× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

টিআইবি’র সংবাদ সম্মেলন / দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে আস্থার সংকট রয়েছে

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার

বর্তমানে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া নিয়ে আস্থার সংকট রয়েছে বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হতে পারে যদি রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করে। তবে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আস্থার সংকট রয়েছে। গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি’র নিজ কার্যালয়ে ‘রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে সুশাসন ও শুদ্ধাচার’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতাকে একচ্ছত্রভাবে কেন্দ্রীকরণের প্রবণতা বিদ্যমান। টিআইবি মনে করে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং হেরে যাওয়া দলের ফল প্রত্যাখ্যান করার কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা থাকলে দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলে মনে করে টিআইবি। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থাহীনতা রয়েছে।

জনগণের মধ্যেও এই আস্থাহীনতা দেখা যাচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে ইশতেহার প্রকাশে আগ্রহী হলেও পরবর্তীতে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে তৎপরতা চোখে পড়ে না উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত কোনো কোনো অঙ্গীকার পূরণ হলেও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঙ্গীকার কখনো পূরণ করা হয় না। এসব অঙ্গীকারের মধ্যে ছিল কার্যকর সংসদ, ন্যায়পাল নিয়োগ, কালো আইন বাতিল, জনপ্রতিনিধিদের সম্পদের তথ্য প্রকাশ, রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও-টেলিভিশনের স্বায়ত্তশাসন এবং বিতর্কিত বা নিয়ন্ত্রণমূলক আইন প্রণয়ন ইত্যাদি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর যেমন ইশতেহার বাস্তবায়নের ঘাটতি রয়েছে, তেমনি দুর্নীতি দমন, অবাধ তথ্য প্রবাহের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন সংক্রান্ত অনেক ভালো ভালো আইন প্রণয়ন করা হলেও সেসব আইনের বাস্তবায়ন হয় না।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাস্তবতা হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান যেহেতু সাংবিধানিকভাবে বাতিল হয়েছে, তাই সাংবিধানিক পন্থায় যেভাবে বৈধ, সেভাবে নির্বাচন করতে হবে। আমরা যদি পৃথিবীর দিকে তাকাই, যেখানে সংসদীয় গণতন্ত্র বিরাজ করছে সেখানে কিন্তু নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিরল। তবে বেশ কয়েকটি দেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচন শুধু নির্বাচন কমিশন করে না। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অন্য যারা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে তাদের মধ্যে আমরা সাধারণত ধরে থাকি প্রশাসন, আইনপ্রক্রিয়া সংস্থা ইত্যাদি। কিন্তু সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে রাজনৈতিক দলগুলো। সেখানে যদি তাদের (রাজনৈতিক দল) দায়িত্বশীল ভূমিকা থাকে তাহলে এটা (নিরপেক্ষ নির্বাচন) সম্ভব।

এক প্রশ্নের জবাবে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য হয়নি এই কথা বলা যাবে না। তবে রাজনৈতিক দল এবং জনগণের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে একটা আস্থাহীনতা রয়েছে। তবে তার মানে এই নয় যে, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। নির্বাচনে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক এবং সব দলের মধ্যে আস্থা অর্জন করতে পারলে দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্তির জন্য টিআইবি ৬টি ক্যাটাগরিতে ৩৫টি সুপারিশ করে। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংসদে সরকারি দলের একচ্ছত্র ভূমিকা নিরুৎসায়িত করতে বৈধ ও আগ্রহী সকল দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও নির্বাচিত সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। দলীয় প্রধান, সরকার প্রধান ও সংসদ নেতা একজন হওয়া উচিত নয়। তিনজন একব্যক্তি হলে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে না। বিরোধীদলকে সংসদীয় কার্যক্রমে আরো বেশি সুযোগ দেয়া, ডেপুটি স্পিকার বিরোধীদল থেকে নিয়োগ দেয়া, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ দেয়া, রাজনৈতিক দলগুলোতে অভ্যন্তরীণভাবে গণতন্ত্র চর্চার সুযোগ দেয়া। এ ছাড়া এমন কোনো আইনি সংস্কার না করা যাতে দুদকের স্বাধীনতা খর্ব হয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা প্রত্যাহার না করা, বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত রাখা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্বিচারে আটকসহ সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করা এবং নারী, সংখ্যালঘু ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করা, সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি নিশ্চিত করারও সুপারিশ করে টিআইবি।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন- টিআইবি’র রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের প্রধান শাহজাদা এম আকরাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- টিআইবির উপদেষ্টা ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসানসহ কর্মকর্তারা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর