছিলেন সেদিনও তারা আব্দুল আহাদকে হত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু পারেনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩১ তারিখ পুরোদিন তার পিছু নেয় রানাসহ হত্যকারীরা। এরপর রাতে তারা আব্দুল আহাদকে একা পেয়ে হত্যা করে। দলের সাংগঠনিক ও পাওনা টাকার বিরোধের জেরে আব্দুল আহাদকে হত্যা করা হয়েছে বলে আদালতকে জানায় রানা। কোতোয়ালি থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অনুপ কুমার চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রানা খুনের ঘটনা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মুখ খুলেনি। পরবর্তীতে রিমান্ডে পুলিশকে তথ্য দিয়েছে। তিনি বলেন, রানার কাছ থেকে অপর খুনিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর