× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ইউএনডিপির প্রতিবেদন /রোহিঙ্গাদের ভারে কক্সবাজারে পরিবেশ বিপর্যয়

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার

রোহিঙ্গাদের প্রতি মাসে প্রয়োজন ৬ হাজার ৮০০ টন জ্বালানি কাঠ। এ কাঠ তারা সংগ্রহ করছে স্থানীয় বন থেকে। প্রতিটি পরিবারের বাড়ি তৈরিতে লাগছে প্রায় ৬০টি বাঁশ। এটিও আসছে প্রাকৃতিক বন থেকে। কুতুপালং এবং বালুখালী ক্যাম্পে স্থাপন করা হয়েছে হাজারের অধিক নলকূপ ও গভীর নলকূপ। যার ফলে এক স্থান থেকে অধিক পরিমাণ পানি উত্তোলনের ফলে এখনই পানির স্তর নেমে গেছে ১০০ মিটার নিচে। এভাবে চললে ভবিষ্যতে এই স্থান থেকে আর পানি উত্তোলন সম্ভব হবে না। টেকনাফ, উখিয়া, হিমছড়ি এলাকার ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ হেক্টর পাহাড়ি আবাদি জমি থেকে ফসল উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।
মোট জমি নষ্ট হয়েছে ৬০ হাজার ৩৩২.৩ হেক্টর। এসব কারণে রোহিঙ্গাদের ভারে হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। শুধু তাই নয়, কক্সবাজার ও টেকনাফে রয়েছে ৩টি জাতীয় উদ্যান, ২টি বন্য প্রাণির অভয়ারণ্য, বিশ্বের সর্ব বৃহৎ সমুদ্র সৈকত, বন্য হাতি।

রোহিঙ্গাদের আগমনে বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) ও ইউনাইটেড নেশন ওমেন। যৌথ এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ পরিবেশ, বন ও আবহাওয়া পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও আবহাওয়া পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ, বন বিভাগের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক মো. শফিউল আলম চৌধুুরী প্রমুখ।
 
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গাদের আগমনে কক্সবাজারের যে পরিবেশনগত ক্ষতি হচ্ছে ইউএনডিপির প্রতিবেদনের সঙ্গে আমি একমত। সরকার এই বিষয়ে জ্ঞাত রয়েছে এবং পরিবেশের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বদ্ধপরিকর।

তিনি আরো বলেন, তারা প্রাকৃতিক গাছ নষ্ট করছে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। কিন্তু তাদের আমরা প্রকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের ব্যবস্থাও করতে পারছি না। কারণ, এই এলাকায় এতটাই ঘন বসতি এবং কাঠ, বাঁশ, ছন দিয়ে তৈরি।

প্রতিবেদনে আরো কিছু ভয়াবহ তথ্য উঠে আসে। কক্সবাজারের মোট পাহাড়ি বনভূমির পরিমাণ ৮৪ হাজার ৬৬৬.৯১ হেক্টর। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ৪ হাজার ৬৬২.৭ হেক্টর বনভূমি উজাড় হয়ে গেছে। ফসলি জমি ১৪ হাজার ২৩৮.২ হেক্টর। ম্যানগ্রোভ বনভূমি ধ্বংস হয়েছে ৩১২ হেক্টর। এসব ক্ষতির কারণে এই এলাকায় দেখা দিতে পারে প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন খরা, বন্যা, তাপমাত্রা বৃদ্ধি, ভূমিকম্প ইত্যাদি। ব্যাপক পাহাড় কাটার কারণে ভয়াবহ আকারে পাহাড়ধসের শঙ্কা রয়েছে। ছোট এলাকায় অধিক লোক বসবাসের কারণে বাড়ছে বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, ভেঙে পড়ছে রি-সাইকেলিং প্রসেস, বাড়ছে পলিথিন ব্যাগ। এর ফলে বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন, নদী, আবাদযোগ্য ভূমি ইত্যাদি। এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে নেয়া ভূগর্ভস্থ পানির পরীক্ষায় দেয়া যায় ৭০ শতাংশ পানি দূষিত। এছাড়া উপরিভাগের পানিতে দেখা যায় অক্সিজেনের ঘাটতি। একই স্থানে অধিক পরিমাণ রান্না এবং ধোঁয়া নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ৮ ফিটের মধ্যে জমা হচ্ছে ধোঁয়া। ফলে বাড়ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ; যা পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর